ফিনিক্স হতে গিয়েও আর হওয়া হলোনা, একটা দমকা হাওয়ার ঝাপটা আর সবটা শেষ। অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখা বহরমপুরের মেয়ে ‘মিষ্টি’র স্বপ্ন মাঝপথেই শেষ করে দিল তাঁর মারণরোগ। ২৫ পূর্ণ করার আগেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা।
শৈশব থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার ভূত ছিল তার মাথায়। তবে এরজন্য নিজের শিক্ষায় কোনো খামতি রাখেননি তিনি। কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ভর্তি হন। যদিও অসুস্থতার কারণে সেই কোর্স আর শেষ করতে পারেননি তিনি।
সাল ২০১৫, ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৮ বছর বয়সে পা দিতেই জানতে পারেন মারণ রোগ বাসা বেঁধেছে তাঁর শরীরে। একাদশ শ্রেণীতে পড়াকালীনই জানতে পারেন তার যুদ্ধ এবার ক্যান্সারের সাথে। তার পর টানা ৭ বছর ধরে চলেছে ঐন্দ্রিলার যুদ্ধ। কখনও ক্যানসারের সঙ্গে। কখনও নিজের কেরিয়ারের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে। এতকিছুর মধ্যেও এতদিন জিতে আসছিলেন তিনি।
প্রথমবার ক্যান্সার ধরা পড়ার পর চিকিৎসকরা তো সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, হাতে আর মাত্র ছ’মাস। কিন্তু সেই কথা মিথ্যা করে দিয়ে দেড় বছর চিকিৎসা চলার পর ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে ওঠেন অভিনেত্রী। কিন্তু আবার ছন্দপতন ঘটে ২০২১ সালে। জন্মদিনের দিন দশেকের মধ্যেই জানা যায়, আবার কর্কট রোগ দানা বেঁধেছে শরীরে।
সেবারেও হারিয়ে দিয়েছিলেন ক্যানসারকে। এমনকি এরপরেই তাঁর চোখে বাসা বেঁধেছিল হাজারটা স্বপ্ন। অভিনেত্রীর মায়ের কথায়, তিনি সমাজসেবা করতে চাইতেন। বহরমপুরে অনাথ আশ্রম করবেন বলেও স্থির করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু, এক লহমায় সব যেন থমকে গেল। গত ১ নভেম্বর রাতে আচমকাই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) হয় অভিনেত্রীর। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে।
অস্ত্রপচারের পর মাঝে কদিন সুস্থতার দিকে এগোলেও শেষ পর্যন্ত লড়াইটা হেরেই গেলেন ‘ফাইটার’ ঐন্দ্রিলা। গত বুধবার তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় পর পর দু’বার। চারিদিকে খবর ছড়িয়ে যায়, তিনি আর নেই। শুক্রবার তাঁর অবস্থার খানিক উন্নতি হলেও শনিবার ফের অ্যাটাক। পরপর ১০ বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় অভিনেত্রীর। এরপরই আজ রবিবার খবর মেলে, তিনি আর নেই।