টলিউড,বলিউড,বিনোদন,দক্ষিণী ছবি,আনন্দ মঠ,বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,১৭৭০,Tollywood,Entertainment,Bollywood,Ananda Moth,Bankimchandraa Chattopadhyay,1770

Moumita

পারলো না বলিউড, বাঙালির রত্নকে লুফে নিল দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি, এবার বড়পর্দায় আসছে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দ মঠ’

বলিউডের এখন সাড়ে সর্বনাশ। একের পর এক ফ্লপের পর ঘুরে দাঁড়ানো বেশ মুশকিল হয়ে উঠেছে বলিউডের পক্ষে। আর সেই সুযোগ নিচ্ছে দক্ষিণী ছবিগুলি। যেখানে বলিউড ছবির খরচ ওঠাতে হিমশিম খাচ্ছে নির্মাতারা সেখানে হলে দর্শক ধরছেনা টলিউড ছবি গুলিতে। বলিউডের এই ভরাডুবির জন্য ইন্ডাস্ট্রি নিজেই দায়ি, এমনটাই মনে করেন বেশিরভাগ মানুষ।

   

সমালোচকদের মতে, যেখানে পদে পদে ভারতীয় সংস্কৃতিকে অপমান করে এসেছে সেখানে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হয়ে উঠেছে। আর এবার টলিউডের হাত ধরে রূপোলী পর্দায় আসতে চলেছে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্রের লেখা কালজয়ী উপন্যাস ‘আনন্দমঠ”। বাংলা ইন্ডাস্ট্রি এই অমূল্য রত্নকে এতোদিন অদেখা করে দিলেও তা লুফে নিয়েছে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি।

সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিচন্দ্রের হাত থেকে বেরিয়ে এসেছিলো এই অমর উপন্যাস। তিনি এবং তাঁর রচিত গল্পগাঁথা যে বাঙালির গর্ব তার নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এবার তারই সৃষ্টি ‘আনন্দ মঠ’ নিয়ে ছবি তৈরি করতে চলেছে দক্ষিণী পরিচালক অশ্বিন গাঙ্গুরাজ। ১৭৭৩ সালের সন্ন্যাসী আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে এই উপন্যাস লিখেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র। সাল ১৮৮২ তে বঙ্গদর্শন পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এই রাজনৈতিক উপন্যাস।

টলিউড,বলিউড,বিনোদন,দক্ষিণী ছবি,আনন্দ মঠ,বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,১৭৭০,Tollywood,Entertainment,Bollywood,Ananda Moth,Bankimchandraa Chattopadhyay,1770

জানা গেছে তামিল, তেলগু, কন্নড়, মালায়লম ও বাংলা মিলিয়ে মোট ৬ টি ভাষায় তৈরি হবে এই ছবি। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে ছবির চিত্রনাট্য লেখার কাজ। উপন্যাসের সারমর্মকে ঘিরে চিত্রনাট্য লিখেছেন বিখ্যাত চিত্রনাট্য পরিচালক ভি বিজয়েন্দ্র প্রসাদ। ছবির কথা প্রকাশ্যে আসতেই বেশ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে দেশবাসীর বিশেষ করে বাঙালিদের মধ্যে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল ছিলো বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১২৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী। এই বিশেষ দিনটিতেই ছবির কথা ঘোষণা করেন সুজয়, রামকমল মুখোপাধ্যায় এবং শৈলন্দ্র কুমার। এই তিনজনের উদ্যোগেই এরকম বড়ো কাজে হাত দেওয়ার চিন্তা করেন পরিচালক অশ্বিন গাঙ্গুরাজ।

গত বুধবারই ছবির টিজার প্রকাশ্যে এনেছে নির্মাতারা। টিজারে দেখা যাচ্ছে গেরুয়া বসন পরিহিত এক যোদ্ধা হাতে রুদ্রাক্ষের মালা নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে তলোয়ার হতে এগিয়ে যাচ্ছেন। আর ব্র্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি। জানিয়ে রাখি, ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস থেকেই প্রথম বন্দেমাতরম ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে গোটা ভারত জুড়ে। অশ্বিন গাঙ্গুরাজের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়েছে অনেক বাঙালিই। মিডিয়া সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী ছবিটির শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘১৭৭০’।

প্রসঙ্গত, এইরকম একটা পদক্ষেপ সম্পর্কে চিত্রনাট্যকারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সত‍্যি কথাই বলছি, আমার মনে হয়নি যে এই প্রজন্ম উপন‍্যাসের বিষয়বস্তুর সঙ্গে একাত্ম হতে পারবে বলে। কিন্তু যখন আমি রাম কমলের সঙ্গে কথা বলি আর ও আমাকে ওর দৃষ্টিভঙ্গিটা বলে। তখন আমি দেখি যে ওর দৃষ্টিকোণটা একেবারে আলাদা। সেটা অনেকটাই বাণিজ‍্যিক এবং মানুষের ভাবাবেগের সঙ্গে যুক্ত ছিল।” তবে বিজয়েন্দ্র প্রসাদের মতে ‘আনন্দ মঠ’এর চিত্রনাট্য লেখা অতটাও সহজ ছিলোনা। এই গল্প বেরিয়েছে সাহিত্য সম্রাট স্বয়ং বঙ্কিমচন্দ্রের হাত থেকে। তার লেখা পাঠোদ্ধার করতে যে সত্যিই সাহিত্যজ্ঞান দরকার তা তো বাঙালির অজানা নয়।