জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গেলে শুধুমাত্র চাকরির মাধ্যমে যে সফল হওয়া যায় এমন কিন্তু নয়। নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়। এরকম বহু উদাহরণ আমরা সকলেই জানি। আজকের এই গল্পে এমনই একজন সফল ব্যবসায়ী তথা খাদ্য উদ্যোক্তার সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাবো। যিনি বছরে ১৮ কোটি টাকার উপরে ব্যবসা করছেন।
এই উদ্যোক্তার নাম দেবাশিস মজুমদার(Debasish Mazumder)। গুয়াহাটির মোমোমিয়ার(Momomia) মালিক তিনি। ২০১৮ সালে ১১০ বর্গফুটের এই একটি দোকান তিনি ৩.৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন যে পশ্চিমবঙ্গের হাবরায় তিনি বড় হয়েছেন। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় জীবনে একজন ব্যাংকার হিসেবে বা কোন চাকরির জন্য পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন তিনি। ২৬ নভেম্বর ২০০৫ সালে তিনি গুয়াহাটিতে একটি কোম্পানিতে অফিস সহকারি হিসেবে প্রথম চাকরি পেয়েছিলেন।
সেখানে তাঁর প্রথম বেতন ছিল ১৮০০ টাকা। কিন্তু প্রথম দিন কাজ করেই তিনি বাড়ি গিয়ে তার মাকে বলেছিলেন যে তার পক্ষে এই চাকরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু মায়ের জন্যই তিনি প্রথম চাকরিতে আটকে গেছিলেন এবং সে চাকরি করেছেন। এখানে তিনি বহু বছর কাজ করেন। এখানে সমস্ত কাচের কেবিনের দিকে তাকাতেন এবং সেই কেবিনে বসার জন্য ইচ্ছে প্রকাশ করতেন। কিন্তু চাকরি করে তিনি মোটেও সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি জীবনে একজন উদ্যোক্তা হতে চেয়েছিলেন।
তাই তার বিয়ের ৬ মাস পরে তিনি একটি ভাল বেতনের চাকরিও ছেড়ে দেন। এ প্রসঙ্গে দেবাশীষ বলেছেন, এটি ছিল তার নেওয়া সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তর মধ্যে একটি। আমি তখন সদ্য বিবাহিত এবং আমার ভালো বেতনের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তখন আমার মা এবং স্ত্রী আমাকে উৎসাহ করে দিয়েছিলেন এবং আমাকে সম্পুর্ন সমর্থন করেছেন।
২০১৭ সালে তিনি প্রথম ব্যবসা শুরু করেন যেখানে একটি আইসক্রিমের দোকান দিয়েছিলেন। সেই ব্যবসা সফল হয়নি এবং প্রায় ১০ লক্ষ টাকা তার ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও তার মা এবং স্ত্রী তাকে সমর্থন করেছিলেন। এরপর তারা একটি মোমোর দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেন। ১০% সুদের হারে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে তিনি আইসক্রিমের দোকানটা বন্ধ করে প্রায় এক বছর পর এই মোমোমিয়া চালু করেছিলেন।
আর পরে এই ব্যবসা তিনি বিরাট সফল হয়েছিলেন। এখন গুহাটির জনপ্রিয় দোকান হিসেবে পরিচিত মোমোমিয়া। সেখানে বিভিন্ন স্বাদের মোমো পাওয়া যায়। এই ব্যবসার মাধ্যমে এখন বছরে ১৮ কোটি টাকার উপরে ব্যবসা করেন তিনি। একসময় তার মায়ের অপারেশন করার টাকা ছিল না তার কাছে। এখন তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী