কালাঞ্চি,ঘুমন্ত গ্রাম,কাজাখস্তান,বিষ্ময়কর গ্রাম,Kalanchi,Kajakhastaan,Sleeping Vilage,Wonde Vilage

Moumita

বিশ্বের এমন একটি গ্রাম যেখানে কুম্ভকর্ণের মত সপ্তাহের পর সপ্তাহ ঘুমায় গ্রামবাসি, কারণ আজও খুঁজে পায়নি বিজ্ঞান!

পৃথিবীতে এমন অনেক বিস্ময়কর জায়গা আছে যেগুলোর কথা শুনলে অবাক হতে হয় বৈকি। আজ এমন একটা জায়গার কথা বলবো যেখানে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে সমস্ত গ্রামবাসী ঘুমিয়ে থাকে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি। রহস্যজনক এই ঘুমের কারণ কী? সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না কেউই। এমনকি চিকিৎসকের কাছেও নেই কোনও সঠিক তথ্য।

   

অদ্ভুত এই গ্রামটির অবস্থিত কাজাখস্তানে। কাজাখস্তানের কালাঞ্চি গ্রামে কোনো মাদক দ্রব্য ছাড়াই রহস্যজনকভাবে ঘুমিয়ে থাকেন সবাই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ মানুষ ঘুমান। অথচ কেউই ক্লান্ত নয়। কারও ঘুম ভাঙছে ছয়-সাত ঘণ্টা পরে, কখনও কেটে যাচ্ছে তিন-চার দিনও! এক দিন নয়, বছরের পর বছর ধরে ঘটছে এই ঘটনা। তাই গ্রামটিকে স্লিপি হোলও বলা হয়। যখন তখন ঘুমিয়ে পড়ার এই অদ্ভুত ঘটনার কারণেই বিশ্বদরবারে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে কাজাখস্তানের কালাঞ্চি নামক এই গ্রামটি।

২০১০ সালে এই গ্রামের আকস্মিক নিদ্রাহীনতার ঘটনা সামনে আসে। একটি স্কুলে, শিশুরা পাঠরত অবস্থায় হঠাৎ করেই ঘুমিয়ে পড়ে‌। ধীরে ধীরে গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে রোগটি। এরপর থেকে এখানে অনেক গবেষণা চলেছে। কিন্তু এত চেষ্টা করেও বিজ্ঞানীরা কেন এমনটা হয় তার কারণ খুঁজে বের করতে পারেননি। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে এই রোগটি হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায়।

প্রথমে মনে করা হয়েছিলো এই ঘুমের পিছনে রয়েছে অদূরের ক্রাসনোগোরস্কি ইউরেনিয়াম খনি। তবে পরবর্তীকালে বিজ্ঞানীরা দেখেন শুধু রেডিয়েশনই নয়, এই ঘুমের কারণ বাতাসে উপস্থিত কার্বন মনোক্সাইড এবং হাইড্রো কার্বনের অতিরিক্ত পরিমাণ। যেহেতু কার্বন মনোক্সাইড অক্সিজেনের তুলনায় ২০০ গুণ দ্রুত রক্তে মেশে তাই শরীরে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। বিজ্ঞানীদের ধারণা অক্সিজেনের অভাবেই মস্তিষ্ক সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না এবং কালাঞ্চির মানুষ ঘুমিয়ে পড়েন ঘণ্টার পর ঘন্টা।