Jhargram District Primary Education Department isse show cause notice to teachers for neglecting their duties

কারোর চোখ ঢুলুঢুলু, তো কেউ আটকেছে স্মার্টফোনে! এবার কড়া শাস্তির সম্মুখীন খোদ শিক্ষকেরাই

পার্থ মান্নাঃ সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম জেলায় বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনিয়মের ঘটনা সামনে এসেছে। প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা পরিদর্শনকালে শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলার বেশ কিছু প্রমাণ পেলেন। বিদ্যালয়ে যথাসময়ে উপস্থিত না থাকা, মোবাইল ফোনে মগ্ন থাকা বা ক্লাস শুরুর পর অনেক দেরিতে আসা, এমন বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে স্কুল শিক্ষকদেরই বিরুদ্ধ।

ঝাড়গ্রামের স্কুল পরিদর্শনে কী পাওয়া গেল?

গত ২০ সেপ্টেম্বর, রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনারের নির্দেশ অনুযায়ী, বিদ্যাসাগরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী বিদ্যালয় পরিদর্শনের আয়োজন করা হয়। ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান জয়দীপ হোতা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেনচন্দ্র লাহার নেতৃত্বে ১৮ জন পরিদর্শক ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন বিদ্যালয়ে এই পরিদর্শন করেন। তাদের পরিদর্শনে যে চিত্র উঠে আসে, তা বেশ উদ্বেগজনক।

এক বিদ্যালয়ে দুপুর আড়াইটে নাগাদ পৌঁছে দেখা যায়, স্কুলে তালা বন্ধ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানকার শিক্ষক প্রতিদিনই দুপুর ১:৩০ টার দিকে মিড-ডে মিল খাইয়ে ২টো বাজতেই স্কুল ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এছাড়াও অভিযোগ ওঠে যে, কিছু শিক্ষক পালাক্রমে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন অর্থাৎ আজ একজন তো কাল অন্য আরেকজন, যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত।

শিক্ষকদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রভাব

পরিদর্শনে আরও জানা যায়, বেশ কিছু শিক্ষক ক্লাস চলাকালীন মোবাইল ফোনে সময় কাটাচ্ছেন। কেউ আবার চেয়ারে বসে বসেই ঘুমোচ্ছেন। শিক্ষকদের এহেন আচরণ পড়ুয়াদের শিক্ষার জন্য খুবই ক্ষতিকর। স্কুল শিক্ষক ও শিক্ষিকারা শুধু পেশাগত কর্মী নন, বরং সমাজ গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। তাদের এই ধরণের গাফিলতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের উপর চিরস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।

শোকজ করা হলো ৩২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে

ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের পক্ষ থেকে এই গাফিলতির জন্য ইতিমধ্যেই ৩২ জন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সোমবার সশরীরে এসে তাদের গাফিলতির কারণ দর্শাতে। যদি সন্তোষজনক উত্তর না মেলে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলার শিক্ষা কর্তারা।

শিক্ষকদের ভূমিকায় পরিবর্তনের প্রয়োজন

প্রসঙ্গত, শিক্ষকরা সমাজের মেরুদণ্ড, তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা শিক্ষার্থীদের মানসিক ও একাডেমিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের এই অবহেলা সমাজে শিক্ষার গুরুত্ব খর্ব করতে পারে। তাই শিক্ষা দপ্তরের এই বিশেষ পরিদর্শন শুধু শিক্ষকদের ত্রুটি ধরা নয়, বরং বিদ্যালয়গুলিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা উচিত। আশা করা হচ্ছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে স্কুল শিক্ষকরা আরও দায়িত্বশীল হয়ে উঠবেন এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য উন্নত শিক্ষার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করবেন।

Partha Sarathi Manna

Partha Sarathi Manna

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক, রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন থেকে অ্যাডভান্স মাল্টিমিডিয়া ডিগ্রি। পড়াশোনা শেষে বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত। ডিজিটাল মিডিয়াতে কর্মজীবন শুরু ২০২০ সালে। বিনোদন, লাইফস্টাইল, টেকনোলজি থেকে ভ্রমণ সম্পর্কে লিখতে দক্ষ। তবে পড়াশোনা বিষয়ক লেখালিখিতেও বেশ আগ্রহী। কাজের বাইরে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ দেখতে, ঘুরতে যাওয়াই নেশা মেল - [email protected]

X