নিউজ শর্ট ডেস্ক: পশ্চিম মেদিনীপুরের(West Medinipur) শালবনির নিকট কানাশোলে অবস্থিত এই শিব মন্দিরটি (Shiva Temple) প্রায় ৩৫০ বছরের বেশি প্রাচীন। রাজ্যের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। টেরাকোটা স্থাপত্যশৈলীর অপরূপ সৌন্দর্য দেখার জন্য প্রচুর পর্যটক ভিড় জমায় এখানে। পাশাপাশি এখানকার দেবতা (God) জাগ্রত বলেও খ্যাতি আছে।
হ্যাঁ, এখানেই রয়েছে ৩৫০ বছরের প্রাচীন ঝড়েশ্বর মন্দির (Jhareshwar Temple) । এর ঠিক পাশেই রয়েছে ১৪ একরের বিশাল দিঘি। এখানে ডুব দিয়ে শিবের মাথায় জল ঢেলে মানত করে ভক্তরা। মানুষের বিশ্বাস, এখানে কোনোকিছু মানত করলে তা বিফলে যায়না। এই মন্দিরে শিবের ব্রত পালন করলে কঠিন রোগ থেকে মুক্তি মেলে। সন্তানহীনা মায়ের কোলে সন্তান আসে।
কথিত আছে, এই মুহূর্তে যেখানে শিব মন্দির রয়েছে আগে সেখানেই ছিল ঘন জঙ্গল এবং বট গাছ। বট গাছের নীচেই ছিল শিবলিঙ্গটি। এবং একটি কৃষগাভী নাকি রোজ সেই শিবলিঙ্গের ওপর দুধ ঢেলে আসত। আর এক রাখাল নাকি সেই দৃশ্য দেখে ফেলেছিল। আর যেদিন রাখাল এই দৃশ্য দেখে সেদিনই এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে ঐ গাভীর মালিক।
আর ঐ একই স্বপ্ন দেখেন ব্রাহ্মণভূমের রাজা আলালনাথ দেব ও আড়িয়াদহের পুরোহিত শীতলানন্দ মিশ্র। যেখানে ঐ গাভীটি দুধ দিয়ে আসতো সেখানে মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে আসে অনাদি শিবলিঙ্গ। এরপর শুভদিন দেখে ধুমধাম করে ঐ শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করে সবাই। জানা যায়, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে এই শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। গ্রামের মানুষ নাম রাখেন ঝড়েশ্বর শিব।
তারপর থেকে আজ পর্যন্ত মোট চারবার সংস্কার করা হয়েছে মন্দিরটি। ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করার পর ১৯৩০, ১৯৬০ ও ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরের সংস্করণ হয়। তবে মন্দিরের খ্যাতি ছড়িয়েছিল ১৮৩৪ সাল থেকেই। শোনা যায় নাড়াজোলের রাজা অযোধ্যা রাম খানের দেওয়ান রামনারায়ণ জানা ঝড়েশ্বর দেবের কাছে মানত করার পরেই তার কঠিন শূল রোগ সেরে যায়।
এই ঘটনার পর মন্দিরের খ্যাতি চূড়ান্তে পৌঁছে যায়। পরবর্তী সময়ে রাজা আলালনাথ দেব মন্দিরের পাশের সুবিশাল দিঘিটি খনন করেন। আর তারপর থেকেই এটি আলাল দিঘি নামেও পরিচিত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মেদিনীপুর থেকে মাত্র ২৫ কিমি দূরে এই মন্দির অবস্থিত। এর সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন হল গোদাপিয়াশাল।