ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের এক কিংবদন্তি তারকা হলেন মিঠুন চক্রবর্তী। বলি-টলি দুই জায়গাতেই দীর্ঘদিন দাপটের সাথে অভিনয় করেছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। তার ‘ডিস্কো ডান্সার’ আজও সমান জনপ্রিয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে। তবে তিনি কোনো গড ফাদারের সাহারায় এই জায়গা পাননি। একসময় মহাগুরুকে ইন্ডাস্ট্রিতে এই জায়গা পেতে করতে হয়েছিলো প্রচুর পরিশ্রম। আর আজ তার ছেলে মিমোহ চক্রবর্তীও ঠিক একইরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি।
জিমি ছবির হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করেছিলো মিমোহ। ছবিতে তার নাচ ব্যাপক সাড়া ফেললেও অভিনয় একেবারেই পাতে দেওয়ার মতো লাগেনি দর্শকমহলের। বক্স অফিসে খুব বাজে ভাবেই মুখ থুবড়ে পড়ে ছবিটি। জিমি ছবির পর কেটে গেছে ১৪ টা বছর, কিন্তু এখনও হাল ছাড়েননি মিঠুন পুত্র। বাবাকে অনুসরণ করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। নেপোটিজমের বাড়বাড়ন্তের দিনেও পরিচালকের দরজায় দরজায় ঘুরছেন একটা কাজের জন্য। না, তিনি নিজের কাজের জন্য বাবা ‘মিঠুন চক্রবর্তী’র নাম ব্যবহার করতে রাজি নন।
একবার এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে মিমোহ জানিয়েছিলেন যে, ‘সুপারস্টারের ছেলে হয়েও বলিউডে পা রাখাটা আমার জন্য সহজ ছিল না। জিমি আসার প্রায় ১৪ বছর হয়ে গেছে এবং এখনও আমি একজন অভিনেতা হিসাবে এখানে আমার জমি খুঁজছি। এত বছর ধরে আমার একটা ভিন্ন যুদ্ধ ছিল, যেটা আমি নিজের সঙ্গেই লড়ছিলাম। আমি প্রতিদিন নিজেকে বলতাম মিমো, তোমাকে ধৈর্য ধরতে হবে, কোন জাদু হবে না। সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সকলেই ভাবে আমি অভিনয়জগতে পরিবারের ছেলে আমার কাজ পেতে অসুবিধা হবে না, কিন্তু আসল খবর কেউ রাখে না। কিন্তু যত সময় লাগুক আমি অ্যাচিভ করেই ছাড়বো।’
তার কথাতেই জানা গেলো যে এই প্রসঙ্গে মিঠুন বলেন, “মিমো, তোমার ছবি চলুক আর না চলুক, কিন্তু আমি গর্বিত যে তুমি নিজেই সেই ছবিগুলো অর্জন করেছ। বাবা হিসেবে বাবার কর্তব্য সবই করব, কিন্তু মিঠুন চক্রবর্তী তোমায় নায়ক বানাবে না। তোমায় নিজেই এটা উপার্জন করতে হবে।” মিমোহর কথায়, প্রত্যেকের এই স্ট্রাগলটা স্বচক্ষে দেখা উচিত, আজ যদি তার প্রথম ছবি বক্স অফিসে দারুন হিট হতো তাহলে তিনি হয়তো সেই জয়ের আসল গুরুত্বটা অনুভব করতে পারতেননা। তিনি আজও যখন কোনো অডিশন দিতে যান, কোথাও না কোথাও মনে একটা সন্দেহ থেকেই যায় যে, আদৌ তিনি সিলেক্ট হবেন তো?
অভিনেতা জানিয়েছেন, “আমি সেই স্টার কিড যে আসল লড়াইটা কী তা জানে।” আর এই স্ট্রাগলের পর যে জয়টা আসে সেটা সম্পূর্ণ তার নিজের কৃতিত্বের জন্য। আর এটা তে কতটা গৌরবের, কতটা আনন্দের তা যারা স্ট্রাগল করেছেন তারাই অনুভব করতে পারবেন। প্রসঙ্গত, খুব শীঘ্রই মিমোহর দুটো ছবি মুক্তি পেতে চলেছে বক্স অফিসে। একটি মূলত রুশ ক্রাইম থ্রিলারের উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং অপরটি “রোগিরা সারারা”, এই ছবিতে মিমোহর সাথে দেখা যাবে নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকিকে।