কেকে,বলিউড,বিনোদন,সঙ্গীত শিল্পী,গান,হঠাৎ মৃত্যু,ময়না তদন্ত,KK,Bollywood,Entertainment,Singer,Sudden Death,Postmortem

Moumita

‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন’র কারণেই মৃত্যু হয়েছে কেকে-এর, কি এই ভয়ানক রোগ!

প্রয়াত হয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ(Krishnakumar Kunnath)। দেখতে দেখতে তিনটে দিন কেটে গিয়েছে তাঁর মৃত্যুর। সঙ্গীত জগতের অন্যতম নক্ষত্র পতনে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। গত মঙ্গলবার তিলোত্তমার বুকে নজরুল মঞ্চে (Nazrul Manch) আয়োজিত কলেজ ফেস্টে অনুষ্ঠান করছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান চলাকালীনই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অনুষ্ঠান শেষ করে মধ্য কলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে ফেরার সাথে সাথেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও আর ফেরানো যায়নি তাঁকে, কর্ত্যবরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

   

এই দুর্ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে আয়োজকদের ব্যবস্থাপনায়। প্রচণ্ড গরম, ভিড় এগুলোই কি আসল কারণ? মৃত্যুর আসল কারণ নিয়ে ধ্বন্দে ছিলেন চিকিৎসকরাও। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন’কেই মৃত্যুর কারণ হিসেবে দর্শাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সাধারণত মানুষ একে হার্ট অ্যাটাক নামেই জানে।

প্রসঙ্গত, গোটা বিশ্বজুড়ে তরতরিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে হৃদরোগীদের সংখ্যা। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি বছর প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। বর্তমান যুগের ব্যস্ত জীবন যাপন, ফাস্ট ফুড, মানসিক চাপ, স্থূলত্য ইত্যাদির কারণে আমাদের অজান্তেই হৃৎপিণ্ডের অভ্যন্তরীন পরিবর্তন গুলি প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে‌।

যদিও প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পীর দৈনিক জীবনযাত্রা ঘেঁটে দেখা গেছে তিনি অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন করতেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাওয়া দাওয়া করার পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চাও করতেন তিনি। যদিও তিনি ডায়েবেটিস বা কোলেস্টেরল জাতীয় কোনও কোনও শারীরিক সমস্যায় ভুগতেন কি না সে ব্যাপারে এখনও কোনও তথ্য সামনে আসেনি।

মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, সাধারণত হার্ট অ্যাটাক নামে পরিচিত, যা ঘটে যখন হৃদপিণ্ডের পেশীর একটি অংশ পর্যাপ্ত রক্ত ​​পায় না। সেন্টার ফল ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ট প্রিভেনশন অনুসারে, হৃদ্‌পিণ্ডের পেশির একটি অংশ পর্যাপ্ত রক্ত না পাওয়ায় হৃৎপিণ্ডের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বাহার্ট অ্যাটাকের বেশ কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে যার মধ্যে হলো,
•নিশ্বাস নিতে কষ্ট।

•অত্যধিক ক্লান্তি বোধ।

•বুকে ব্যথা।

•তলপেটে এবং ঘাড়ে ব্যথা হওয়া।

•চোখে অন্ধকার দেখা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উচ্চ রক্তচাপের কারণে বাড়তে পারে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা।‌ স্থূলতা, ধূমপান, কোলেস্টেরল জাতীয় সমস্যা এই ঝুঁকির সম্ভাবনাকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। কেকে-এর ক্ষেত্রে ডায়েবেটিস বা কোলেস্টেরল জাতীয় কোনও সমস্যার কথা সামনে না এলেও মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে মাঝে মধ্যে ধূমপান করতেন তিনি। দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণের হালকা চাপ থাকলেও ৫৪ বছর বয়সেই মঞ্চ কাঁপিয়ে বেড়াতেন তিনি।

তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর অন্য একটা বিষয় সামনে এসেছে। দেখা গেছে কেকে-এর হৃৎপিণ্ডের চারপাশে জমেছিলো পুরু মেদের আস্তরণ। কেকে-র ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক পিটিআইকে বলেছেন, অতিরিক্ত উত্তেজনা কয়েক মুহুর্তের জন্য রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে দেয়, যার ফলে খুব অল্প সময়ের জন্য অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হয় তাঁর। এছাড়াও চিকিৎসক আরও বলেছেন, ময়নাতদন্তে জানা গেছে যে গায়ক অ্যান্টাসিড খেয়েছিলেন “সম্ভবত কিছু ব্যথা বিবেচনা করে যা তিনি হজমের সমস্যা হিসাবে ভেবেছিলেন”। এছাড়াও রক্তে পাওয়া গিয়েছে ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন রকমের হজমের ওষুধের নমুনা। কেবল অ্যালোপ্যাথি নয়, আয়ুর্বেদিক এবং হোমিওপ্যাথি ওষুধেরও হদিস মিলেছে প্রয়াত গায়কের পাকস্থলীতে।