বলিউড,বিনোদন,যুগল হংসরাজ,লেখক,Jugal Hansraj,Bollywood,Entertainment

Moumita

৪০ টি ছবিতে সাইন করিয়েও ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তবুও সমস্ত বাধা অতিক্রম করে আজ একজন সফল লেখক ‘মহব্বতে’র নায়ক

যুগল হংসরাজ, অনেকেই হয়তো নামটিই ভুলে গেছেন। মাসুম’-এর সেই ছোট্ট শিশু শিল্পী অথবা ‘পাপা ক্যাহতে হ্যায়’ ও ‘মহব্বতেঁ’র সেই রোম্যান্টিক হিরো। মনে পড়ছে কি একটুও। হাতে গোনা কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করে বলিউড থেকে হারিয়েই গেলেন তিনি। তার নাম ভুলে গেলেও মহব্বতে ছবির সবুজ চোখের মালিকের মুখমন্ডল আজও সকলের স্মৃতিতে জ্বল জ্বল করছে। জানেন কি বি টাউন থেকে দূরে আজকাল কী করছেন যুগল। এই মুহূর্তে লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন এক দুনিয়ার বাসিন্দা তিনি। ছোটোদের জন্য নিজের মতো করে গল্পের জাল বুনছেন তিনি। আজ এই প্রতিবেদনে রইলো যুগলের জীবনের জানা অজানা কিছু গল্প।

   

১৯৮২ সালে ব্লকব্লাস্টার হিট ‘মাসুম’ ছবির হাত ধরে বলিউডে পদার্পণ। মাত্র ১১ বছর বয়সে ছবিতে নাসিরুদ্দিন শাহের অবৈধ পুত্রের ভূমিকায় দূর্দান্ত অভিনয় করে সকলের তাক লাগিয়ে দেন যুগল‌। বিভিন্ন মহলে সমাদৃত হয় ‘মাসুম’ এমনকি বেশ কয়েকটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও জিতে নেয়। এরপর বেশ কয়েকটি ছবিতে শিশু শিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করার পর ১৯৯৪ সালে ‘আ গলে লগ জা’ ছবিতে এক সাবলীল নায়কের ভূমিকায় আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় তার দ্বিতীয় ছবি ‘পাপা কেহতে হ্যায়’। এই ছবিটি সেভাবে সাফল্যের মুখ না দেখলেও ছবির গান বেশ সাড়া ফেলেছিলো দর্শকমহলে।

বলিউড,বিনোদন,যুগল হংসরাজ,লেখক,Jugal Hansraj,Bollywood,Entertainment

 

তবে তার অভিনয় জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছবি হলো ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রোমান্টিক-ড্রামা ‘মহব্বতে’। একাধারে এই ছবিটিই যেমন তার চলচ্চিত্র জীবনের সেরা ছবি ছিলো অপরদিকে এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে নিচে নামতে থাকে তার কেরিয়ার গ্রাফ। নায়কের চরিত্র ছেড়ে পার্শ্ব চরিত্রের জন্য অফার আস্তে থাকে। কভি খুশি কভি গম’, ‘আ জা নাচ লে’, ‘সালাম নমস্তে’এর মতো কিছু মুভিতে পার্শ্বচরিত্রেই অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। এরপর প্রায় ৪০ টি প্রোজেক্টে তাকে সাইন করানো হলেও সেগুলি বাস্তবায়ন করা হয়নি কখোনোই। যুগলের কথায়, এই পর্যায়টা তার জীবনের সবচেয়ে কঠিনতম সময় ছিলো।

অভিনেতা হিসেবে ব্যর্থ হলে তিনি পরিচালকের ভূমিকাতেও নিজের ভাগ‌্য পরীক্ষা করেন একবার। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তাতেও শিঁকে ছেড়েনি তার। এর কিছু সময় পরেই বলিউড থেকে হারিয়েই যান যুগল। ভাবছেন তো, একজন অভিনেতা, পরিচালক কীভাবে লেখক হয়ে উঠলো! জানিয়ে রাখি তার এই প্রতিভা নতুন নয়, অনেকেই জানেন না যে, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবির টাইটেল ট্র্যাক যুগলেরই লেখা। একদিন কফি শপে বন্ধু কর্ণের সঙ্গে কথা বলতে বলতে গানের আট লাইন লিখে ফেলেন তিনি। এই গান যে কতটা সুপারহিট হয়েছিলো তা তো কারোরই অজানা নয়।

এরপর ২০১৮ সালের শুরুর দিকে লেখালেখিতে মন দিয়েছিলেন যুগল। যুগলের কথায় ছেলের জন্যই লেখালেখির জগতে প্রবেশ করা তার। অভিনেতা তথা লেখক বলেছেন, “ছেলের জন্মের পর অনেককিছু শিখেছি। সেই সময় বাড়িতেই থাকতাম বেশিরভাগ সময়। ছেলেকে বড় করতে স্ত্রীকে সাহায্য করতাম। ওর জন্ম আমার মধ্যে বিপুল পরিবর্তন এনে দিয়েছে। আগে যা ভাবতে পারতাম না, সেটাই ভাবতে শুরু করে দিয়েছি। আমি ওর জন্যই লিখতে চাই। যখন ও বড় হবে, বইয়ের জগতের সঙ্গে পরিচিত হবে, তখন যেন বলতে পারে ওর বাবা ওর জন্য লিখেছিল।” নয়ের দশকের সুদর্শন অভিনেতা যুগল হংসরাজ এখন রীতিমতো আমেরিকা প্রবাসী। সেখানেই স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে সংসার পেতেছেন তিনি। এমনকি তার দ্বিতীয় উপন্যাসটিও প্রায় শেষের মুখে এবং তিনি এখন ভালো প্রকাশকের খোঁজ করছেন। অপরদিকে, ভারতের বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে একটি সিরিজ পিচ করারও প্রস্ততি নিচ্ছেন তিনি।