দীর্ঘ সময় ধরে হাইপে রাখা হয়েছিলো আমির-করিনার ‘লাল সিং চাড্ডা’কে। আমিরের শেষ ছবি বাজে ভাবে মুখ থুবড়ে পড়ায় ‘লাল সিং চাড্ডা’কে নিয়ে ভিষণ রকম আশাবাদী ছিলেন আমির খান সহ ছবির নির্মাতারা। কিন্তু সমস্ত আশাতে জল ঢেলে দিয়েছে আমির করিনার কিছু বিতর্কিত মন্তব্য। আর তার জেরেই ছবি মুক্তির আগে থেকেই দেশজুড়ে যে, বয়কটের ডাক উঠেছিলো তা আজও অব্যাহত।
আর বৃহস্পতিবার ছবি মুক্তির পর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ছিঃ ছিঃ। ইতিমধ্যেই যারা ছবি দেখেছেন তাদের দাবি এই ছবির মাধ্যমে ভারতীয় সেনার সম্মানহানি করেছেন আমির এবং অদ্বৈত চন্দন। শোনা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই একের পর এক হলে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ছবিটি।
তবে এরই মধ্যে খবর যে, দেশে ছিঃ ছিঃ রব উঠলেও বেশ খ্যাতি কুড়িয়েছে বিদেশে। কাল্ট ক্লাসিক ‘ফরেস্ট গাম্প’ ছবির অনুকরণে নির্মিত এই ছবি। এই ছবির অনুমতি পেতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিলো আমিরকে। প্রায় ২০০ দিন ধরে চলেছে ছবির শুটিং, এমনকি কোনো রকম কোনো খুঁত থেকে যায় এই ভয়ে বারংবার বদলানো হয়েছে মুক্তির ডেট। তবে আমির,করিনার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ব্যর্থ হয়েছে সমস্ত প্রচেষ্টাই।
তবে জানা গেছে এবার নাকি অস্কার কর্তৃপক্ষের প্রশংসা পেয়েছে আমিরের ‘লাল সিং চাড্ডা’। The Academy -র সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল থেকে লেখা হয়েছে, “ভারতীয় প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে Robert Zemeckis এবং Eric Roth এর দুর্দান্ত গল্পকে সুন্দর কায়দায় ফুটিয়ে তুলেছেন Advait Chandan এবং Atul Kulkarni। শুধুমাত্র দয়ার জোরে এক সাধারণ মানুষ বিশ্বকে বদলে দিতে পারে, সেই বিষয়টি দেখানো হয়েছে এই ছবিতে। Tom Hanks অভিনীত দুর্দান্ত চরিত্রে অভিনয় করেছেন Aamir Khan।”
View this post on Instagram
শুধু তাই নয়, এর সাথে সাথে এটাও লেখা হয়েছে যে, টম হ্যাঙ্কস অভিনীত ফরেস্ট গাম্প ছবিটি ১৩টি Oscar এর মনোনয়ন পেয়েছিল। যার মধ্যে ছ’টি অস্কার (Best Actor, Directing, Film Editing, Best Picture, Visual Effect এবং Adapted Screenplay) জিতেছিল ওই সিনেমা। এর সাথে সাথে অস্কার কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ফরেস্ট গাম্প এবং লাল সিং চাড্ডা’র ছবির দৃশ্য মিক্স করে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। অস্কারের পাশাপাশি ফরেস্ট গাম্পের অফিসিয়াল পেজ থেকেও টম হ্যাঙ্কস এবং আমির খানের ছবির কোলাজ আপলোড করা হয়েছে।
এদিকে উত্তরপ্রদেশের সনাতন রক্ষক সেনা নামের এক সংগঠনের তরফ থেকে দাবি তোলা হয়েছে যেন, বয়কট নয়, একেবারে বন্ধই করে দেওয়া হয় আমিরের এই ছবিকে। তাদের দাবি এর আগেও ‘পিকে’ ছবিতে হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত হেনেছিলো আমির। হিন্দু দেবদেবীদের নিয়ে অবমাননার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিলো সে। গত শুক্রবারই আমির খান, অদ্বৈত চন্দন, Paramount Pictures সহ আরও কিছুজনের নামে অভিযোগ তুলে দিল্লির পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরাকে চিঠিও দিয়েছেন বিনীত জিন্দাল নামক এক ব্যক্তি।
বিনীত জিন্দাল তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন , “ছবিতে দেখানো হয়েছে মানসিক অবসাদগ্রস্ত এক ব্যক্তি ভারতীয় সেনার যোগদান করেছিলেন এবং কার্গিল যুদ্ধে লড়াই করেছেন।” তাঁর সংযোজন, “কার্গিল যুদ্ধের আগে সেনা জওয়ানদের যে ভালো করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল সেটা স্বীকৃত সত্য। কিন্তু, সেটা দেখানো হয়নি এই ছবিতে। বরং ইচ্ছে করে ভারতীয় সেনার গরিমা নষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে।”IPC 153, 153A, 298 এবং 505 ধারায় আমির সহ বাকিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।