নিউজশর্ট ডেস্কঃ চাকরির যা হাল তাতে বিকল্প আয় বা ব্যবসার পথ খুঁজছেন। সঠিকভাবে একটা ছোটখাটো ব্যবসা করতে পারলেও মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা উপার্জন করা সম্ভব। আজ আপনাদের এমনই একটি ব্যবসার আইডিয়া (Unique Business Idea) সম্পর্কে বলব। যেটা কম পুঁজিতে শুরু করা যাবে। কমবেশি সারাবছরই ডিমান্ড থাকবে আর ঠিক মত করতে পারলে মাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়ে যাবে।
বর্তমানে সময়ে দাঁড়িয়ে যেদিকেই তাকানো যায় সেদিকেই কোথাও বাড়ি হচ্ছে তো কোথাও ফ্লাট। বাড়তে থাকা মানুষের বাসস্থানের চাহিদা পূরণ করতে জোরকদমে চলছে নির্মাণ কাজ। আর এখানেই রয়েছে এক নতুন ব্যবসার খোঁজ। আগেকার দিনে সকলেই মাটির তৈরী ইট দিয়ে বাড়ি বানাতে পছন্দ করতেন। তবে ইদানিং ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক (Fly Ash Brick) এর চাহিদা বেশ বেড়েছে। আপনি চাইলে ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরির ব্যবসা শুরু করতেই পারেন।
কিভাবে ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরী হয়?
মূলত মেশিনের মাধ্যমে খুব সহজেই ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরী করা যায়। তবে বাজারে দুই ধরণের মেশিন কিনতে পাওয়া যায়। একটি হল ম্যানুয়াল মেশিন সেক্ষেত্রে গায়ের জোরে চাপ দিয়ে ইটের আকার দিতে হয়। এই ধরনের মেশিনের দাম তুলনামূলকভাবে কম হয়ে থাকে। এছাড়া আরেকটি অটোমেটিক হাইড্রোলিক মেশিন পাওয়া যায়। যেটাই নিজে থেকেই ইট তৈরী হয়ে যাবে। এরপর সেগুলোকে রোদে শুকনো করে নিলেই ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরী হয়ে যাবে।
আপনি যদি ম্যানুয়াল মেশিন কিনতে চান তাহলে ৬০ হাজার টাকার মত খরচ হবে। আর যদি অটোমেটিক মেশিন কিনতে চান তাহলে ৪০ হাজার টাকা বেশ অর্থটা ১,০০,০০০ টাকা খরচ করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে অটোমেটিক মেশিনের জন্য ২২০ ভোল্ট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। এছাড়াও একটি কংক্রিট মিক্সার বা ঢালাই মেশিন লাগবে এর জন্য ৬৫,০০০ থেকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। দাম নির্ভর করবে কতটা পরিমাণ কংক্রিট একবারে মিক্স করতে পারবে তার উপর।
ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরিতে কি কি লাগে?
ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরী করতে চাইলে প্রধান যে উপাদান লাগবে সেটা হল ফ্লাই অ্যাশ। এছাড়াও বালি, সিমেন্ট, স্টোন ডাস্ট (পাথরের গুঁড়ো) ও বেশ কিছু কেমিক্যাল লাগবে। এই সমস্ত উপাদান সঠিক অনুপাতে কংক্রিট মিক্সারে দিয়ে সেটাকে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর সেটা মেশিনের ছাঁচে দিয়ে মেশিনের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। এরপর চাপ দিয়ে ইটের আকার দিয়ে নিতে হবে।
চাপ দেওয়ার পর মেশিন থেকে সদ্য তৈরী হওয়া ইটগুলোকে নিয়ে রোদে শুকনো করার জন্য রেখে দিতে হবে। ভালো মত শুকিয়ে গেলেই বিক্রির জন্য ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরী। এবার আপনি ইটের গোলা বা সরাসরি বিল্ডার বা প্রোমোটারদের সাথে যোগাযোগ করে ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক বিক্রি করতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখবেন এই ব্যবসায় ১০০-২০০ নয় একেবারে গাড়ি বা লরি ভর্তি করে মাল যাবে।
আরও পড়ুনঃ ঔষধি গাছের চাষ করেই ঘুরল ভাগ্যের চাকা, এখন বছরে ৩০ কোটির ব্যবসা করছেন রাকেশ
আয়ের হিসাব
ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরির কাঁচামাল একসাথে একটু বেশি করে কিনে আনলে সেটার দাম অনেকটাই কম পড়বে। সেই হিসাবে যদি আপনি ইট তৈরী করেন তাহলে মোটামুটি ১-২টাকা প্রতি ইঁটে খরচ হবে। যেগুলো বিক্রির সময় ৪-৫ টাকা দাম পাওয়া যাবে। তাই সারামাসে যদি ১-২টি ভালো অর্ডার পাওয়া যায় তাহলেই ৩০-৫০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, এই কাজ করতে গেলে কিছু লোক লাগবে, যার ফলে আপনি আরও কিছু মানুষকে রোজগার দিতে পারবেন।