পরিচালক এস এস রাজামৌলি মানেই কিছু বাড়তি প্রত্যাশা। সম্প্রতি তার ছবি ‘আর আর আর’ যেভাবে গোটা বিশ্ব দাঁপিয়েছে তাতে করে সেই প্রত্যাশা যেন আরো শতগুণ বেড়ে গেছে। এবার রাজামৌলির সহকারি পরিচালক অশ্বিন গাঙ্গুরাজু তারই পথ অনুসরণ করে আনতে চলেছে তার প্রথম পিরিয়ড ড্রামা ‘১৭৭০’।
তবে অশ্বিন তার প্রথম ছবির জন্য কোনো দক্ষিণী বা বলিউডি লেখকের দ্বারস্থ হননি। অশ্বিন বেছে নিয়েছেন সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্ট্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী সৃষ্টি ‘আনন্দমঠ’কে। রাজনৈতিক এই উপন্যাস নিয়ে দক্ষিণী ছবি তৈরি হচ্ছে, সে খবর আগেই সামনে এসেছিল। তবে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে ছবির টিজার এবং পোস্টার। তারপর থেকেই বাঁধভাঙা আনন্দ বইছে বাঙালিদের মধ্যে।
পোস্টারে দেখা যাচ্ছে ইংরেজ বাহিনীর দিকে হাতে রক্ত মাখা তলোয়ার, গৈরিক বসন পরে ধেয়ে যাচ্ছেন সাধু। পেশিবহুল হতে ধরে রয়েছে তলোয়ার। তবে টিজারে সাধুর পিঠের দিকটাই কেবল দৃশ্যমান, আর তারপরেই ফুটে উঠেছে ছবির নাম ‘১৭৭০’। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন, রাজামৌলির বাবা ভি বিজয়েন্দ্র প্রসাদ। ‘বাহুবলী’, ‘আরআরআর’, ‘মণিকর্ণিকা দ্য ক্যুইন অফ ঝাঁসি’, ‘বজরঙ্গী ভাইজান’-র মতো একাধিক হিন্দি ও দক্ষিণী ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত ছবিতে ক্রিয়েটিভ প্রযোজক হিসেবে রয়েছেন, জি স্টুডিওর সুজয় কুট্টি এবং লেখক তথা শর্ট ফিল্ম নির্মাতা রাম কমল মুখোপাধ্যায়। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো রামকমল ছাড়াও আরও এক বাঙালি নাম যুক্ত রয়েছে এই ছবিতে। অনেকেই হয়তো জানেননা যে রণংদেহী মূর্তিধারি যে পোস্টারটি এখন সারা দেশজুড়ে ঘুরছে সেই পোস্টার তৈরি করেছেন বাঙালি কন্যা একতা ভট্টাচার্য।
জানিয়ে রাখি, এই প্রথম নয়, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির বহু নামিদামি ছবির পোস্টার বানিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন একতা। যদিও টলিউডের সঙ্গে তার এটাই প্রথম কাজ। আর এতো বড়ো প্রোজেক্টের সাথে যুক্ত হতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত তিনি। আর সেই প্রোজেক্ট যদি আবার বাংলারই এক অমর সৃষ্টি নিয়ে হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা শতগুন বেড়ে যাওয়ারই কথা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
এক মিডিয়া সাক্ষাৎকারে একতা জানান, “ছবি নির্মাতারা স্পষ্ট করে বলেই দিয়েছিলেন যে তাঁরা ঠিক কী চাইছেন। পোস্টারে যে পুরুষকে দেখা যাচ্ছে তিনিই নায়ক। বেসিক ক্যারেক্টার স্কেচটা আমাকে দিয়ে দিয়েছিলেন নির্মাতারা।” অর্থাৎ নির্মাতাদের চাহিদা মেনেই পোস্টার ডিজাইন করেছেন একতা।
প্রসঙ্গত, এটিই একমাত্র বই রাতে ‘বন্দেমাতরম’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে ‘বন্দেমাতরম’ একটি পৃথক কবিতা হিসাবে রচিত হয়েছিল। ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে মুসলমান এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া সন্ন্যাসি আন্দোলনের কথা তুলে ধরেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র। বাংলা, হিন্দি, তামিল, তেলেগু সহ মোট ছয়টি ভাষায় রিলিজ হবে ছবিটি।