ব্রহ্ম কমল,ফুল চাষ,উপার্জন,Brahma Kamal,Flower Cultivation,Income

Moumita

একটি ফুলের দাম ১০০০ টাকা, এই ফুলের চাষ করলে কোটিপতি হতে পারবেন আপনি

ব্রহ্ম কমল এক পবিত্র ফুল, একে হিমালয়ের ফুলের রাজা বলা হয়। প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী, এই ফুলের পাঁপড়ি থেকে টপকানো প্রতিটি জলের ফোঁটা অমৃতের সমান। এছাড়াও অনেক রোগের ঔষধ প্রস্তত করতেও কাজে লাগে এই ফুল এবং আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্রেও কজে লাগে এই ফুল। জেনে অবাক হবেন একটি ব্রহ্ম কমলের দাম ১০০০ টাকারও বেশি হয়। যদিও সহজে এই ফুলের দেখা পাওয়া একটু কঠিন, উত্তরাখণ্ডের বেশ কিছু জায়গায় এই ফুল পাওয়া যায়। তবে মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে উত্তরাখণ্ডের বাইরেও দেখা মিলেছে এই ফুলের।

   

সম্প্রতি জানা গেছে যে, ছত্তিশগড়, তামিলনাড়ুর মতো জায়গাতেও ব্রহ্ম কমল চাষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে ব্রহ্ম কমলের মতো দূর্লভ ফুল চাষ করা অসম্ভব নয় তবে তার জন্য প্রয়োজন সঠিক জলবায়ু এবং উপযুক্ত মাটি। প্রসঙ্গত ব্রহ্ম কমল ফুল শুধুমাত্র শুধুমাত্র রাতেই প্রস্ফুটিত হয়। এর উপযুক্ত সময় হলো জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই প্রতিবেদনে আমরা আজ জানাবো কীভাবে ব্রহ্ম কমল চাষ করতে হয়।

প্রথমেই বলে রাখি ব্রহ্ম কমলের বৈজ্ঞানিক নাম হল সসুরিয়া অবভাল্লাটা (Saussurea obvallata)। সাধারণত এই ফুলকে হিমালয়ে ১১০০০ থেকে ১৭০০০ ফুট উচ্চতায় প্রস্ফুটিত হতে দেখা যায়। এমনকি কেদারনাথ ও বদ্রীনাথের মন্দিরে দেবতার চরণে এই ফুল নিবেদন করা হয়। ব্রহ্ম কমলের ফুল মূলত উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ে জন্মালেও ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইটিভি ভারত ডটকম থেকে দাবি করা হয় যে, তামিলনাড়ুর ইরাড জেলায় ব্রহ্মকমলের ফুল দেখতে পাওয়া গেছে, তবে দূর্ভাগ্যজনকভাবে সূর্য ওঠার আগেই শুকিয়ে যায় এই ফুল‌।

ব্রহ্ম কমল,ফুল চাষ,উপার্জন,Brahma Kamal,Flower Cultivation,Income

সম্পূর্ণ প্রতিকূল পরিবেশে এই ফুল ফুটেছে শুনে অবাক হয়ে গেছিলো দেশবাসী। এর আগে ২০২১ সালেরই জুলাই মাসে ছত্তিশগড় থেকেও খবর আসে যে, রাজনন্দ গ্রামেও ব্রহ্ম কমলের দেখা মিলেছে‌। এরপর ভানুপ্রতাপপুর থেকেও দাবি করা হয় যে এক সঙ্গে ৬টি ব্রহ্ম কমলের দেখা মিলেছে সেখানে‌‌। এছাড়াও ছত্তিশগড়ের কাঙ্ক জেলাতেও দেখা পাওয়া গিয়েছিলো এই অমূল্য ফুলের।

প্রসঙ্গত, জানিয়ে রাখি ব্রহ্ম কমল চাষ করে কৃষকরা লক্ষাধিক আয় করতে পারেন। মাত্র একটি ব্রহ্ম কমলের দাম হয় ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। এই ফুলের বিশেষত্ব হলো এ জলে ফোটেনা। বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ফোটে এই ফুল। শুধুমাত্র রাতেই দেখা মেলে এই ফুলেই এবং সূর্যোদয়ের সাথে সাথেই নিজে থেকেই এর পাঁপড়ি বন্ধ হয়ে যায়। কথিত আছে এই ফুলের দর্শনেপূর্ণ হয়ে যায় মানুষের সমস্ত মনোবাসনা। এমতাবস্থায় আপনি যদি ব্রহ্ম কমল চাষ করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে মেনে চলতে হবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। ব্রহ্ম কমল রোপণের আগে মাটি ও গোবর ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। মাটি শোধনের পর ব্রহ্ম কমলকে ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি গভীরে রোপণ করা হয়। আপনি যদি এটি একটি পাত্রে রোপণ করেন তবে বীজ বপনের পরে জল দিতে হবে।

এরপর এমন জায়গায় ব্রহ্ম কমলের গাছ রাখতে হবে যেখানে সূর্যের সরাসরি আলো আসে। গাছটি বড় হয়ে উঠলে মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখতে তার গোড়ায় জল দিতে হবে। উল্লেখ্য, ব্রহ্ম কমলের বৃদ্ধির জন্য কম জল কিন্তু নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ প্রয়োজন। উত্তরকাশী জেলায়, ব্রহ্ম কমলের ফুলকে ভগবান সোমেশ্বরের ফুল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এখানে গ্রামবাসীরা তাদের আরাধ্য দেবতা সোমেশ্বরের অনুমতি নিয়েই গাছ ফুল ছেঁড়ে। স্থানীয়দের বিশ্বাস যে, এই দৈব ফুল ঘরে রাখলে ঘরের সুখ-সমৃদ্ধি বাড়ে। উত্তরকাশীতে প্রসাদ হিসাবে অনেক আত্মীয়কে ব্রহ্ম কমল ফুল দেওয়ার প্রথাও রয়েছে।

ব্রহ্মা কমলের গুণাগুণ সম্পর্কে খুব কম মানুষই অবগত। এই ফুল নিয়ে একাধিক গবেষণাও হয়েছে যেখানে এর উপকারিতা সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে প্রথম থেকেই ব্রহ্মা কমলের ব্যবহার রয়েছে। এমতাবস্থায় কেউ যদি ব্রহ্ম কমলের চাষ করে তাহলে মোটা টাকার মুনাফা অর্জন করতে পারবে তার বলাইবাহুল্য।