সদ্যই মুক্তি পেয়েছে প্রভাস অভিনীত ‘আদিপুরুষ’ ছবির টিজার। আর টিজার প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সমালোচকদের নিশানায় চলে এসেছে ছবিটি। ভিএফএক্স থেকে শুরু করে হনুমান এবং রাবণের চেহারা দেখে চক্ষু চড়কগাছ নেটিজেনদের। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, সইফ আলী খান বর্বর আলাউদ্দিন খিলজীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাকি মহাপণ্ডিত রাবণের চরিত্রে।
আসলে সনাতনীদের কাছে রামায়ণ কেবলই কোনো গল্পগাঁথা নয়, এ এক অনন্য আবেগ। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই ‘আদিপুরুষ’ নিয়ে মারাত্মক উচ্ছসিত ছিলো প্রতিটা ভারতবাসী। কিন্তু সাম্প্রতিক মুক্তিপ্রাপ্ত এই টিজার সেই সমস্ত আশায় জল ঢেলে দিয়েছে তা বলাই বাহুল্য। কার্যত তারপর থেকেই নির্মাতাদের মুন্ডুপাত করছে দেশবাসী। আর এবার সেই তালিকায় জুড়লো মুকেশ খান্নার নামও।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এই বিষয়ে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করে ছবির কাস্ট থেকে নির্মাতা, সবাইকেই নিজের প্রশ্নবানে বিদ্ধ করেছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। সরাসরি সইফ আলী খানকে প্রশ্ন করেছেন ‘আমার ধর্ম নিয়ে মজা করার কে তুমি? সাহস থাকলে নিজের ধর্ম সম্পর্কে কিছু বলে দেখান!’ ছবি নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগরে তিনি বলেন, কোনো চরিত্রই ঠিকঠাক নেই। না রাম দেখতে রামের মতো, না হনুমান দেখতে হনুমানের মত আর না রাবণ দেখতে রাবণের মত। সাথে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন যে অন্য ধর্ম নিয়ে এরকম মজা করার।
মুকেশ খান্নার কথায়, ‘এটা সত্যি যে সিনেমায় রাবণকে দেখে রাবণ মনে হয় না। অনেকটা বর্বর মুঘলদের মতোই লুক দেওয়া হয়েছে।’ তার এই বক্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করেছেন দর্শকরাও। সকলেরই একই অভিমত যে, সিনেমার পুরো লুকেই মুঘল ছাপ অতীব স্পষ্ট রাখা হয়েছে। এইদিন নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে তীব্র কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘রামায়ণ এইভাবে তৈরি করা যায় না, তারজন্য প্রয়োজন হয় মূল্যবোধ, বিশ্বাস, ধার্মিক লুক এবং সংলাপের ওপর।’ পাশাপাশি তিনি বলেন,’সবাই আমার সাথে একমত নাও হতে পারে, কিন্তু হিন্দু দেবতারা বডি বিল্ডার নয়, তাদের চেহারা নরম, নম্র কিন্তু আকর্ষণীয়’।
কোথায় লঙ্কেশের সোনার লঙ্কা আর কোথায় তাঁর মাথার তীলক। টিজার দেখে মনে হবে এ বোধহয় এককালীন হিট ছবি ‘অবতার’-র হিন্দি ভার্সেন। এই প্রসঙ্গ টেনে মুকেশ বলেন,‘নির্মাতারা যদি ‘অবতার’ ছবির লুক দিয়ে ‘রামায়ণ’ পরিবর্তন করতে চান, তাহলে বলবেন না যে আমরা রামায়ণ বানাচ্ছি। বলুন আমরা সিনেমা তৈরি করছি তিনি প্রস্তুর যুগের এক আদিপুরুষ’। পাশাপাশি তিনি প্রযোজক থেকে নির্মাতা সবাইকে মনে করিয়ে দেন যে, ‘সমস্ত চরিত্রের একটি চেহারা মানুষের মনে তৈরি হয়ে থাকে। টাকা খরচ করলেই সেই ইমেজ ভাঙা যায়না।
অভিনেতার কথায়, ‘রাবণকে খিলজীর মত দেখিয়ে টাকা রোজগার করতে চাইলে তার চেয়ে বড় মূর্খামি আর কিছু হয় না।’ এইভাবে হিন্দু ধর্মকে নিয়েই এত অবমাননা কেন? তিনি প্রশ্ন ছুঁড়েছেন নির্মাতাদের উপর। দিনকয়েক আগেই যে মুকেশ ‘বয়কট’ প্রবণতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন আজ তিনিই চান এই ছবি বয়কট হোক। আসলে নিজের ধর্মের এ হেন অবমাননা কেউই সহ্য করতে পারেনা যে। এদিকে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিংয়ে চলে এসেছে ‘বয়কট আদিপুরুষ’।