সদ্যই শেষ হয়েছে ভারতের তথা বিশ্বের সর্বোচ্চ আর্চ ব্রিজ চেনাব সেতুর কাজ। শুধুমাত্র রেললাইন বসানোর কাজটুকুই বাকি আছে এখন। সূত্রের খবর, চলতি বছরের শেষের দিকেই চালু হবে এই সেতুটি। ভূস্বর্গের অপরিসীম সৌন্দর্য আর তার সঙ্গে জুড়েছে মানব সভ্যতার অগ্রগতি। সবে মিলিয়ে সেতুটি তার অনবদ্য নির্মাণ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বারংবার আলোচনায় উঠে এসেছে।
আর এরই মধ্যে চেনাবে সেতুর কিছু চোখ ধাঁধানো ছবি প্রকাশ্যে এনেছে ভারতীয় রেল মন্ত্রক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এই ছবিগুলি দেখে ধন্য ধন্য করছে সবাই। কারণ স্মৃতি বলতে মেঘের ওপর খিলান আকৃতির এই সেতুটির প্রকৌশল বিস্ময়ের চেয়ে কম নয়। আগামী দিনে এটিই হয়ে উঠতে পারে ভারতবর্ষের অন্যতম সেরা পর্যটন ক্ষেত্র।
ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে শেয়ার করা এই ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে, মেঘের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে সেতুর অংশ। আইফেল টাওয়ারের চেয়েও ৩৫ মিটার উঁচু এই লোহার আর্ক দ্বারা যুক্ত হয়েছে দুটি আস্ত পাহাড়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অটুট রেখে মানুষের সুবিধার্থে চন্দ্রভাগা নদীর উপর তৈরি হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ ব্রিজ ‘চেনাব’।
ইতিমধ্যেই বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছে ৩৫৯ মিটার উঁচু আর ১,৩১৫ মিটার দীর্ঘ এই সেতুটি। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে চলছে এর নির্মাণকাজ। ২০০৪ সাল থেকে সেতু তৈরি করে রেললাইন বসানোর কাজে ঝুঁকি ছিল ঢের। এখানকার বড়ো সমস্যা ছিলো আবহাওয়া। এই জায়গায় সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ কিমি প্রতি ঘন্টায় বাতাস বয়। তাই সেতুটিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে বাতাসের বেগ ঘন্টায় ২৬০ কিমি ছাড়ালেও অনায়াসে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।
A sight of the breathtakingly beautiful Chenab Bridge. pic.twitter.com/qpmaUlApCt
— Ministry of Railways (@RailMinIndia) September 13, 2022
এদিকে খরচের কথা বললে ভারত সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, চেনাবে সেতুর পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় ১,৪৮৬ কোটি টাকা। উচ্চপ্রযুক্তির সমস্ত যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয়েছে এই কাজে। পাশাপাশি রেলযাত্রীদের সুরক্ষার কথাও মাথায় রাখতে হয়েছে নির্মাণকর্মীদের। তাই সেতুর আকার অনুভূমিকের বদলে অর্ধচক্রাকার।
সমস্ত কিছু মাথায় রেখে প্রোকৌশলিরা এমনভাবে সেতুর নির্মাণ করেছেন যাতে সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে থাকতে পারে। এটি হিমাঙ্কের ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচের তামপাত্রা সহ্য করতে পারে। ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও গলবে না এই ব্রিজ। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের আট মাত্রা এটি সহ্য করতে পারবে। যার অর্থ প্রবল কম্পনেও এটি অক্ষত থাকবে। স্বাধীনতার ৭৬ বছরে ভারতীয়দের জন্য এর চেয়ে বড়ো উপহার আর কীই বা হতে পারে!!