নিউজশর্ট ডেস্কঃ দুর্গাপুজো সবে শেষ হয়েছে। এখনও বাঙালির মনে উৎসবের আমেজ। আকাশে-বাতাসে লেগে রয়েছে উৎসবের ছোঁয়া। তবে মা মহামায়ার এক রূপের গমন হলেও সময় হয়েছে আরেক রূপের আগমনের। সময় হয়েছে মা কালীর আগমনের। আর এবারে সন্ধান মিলল মায়েরই আরেক সতীপীঠের।
বিশেষ এই সতীপীঠ অবস্থিত মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী গ্রামে(Kiriteswar)। সাধারণত, নবাবের শহর হিসেবে মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) পরিচিত হলেও এর অন্দরেই লুকিয়ে রয়েছে এই সতীপীঠ। এই সতীপীঠ এক সিদ্ধস্থান। এখানে দেবী সতীর মাথার মুকুট পড়েছিল, সেই থেকেই এই গ্রামের নাম হয়েছে কিরীটেশ্বরী। মুর্শিদাবাদের বৈষ্ণব ক্ষেত্র ডহপাড়ার অবস্থিত এই মন্দির। মুসলিম অধ্যুষিত এই গ্রাম হলেও এখানে মা সবার।
মুসলিমদের দেওয়া জমিতেই কিরীটেশ্বরী মাতার মন্দির(Kiriteswari Temple) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি মন্দির কমিটিতে একজন মুসলিম সদস্যও রয়েছেন। এই গ্রাম সত্যি এক সম্প্রীতির প্রতীক। পূর্বে এই গ্রামের নাম ছিল কিরীটকণা। পরে লোকমুখে এর নাম হয় কিরীটেশ্বরী। ১৪০৫ সালে মন্দিরটি প্রায় ভেঙে গিয়েছিল। এরপর ফের একবার ১৯ শতকে লালগোলার রাজা দর্পনারায়ণ মন্দিরটি নির্মাণ করেন। স্বয়ং মোঘল সম্রাট আকবরেরও ভক্তি ছিল এই মন্দিরের প্রতি। তিনিই রাজা দর্প নারায়ণকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন এই মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।
কালীপুজো, দুর্গাপুজো ছাড়াও এই মন্দিরে রটন্তী অমাবস্যায় বিশেষ পুজো হয়। বিশেষ এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাংলা নবাবী ইতিহাসও। জানা যায়,পলাশির যুদ্ধের সময় নাকি মীর জাফর তাঁর সঙ্গী রাজা রাজবল্লভকে ডুবিয়ে হত্যা করেছিলেন সেসময় নাকি এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ ফেটে গিয়েছিল। এমনকি মৃত্যু শয্যায়ও এই কিরীটেশ্বরী মাতার মন্দিরের চরণামৃত পান করেই নাকি মারা গিয়েছিলেন মীরজাফর। বিশেষ এই গ্রাম সম্প্রতি স্বীকৃতি পেয়েছে দেশের সেরা পর্যটন কেন্দ্রের।
দেশের মোট ২৭টি পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে সেরা হয় এই গ্রাম। স্বয়ং মূখ্যমন্ত্রী এই খবর জানান সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এই বিশেষ মন্দিরে আসতে হলে প্রথমে আপনাকে হাজারদুয়ারি আসতে হবে। এরপর ভাগীরথী নদী পার করে তারপরে টোটো করে পৌঁছতে হবে এখানে। তাই আর দেরি না করে আজই ঘুরে আসুন এই পুণ্যভূমি থেকে। বিশেষ এই স্থানে একইসাথে দর্শন করুন শান্তি ও শক্তির প্রতীক মাকে।