নিউজ শর্ট ডেস্ক: দামি বিলাসবহুল গাড়িতে (Luxurious Car) চড়ার শখ থাকে কমবেশি সকলেরই। কিন্তু আজ আপনাদের জানাবো বিশ্ব বিখ্যাত এমন একটি গাড়ি সম্পর্কে যার দৈর্ঘ্য টেক্কা দেয় নীল তিমিকেও। সাধারণত হলিউডের সিনেমা গুলিতে এই ধরনের বড় গাড়ি দেখানো হয়ে থাকে।
সিনেমার চরিত্রের বিলাসিতার বোঝাতে একটা সময় হিন্দি সিনেমাতেও এই ধরনের লম্বা গাড়ির দেখা মিলেছে। কিন্তু আশির দশকে সিনেমা গুলিতে যে হারে এই লম্বা গাড়ির ব্যবহার দেখা যেত বর্তমানে তা কমে গিয়েছে একেবারেই।
দৈর্ঘ্যের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা গাড়ি (Worlds Longest Car) হিসাবে ২০০৩ সালে গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছে ‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’ (The American Dream)। ১৯৮৬ সালে বিশেষ বরাত দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার বারবাঙ্কে এই লিমো ক্যাডিলাক এলডোরাডোস গাড়িটি তৈরি করান জে ওহরবার্গ। এই লিমো গাড়ির দৈর্ঘ্য ছিল ৬০ ফুট। ২৪ চাকার এই গাড়ির সামনে এবং পিছনের এক জোড়া ভি৮ ইঞ্জিন বসানো ছিল।
কিন্তু এই গাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একসময় প্রচুর খরচ হত। এমনকি এত লম্বা গাড়ি পার্কিং করতেও অসুবিধা হত। পড়ে থাকতে থাকতে গাড়িটি এক সময় ভগ্নাবশেষে পরিণত হয়। এরপর ধীরে ধীরে এই গাড়ির ব্যবহার কমে যেতে থাকে। পরবর্তীকালে জিনিসপত্র বিক্রির একটি ওয়েবসাইটে এই পুরনো লিমো গাড়ির খোঁজ পান নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা ম্যানিং।
আরও পড়ুন: এসি না থাকলেও নো টেনশন! ৪২ ডিগ্রিতেও এই পদ্ধতিতে ঘর থাকবে ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল!
কিন্তু ম্যানিং-এর কাছে গাড়িটি কেনার মতো পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে একটি গাড়ি সংগ্রহশালার মালিক মাইকেল ডেজ়ার গাড়িটি ম্যানিংয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই গাড়ি কেনেন। তবে পুরনো এই লিমো গাড়িটিকে আবার নতুন করে তৈরি করেন ম্যানিং এবং মাইকেল। গাড়িটি দু’ভাগে ভাগ করে অরল্যান্ডো পাঠানো হয়। জানা যায় এই গাড়ি সারাই করতে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছিল।
তিন বছরে গাড়িটিকে পুরোপুরি পাল্টে ফেলেন ম্যানিং। পুরনো গাড়ির আসন থেকে শুরু করে ড্যাশবোর্ড-সহ আরও অনেক কিছু খুলে ফেলেন তিনি। নতুন করে করে গাড়ির দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ১০০ ফুট দেড় ইঞ্চি করে দেন তিনি। গাড়ি বিশেষজ্ঞদের দাবি, পর পর ছ’টি হন্ডা সিটি সেডান গাড়ি দাঁড় করানোর পর সেগুলির পাশে ‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’ রাখলে দৈর্ঘ্যের দিক থেকে এগিয়ে থাকবে এই লিমো গাড়িটি। ভোলবদল হওয়ার পর লিমো গাড়িটি এখন বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়ি। এই গাড়ির সামনের দিকে তিন জোড়া, মাঝখানে চার জোড়া এবং পিছনের দিকে পাঁচ জোড়া চাকা রয়েছে।
জানা যাচ্ছে, এই ২৪টি চাকাযুক্ত এই গাড়ির ওজন ৯০০০ কিলোগ্রামেরও বেশি। বিশ্ব বিখ্যাত এই গাড়ির ভিতর একসঙ্গে ৭৫ জন বসতে পারেন। গাড়ির ভিতরে রয়েছে বাথটাব, একাধিক টেলিভিশন সেট, রেফ্রিজ়ারেটর, বসার জন্য আরামদায়ক সোফা। পিছনের দিকের দরজা স্লাইডিং পদ্ধতিতে খোলাবন্ধ হয়।‘দ্য আমেরিকান ড্রিম’ গাড়িটির পিছনে রয়েছে একটি হেলিপ্যাড। এছাড়াও হেলিপ্যাডের সামনের দিকে রয়েছে ছোট সুইমিং পুল। তবে এই গাড়িটি রাস্তায় চালানো যাবে না বলেই জানিয়েছেন ম্যানিং। বর্তমানে অরল্যান্ডোর একটি সংগ্রহশালায় রাখা রয়েছে গাড়িটি।