পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যায় যেগুলো জানার পর শুধুই অবাকই নয় বিস্ময়ে ভরে যায় আমাদের মন। এমনই এক অদ্ভুত কারণে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে ভারতের কয়েকটি গ্রাম। একটি বাড়িতে যমজ সন্তানের জন্ম একটি ভিন্ন বিষয়, কিন্তু এই গ্রাম গুলির ঘরে ঘরে যমজ সন্তান। আপনি যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই যমজ মানুষের ছড়াছড়ি। এটি কেবল ভারত নয়, সারাবিশ্বের কাছেই হয়ে উঠেছে বিস্ময়কর গ্রাম। এই গ্রাম গুলির একটি কেরল এবং অপরটি উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে, কেরলের কোডিনহি গ্রামে প্রতি ১০০০টি শিশুর মধ্যে প্রায় ৪২টি যমজ শিশুর জন্ম হয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বে গড়ে প্রতি ১০০০-এ মাত্র ৬ টি যমজ শিশুর জন্ম হয়। অর্থাৎ কোডিনহিতে যমজ শিশুর জন্ম সমগ্র বিশ্বের তুলনায় সাত গুণ বেশি। একই রকমভাবে উত্তরপ্রদেশের উমরি গ্রামেও প্রতি ঘরে ঘরেই রয়েছে যমজ সন্তান।
ইতিমধ্যেই এলাহাবাদের উমরি গ্রামে জন্মগ্রহণকারী যমজ শিশুদের বিভিন্ন মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। হায়দরাবাদ, দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই, মুম্বাই ইত্যাদি জায়গার বিশেষজ্ঞরা নিজে এই পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। কিন্তু অবাক করা বিষয় তারাও আজ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। বর্তমানে এ গ্রামে প্রায় আড়াইশ পরিবারের বসবাস। গত পাঁচ দশকে পাল্লা দিয়ে শতাধিক যমজ সন্তানের জন্ম হয়েছে এই গ্রামে।
এছাড়াও সম্প্রতি আরও একটি বিস্ময়কর বিষয় সামনে এসেছে যে, এখানকার প্রাণীরাও নাকি যমজ সন্তান প্রসব করছে। যদিও তাদের সব নমুনার পরীক্ষাও নিষ্ফল।
কেরলের কোডিনহি গ্রামের বাসিন্দাদের বিশ্বাস যে, যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার এই ঘটনাটি প্রায় ৭০ বছর আগে শুরু হয়েছিল। এই গ্রামের সবচেয়ে বয়স্ক যমজ সন্তান হলেন আবদুল হামিদ (৬৫) ও তার যমজ বোন কুনহি কাদিয়া(৬৫)। গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন যে এই দুজনের পরেই গ্রামে যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনা শুরু হয়েছিলো। গত দশ বছরে দ্রুত হারে বেড়েছে যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার আশ্চর্য এই ঘটনা।
এর আগে, বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিলো যে, এই গ্রামের খাবার এবং পানীয়তে আলাদা কিছু থাকবে, যার কারণে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে থাকে। কিন্তু পরে দেখা গেছে যে এই গ্রামের খাবার এবং পানীয়তে আলাদা কিছুই নেই, সবকিছুই আশেপাশের গ্রামের মতোই স্বাভাবিক।
মজার বিষয় হলো এই গ্রামের স্থানীয়রাই একে অপরকে চেনার সমস্যায় পড়ে যায়।একই চেহারার দুজন মানুষকে তারা নিজেরাই ঠিকমত আলাদা করতে পারে না বাইরের মানুষ তো দূরে থাক। তারপরও এই বিষয়টি নিয়ে তারা বেশ মজাও অনুভব করে থাকে। প্রায়ই দূর দুরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে কোডিনহি গ্রামের যমজদের দেখতে।