সেই কোন ছোটোবেলায় অভিনয় জগতে পদার্পণ তার। ‘ছোটো বহু’ থেকে শুরু করে ‘অমানুষ’, ‘প্রেম আমার’এর মতো ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। এই মুহূর্তে তিনি টলিউডের প্রতিভাবান শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম। তবে আজকের এই সাফল্য একদিনেই চলে আসেনি তার। এরজন্য পেরিয়ে আস্তে হয়েছে একটা দীর্ঘ লড়াই। রূপালী পর্দায় ইন্ডাস্ট্রির তাবড় তাবড় তারকাদের সাথে সাবলীলভাবে স্ক্রিন শেয়ার করলেও তার কেরিয়ারের শুরুটা এতোটাও সাবলীল ছিলোনা।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের অতীত ঘেঁটে খুঁজে নিয়ে এলেন এমনই সব গল্প। সোহমের কথায় জানা গেলো, জীবনের একটা সময় এমনও ছিলো যখন বাসভাড়া বাঁচাতে দুই পা-য়ের উপর ভরসা করেই বেরিয়ে পড়তেন। বাইরে জল কিনে খেতে হবে, তার জায়গায় থুতু দিয়েই গলা ভিজিয়ে নিতেন। এসব গল্পকথা বিশ্বাস করা কঠিন হলেও এগুলো তার জীবনের বাস্তব ঘটনা।
কিন্তু কথায় আছে ‘চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়’, মোড় ঘুরলো অভিনেতার জীবনেও। অভিনেতা হিসেবে সুখ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি নাম লেখালেন রাজনীতিতেও। তবে এই সিদ্ধান্তই বোধহয় তার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায়। ২০১৬ সালে বড়জোড়াতে শাসকদলের প্রার্থী হিসেবে ময়দানে নেমেছিলেন তিনি। তবে অভিনয়ের মতো এখানে ভাগ্যের শিঁকে ছেড়েনি তার। কাজে আসেনি জনপ্রিয়তা, ভোটের ময়দানে মুখ থুবড়ে পড়েন তিনি। আর তারপর থেকেই মে কী দুর্বিষহ দিন কেটেছে তার, এইদিন সেটাই তুলে ধরলেন তিনি।
সোহমের কথায়, “২০১৬ সালে আমি যখন ভোটে হেরে যাই, আমার এই ফোনটা টানা দেড় বছর শুধুমাত্র পড়ে থাকত। একটা কল পর্যন্ত আসত না, কাজ তো ছেড়ে দিন। কেউ ফোন করে জিজ্ঞাসাও করত না “কেমন আছ”? মাঝরাতে উঠে বসে পড়তাম। ঘুম আসত না, চোখে জল চলে আসত।”
দিন কয়েক আগেই টলিউডের চার অভিনেত্রী তথা মডেলের পর পর আত্মহত্যার ঘটনায় তাজ্জব বনে গিয়েছিলো গোটা ইন্ডাস্ট্রি। কথাপ্রসঙ্গে সেই কথা উঠলে সোহম জানান, “নিজেকে মেরে দেওয়া তো মিনিটের ব্যাপার। কিন্তু যাঁদেরকে ফেলে গেলাম, তাঁদের কী হবে? একটু পিছিয়ে যাই, এমনও হয়েছে বাসভাড়া দিতে পারব না বলে সেই রাস্তাটা হেঁটে গিয়েছি। লেক কালিবাড়ির সামনে দিয়ে হাঁটতে-হাঁটতে বলতাম, “মা, আজ হাঁটাচ্ছ। কাল কিন্তু গাড়ি নিয়ে যাব।” মরে যাওয়া কোনও সমাধান হতে পারে না। যেদিন এটা বুঝে যাবে, সেদিনই জীবন অনেক সহজ হয়ে উঠবে।”