নিউজশর্ট ডেস্কঃ পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজ প্রতিনিয়ত জারি রেখেছে নাসা। মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে আরও ভালো করে জানতে নাসার তরফ থেকে Insight Lander নামক একটি স্বয়ংক্রিয় যান পাঠানো হয়। যেটি নিয়মিত নানান তথ্য ও ছবি বিজ্ঞানীদের কাছে পাঠাচ্ছিল। তবে এবার জানা যাচ্ছে মঙ্গল গ্রহে জলের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছি। অল্প স্বল্প নয় বরং এতটাই জল রয়েছে যে তা দিয়ে একটা আস্ত সাগর তৈরী করে নেওয়া যেতে পারে।
যেমনটা জানা যাচ্ছ, মঙ্গল গ্রহের ভূপৃষ্ঠের বেশ কিছু কিলোমিটার নিচে পাথরের মধ্যে ফাটল দেখা গিয়েছে। এই ফাটলগুলির মধ্যেই রয়েছে বিপুল পরিমাণে জলের ভান্ডার। মাটির প্রায় ১১.৫-২০ কিলোমিটার নিচে থাকা এই পাথরের ফাঁকে জমা জলের মধ্যে মাইক্রোজীবী প্রাণী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার স্ক্রিপ্স ইনস্টিটিউশন ও ওশানোগ্রাফির ওয়াশন রাইট ও তার টিম এই খোঁজটি করেছেন।
ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সাইন্স প্রকাশিত রিসার্চ অনুযায়ী মঙ্গল গ্রহের ভূপৃষ্ঠের ওপরের অংশে যে পরিস্থিতি তাতে অনেকটা গভীরে এমন জল জমা হতে পারে। তবে যদি গভীরতা কম হয় তাহলে জল বরফ হয়ে যাবে। লান্ডারের মধ্যে থাকা সিসমিক তরঙ্গ পাঠানোর যন্ত্রের সাহায্যে মঙ্গল গ্রহের ক্রাস্টের একটা অভ্যন্তরীণ নকশা তৈরী করা হয়েছে। এই তরঙ্গ যখনই কোনো বস্তুর সাথে ধাক্কা খায় তখনই পরিবর্তিত হয়। মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা এই ডেটাকে অধ্যয়ন করে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে সেখানে প্রচুর পরিমাণে জল জমা থাকতে পারে।
ঠিক পৃথিবীতে যেভাবে সিসমিক তরঙ্গকে কাজে লাগিয়ে মাটির গভীরে থাকা পানীয় জল বা তেলের খোঁজ করা হয়, তেমনভাবেই এই পক্রিয়া কাজ করেছে মঙ্গল গ্রহেও। তাই এই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত হওয়া যায় যে ১১.৫ কিলোমিটার থেকে ২০ কিলোমিটার গভীরতায় অনেকটাই জল থাকতে পারে। এই জলের পরিমাণ এতটাই যে তা যদি মঙ্গল গ্রহের ভূপৃষ্ঠের উপরে আনা যায় তাহলে ১ কিমি গভীর এক বিশাল সমুদ্র তৈরী করে ফেলা যাবে।
আরও পড়ুনঃ উল্টে দিলেও সোজাই থাকে নাম! ভারতের এমন শহর কোনটি? বলতে পারলেই আপনি মশাই জিনিয়াস
এই রিসার্চ থেকেই বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন যে এখন মঙ্গলগ্রহ মরুভুমির মত অতিরিক্ত ঠান্ডা হলেও একসময় সেখানে জল ছিল। আজ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি বছর আগে বড়সড় বদল ঘটে মঙ্গলের আবহাওয়ায়। যে কারণে সমস্ত জল ভূপৃষ্ঠের ভিতরে ক্রাস্টে চলে গিয়েছে। এই খোঁজ মহাকাশ বিজ্ঞানের দুনিয়ায় সত্যিই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মঙ্গল গ্রহ নিয়ে বিগত কয়েক দশক ধরেই প্রচুর রিসার্চ চলছে। আশা করা যাচ্ছে লান্ডারের থেকে আরও এমন তথ্য পাওয়া যাবে।