বলিউডে এতদিন কাপুর এবং খানেদের যে একচেটিয়া রাজত্ব চলে আসছিলো তা এবার প্রায় শেষের মুখে। বছর দুয়েক আগে নেপোটিজমের প্রসঙ্গে করিনা মন্তব্য করেন, “আসতে হবে না সিনেমা দেখতে, কেউ জোর করেনি”। দর্শকরা তার এই ইচ্ছে এতোটাই সিরিয়াসলি নিয়ে নেয় যে, ‘লাল সিং চাড্ডা’ রিলিজ করার আগে সরগরম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। দায়িত্ব নিয়ে যে ছবি ফ্লপ করানো যায় তাই প্রমাণ করে দেয় সাধারণ মানুষ।
করিনা কাপুর খান স্বপ্নেও ভাবেননি যে তার করা এই মন্তব্য দু বছর পরেও তার জীবনে বিপদ ডেকে আনবে। আমির, করিনার এমনি কিছু বিতর্কিত মন্তব্য তুলে ধরে বয়কটের ডাক দেওয়া হয় ছবিটিকে। এখন ১৮০ কোটি টাকার বাজেটের ছবির পঞ্চাশ শতাংশ তুলতেও হিমশিম খাচ্ছে নির্মাতারা। কিন্তু শুধু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই নয়, করিনা যাতে কোথাওই কাজ না পান সেই চেষ্টাই চালাচ্ছেন দর্শকরা।
আসলে একটি নামীদামী গাড়ির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হচ্ছেন করিনা। ঐ গাড়ির প্রচারে দেখা যায় করিনার মুখ আর এবার তাতেই আপত্তি তুলেছে নেট জনতা। আসলে তাদের ক্ষোভ করিনা কেন ওই ব্র্যান্ডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর? অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে সবার ঘৃণা এতোটাই তীব্র যে, এতো বড়ো ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধেও বয়কট ট্রেন্ড আনতে দুবার ভাবছেনা নেটনাগরিকরা।
সম্প্রতি টুইটারে এক ব্যক্তি হ্যাশট্যাগ বয়কট মার্সিডিজ বলে ট্রেন্ড শুরু করেছেন। আর তার পর থেকেই তা টুইটারে ট্রেন্ডিংয়েও চলে আসে। আসলে মার্সিডিজের হয়ে ফটোশুট, বিজ্ঞাপন, প্রচার করে থাকেন অভিনেত্রী। প্রত্যেকের দাবি যেন অবিলম্বে বাদ দেওয়া হয় করিনাকে। পাশাপাশি বিতর্ক শুরু হয়েছে তার দুই ছেলের নাম নিয়েও।
আসলে করিনা নিজে ভারতীয় হিন্দু হয়েও ছেলেদের নাম রেখেছেন মুসলিমদের। নেট নাগরিকদের কটাক্ষ, হিন্দু নাম কি কম পড়েছিল যে মুসলিম নাম রেখেছেন তিনি ছেলেদের? যদিও এই নাম বিতর্ক এই প্রথম নয়, এর আগেও বহুবার তুমুল বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছিলো দেশজুড়ে। তবে সেই নিভে যাওয়া বিতর্ককে আরো একবার জাগিয়ে তোলে করিনার বিতর্কিত মন্তব্য।
বছর দুই আগে স্বজনপোষন প্রসঙ্গে করিনা বলেছিলেন, “দর্শকরাই আমাদের তৈরি করেছেন। অন্য কেউ না। আজ যারা আমাদের দিকে আঙুল তুলছেন, এরাই আমাদের তৈরি করেছেন। আপনারা সিনেমা দেখতে যাচ্ছেন তো? যাবেন না। কেউ আপনাদের জোর করেননি।” তার এই বক্তব্যের জের দেখা যায় ‘লাল সিং চাড্ডা’ মুক্তির সময়। যদিও করিনাই আবার কাঁদো কাঁদো সুরে আবেদন দর্শকরা যেন কোনোভাবেই তাঁর ছবি বয়কট না করে। কিন্তু তার এই শুকনো কথায় যে চিঁড়ে ভেজেনি তা ছবি ফ্লপ হওয়া দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এমনকি ছবি তো বটেই এবার সোজা অভিনেত্রীকে বয়কট করতেই উদ্যত হয়েছে সাধারণ মানুষ।