Papiya Paul

একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন মধুবালা, অভিনেত্রীর শেষ জীবন সম্পর্কে জানলে চোখে জল আসবে

বলিউডের সবথেকে সুন্দরী অভিনেত্রীদের নাম উঠলে যার নাম এক এবং অদ্বিতীয় তিনি হলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী মধুবালা। তাঁর সৌন্দর্যে আজও বহু পুরুষের হৃদয় বিচলিত হয়ে রয়েছে। ভারতীয় সিনেমার ক্ষেত্রে সেরা সুন্দরীর তকমা আজীবন তিনি বহন করে নিয়ে যাবেন। ১৯৩৩ সালে দিল্লিতে এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্ম হয় তার। তার আসল নাম মমতাজ জাহান বেগম দেহলভী। সিনেমায় তার পরিচিতির পর এই নাম বদলে ‘মধুবালা’ নামে জনপ্রিয় হয়ে যান তিনি।

   

বস্তি থেকে উঠে আসা সেই ছোট্ট শিশু শিল্পী আজকে সকলের প্রিয় মধুবালা। মাত্র ৯ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম কাজ করেন তিনি। এরপরে ১৯৪৭ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ‘নীলকমল’ ছবিতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। তখন থেকেই তার নাম বদলে হয় মধুবালা। তার অসাধারণ অভিনয় গুণের প্রশংসা করতেন সকলেই। অভিনয়টা যেন ছিল তার মধ্যে। কখনো কমেডি কখনো আবার রোমান্টিক সব কিছুতেই সাবলীল ছিলেন মধুবালা।

১৯৫১ সালে ”তারানা ছবিতে দিলীপ কুমারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিনি। আর এই ছবি থেকে দিলীপের প্রেমে পড়ে যান মধুবালা। সে সম্পর্কের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মধুবালার বাবা। বলিউডের অমর প্রেম কাহিনী বলতে এখনো দিলীপ কুমার ও মধুবালার নামে উঠে আসে। দীর্ঘ ৭ বছর প্রেম করলেও কেবলমাত্র ইগোর কারণে সে সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল। অভিনেত্রীর শেষ জীবনের অনেক কিছুই জানা গিয়েছে তার বোনের করা টুইট থেকে।

‘মুঘল-এ-আজম’ ছবির শুটিংয়ের সময় শেষে মধুবালার হাত-পা নীল হয়ে যেত। সেই ছবিতে জেলের দৃশ্যগুলোকে আরো বেশি ফুটিয়ে তোলার জন্য শুট করার সময় কোন খাবার খেতেন না অভিনেত্রী। তারই অসুস্থতার কারণে রক্তের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। মাঝেমধ্যেই নাক-মুখ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসত. সারাক্ষণ কাশি হত। এভাবেই প্রেমের যন্ত্রণায় নিজেকে তিলে তিলে শেষ করে দিয়েছিলেন তিনি। দিলীপ কুমারের সঙ্গে নয়, একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে রীতিমত হাফিয়ে উঠেছিলেন তিনি।

এরপর কিশোর কুমারের সঙ্গে প্রেমের পর ১৯৬০ সালে তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তারপর মধুচন্দ্রিমার লন্ডনে গিয়ে তার হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ে। আর তখন কিশোরকুমার তাকে বোনদের কাছে রেখে যেতেন। দু মাসে একবার দেখা করতে আসতেন। কিন্তু মধুবালা তার স্বামীর সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলাম। এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে আরও অবনতি হতে শুরু করে।

একটানা ৯ বছর তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। সেই সময় অভিনেত্রীর শেষের দিনগুলো ছিল বড্ড কষ্টের। নিজের মৃত্যুকে যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি মধুবালা। এরপর ১৯৬৯ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি সবশেষ। বাঁচার প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্বেও মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান বলিউডের এই কিংবদন্তী শিল্পী।