Papiya Paul

বলিউডে নামিয়ে আরশাদের থেকে মুখ ফেরান ‘গডফাদার’ অমিতাভ, ‘মুন্নাভাই’-এর সাফল্যের পরেও কাজ জুটত না সার্কিটের

আরশাদ ওয়ারসি, বলিউডের একজন প্রতিভাবান অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও তাঁর প্রতিভার দাম পাননি তিনি। আড়াই দশকেরও বেশী সময় অভিনেতা হিসেবে বলিউডে কাজ করছেন তিনি। নিজের প্রতিভাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে বলিউডের ‘সার্কিট’কে। এমনকি সঞ্জয় দত্তের সুপারহিট সিনেমা মুন্নাভাই এমবিবিএস তার অসাধারন অভিনয়ের পরেও কোনো কাজ ছিল না তার। আপনারা জানলে অবাক হবেন, এই আরশাদের গডফাদারের নাম কিন্তু অমিতাভ বচ্চন!

   

অনেকেই মনে করেন বলিউডে সফল হতে গেলে একজন গডফাদার থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। আর সেই গডফাদার যদি অমিতাভ বচ্চন হন তাহলে তো কোন কথাই নেই। খুব দ্রুত সফলতা আসবে সেই অভিনেতার জীবনে। কিন্তু আরশাদের ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটেনি। প্রথম সারির অভিনেতাদের তালিকাতে নিজের নাম কখনোই দিতে পারেননি তিনি। তার ক্যারিয়ারের শুরুতে অমিতাভ যে তার গডফাদার ছিলেন সে কথা নিজেই স্বীকার করেছেন খোদ আরশাদ। তবু কেন অভিনয় করে নাম কামাতে পারলেন না তিনি?

এই ক্ষেত্রেও তিনি একপ্রকার গডফাদারকেই কাঠগোড়ায় তুলেছেন। যে ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন সেখানে প্রচলিত অর্থে নায়ক কিংবা খলনায়কের চরিত্রে নয়, বরং এক অন্যধারার চরিত্রে নিজেকে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। তবে বলিউডের সেরা অভিনেত্রীর তালিকায় তার নাম অবশ্যই রাখতে হয়। একদিকে যেমন ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’-এ সার্কিটের চরিত্র করেছেন ঠিক তেমনি ‘জলিএলএলবি’ তে বিচারব্যবস্থার ফাঁকফোকর দিয়ে আইনজীবীর ভূমিকা নিয়েছেন। সব চরিত্রেই দর্শকেরা ভালবাসতে বাধ্য হয়েছেন আরশাদকে।

তিনি বলেছেন, ‘দুঃখের কথা হল, আমাদের পেশায় অভিনয় দক্ষতা থাকাটা এখন সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়।’ যদিও বলিউডের অভিনেতা হিসেবে কাজ করার আগে তিনি একজন পরিচালক এবং কোরিওগ্রাফার হিসেবেই কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি অনিল কাপুর ও শ্রীদেবীর ‘রূপ কি রানি চোড়ো কা রাজার’ কোরিওগ্রাফি করার সময় জয়া বচ্চনের নজরে পড়ে যান। অমিতাভ পত্নীর সুপারিশেই বলিউড অভিনেতা হিসেবে তার প্রথম ছবি ‘তেরে মেরে স্বপ্নে’। যেখানে প্রযোজক ছিলেন অমিতাভ বচ্চন।

সেই ছবির বক্স অফিস কালেকশন বেশ ভাল হয়েছিল। কিন্তু এই ছবির পর বেশ কয়েক মাস তার হাতে কোনো কাজ ছিল না। এই কাজ না পাওয়ার ক্ষেত্রে অভিনেতা বলেন, ওই সময় (মুন্নাভাই)-এর পর কোনও ছবির অফার পাচ্ছিলাম না। সেজন্য আমি ভাবতাম, লোকজন কি আমার কাজ পছন্দ করেননি? তাহলে হাতে একটাও ছবি নেই কেন?’ আর নিজের এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য তিনি মুন্নাভাই… ’-এর পরিচালক রাজু হিরানিকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন।

তিনি কিন্তু আরশাদের কাজের প্রশংসা করেছিলেন। আর এই গডফাদার প্রসঙ্গে আরশাদ বলেছিলেন, “অমিতাভের সংস্থা এবিসিএল-এর ব্যানারে আমি আমার কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। অমিতাভ বা প্রথম পরিচালক জয় অগাস্টিন আমাকে এই পেশায় এনেছেন ঠিকই। তবে প্রথম ছবির পর তারা আমার হাত ছেড়ে দেন। আমাকে পুরোপুরি ছেড়ে চলে যান। তাই আমি জানি না, ওঁদের কী বলব। গডফাদার না অন্য কিছু। সত্যিই আমি জানি না!” তবে এখনও বলিউডে নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রেখেছেন তিনি। অক্ষয় কুমারের ‘বচ্চন পান্ডে’ সিনেমায় দেখা যাবে আরশাদকে।