পার্থ মান্নাঃ কথায় বলে মায়ের একটিবার দর্শনেই সমস্ত মনোস্কামনা পূরণ হয়ে যায়। তাই বাংলা তো বটেই গোটা দেশ এমনকি বিদেশ থেকেও মানুষেরা ছুটে আসেন নৈহাটীর বড়মা এর দর্শনের জন্য। প্রতিবছরেই লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয় নৈহাটির বড়মা এর পুজো উপলক্ষে। মায়ের কাছে কিছু চাইলে সেই ইচ্ছা পূরণ করেন তিনি এমনটাই বলা হয়। তবে জানেন কি ‘বড়মা’ এর আদি নাম বা আসল নাম কি? না জানলে জেনে নিন আজকের প্রতিবেদনে।
নৈহাটির বড়মা এর পুজো শুরুর ইতিহাস
১০০ বছরেও বেশি আগের সময় কথা। নৈহাটির বাসিন্দা ভবেশ চক্রবর্তী তাঁর বন্ধুদের সাথে রাস দেখতে গিয়েছিলেন নবদ্বীপে। সেখানে গিয়ে রাধা কৃষ্ণের বিশাল মূর্তি দেখেই তাঁর চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক বিরাট কালী মূর্তি। এরপরেই তিনি ঠিক করেন মা কালীর আরাধনা করবেন তিনি।
বড়মা এর আদি নাম কি?
এরপর আর কি! বাড়ি ফায়ার শুরু হল মা কালির পুজোর প্রস্তুতি। পরে বছর থেকেই চালু হল কালীপুজো। সেই সময় মায়ের মূর্তির উচ্চতা ছিল ২১ ফুটের। এতবড় মা কালির মূর্তি নৈহাটিতে সেই প্রথমবারই হয়েছিল। তবে ভবেশবাবু হাতে সূত্রপাত হওয়ায় সেই পূজার নাম ছিল ‘ভবেশকালী পূজা’। যদিও মায়ের মূর্তির বিশাল আকারের জেরে সকলেই ‘বড়মা’ নাম ডাকতে শুরু করেন।
এই বড়মা নামটিই লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। আজ সেই রীতিমেনেই ২১ ফুটের কালী মূর্তির পূজা হয়। যা দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় করেন। অনেকেই মনোস্কামনা পূরণের জন্য মানত করেন। এরপর গঙ্গা স্নান করে দন্ডি কাটতে কাটতে মায়ের মন্দির পর্যন্ত আসেন। মনোস্কামনা পূরণ হলেই মাকে মানতের জিনিস দিয়ে যান ভক্তরা।
জানা যায় ‘বড়মা’কে পুজোর ২৪ ঘন্টা আগে থেকে গয়না পড়ানো শুরু হয়। তবে এতই গয়না রয়েছে যে সেই গয়না পরিয়ে শেষ করা যায় না। জানলে অবাক হবেন বড়মা এর পুজো না হলে নৈহাটির কোথাও পুজো শুরু হয় না। আর বড়মা এর বিসর্জন না হলে কোনো ঠাকুর বিসর্জনও হয় না। তাছাড়া গতবছরই ‘বড়মা’ এর পূজার স্থানে একটি কষ্ঠি পাথরের মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।