চিনা কালি মন্দির,ট্যাংরা,কলকাতা,ভারত,চিন,নুডুলস,অত্যাশচর্যক তথ্য,Chinese Kali Mondir,Tangra,Kolkata,India,China,Noodles,Amazing fact

Moumita

কালী মায়ের এই মন্দিরে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় চাউমিন! জানেন এর পিছনের কারণ কি?

ভারত একটি অত্যাশচর্যক দেশ, উত্তরে হিমালয়ের ঠাণ্ডা হিমেল হাওয়া, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, আবার পূর্বে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত শস্য শ্যামলা ধরণী তো পশ্চিমে রুক্ষ শুষ্ক মরুভূমি। এরকম আশ্চর্যজনক সংমিশ্রণ নেহাতই পৃথিবীর আর কোনো দেশে দেখা যাবে। এই একই দেশ থেকে উঠে এসেছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বীর যোদ্ধা আবার ভারতই সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে শান্তি এবং অহিংসার বাণী। তো এইরকম অত্যাশচর্যক দেশে সবকিছুই বাকি বিশ্বের চেয়ে আলাদা। সেরকমই আরো এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো ভারতেরই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা শহরের ট্যাংরা এলাকার চিনা কালি মন্দির।

   

তিব্বতী এবং ভারতীয় শৈলী মিলে তৈরি হয়েছে কোলকাতার এই চিনা কালি মন্দির। এখানে অনন্য ব্যাপার হল যে লোকেরা মা কালীকে প্রসাদ হিসেবে নুডুলস নিবেদন করে। কিন্তু কেন এমন হয়, চলুন জেনে নেওয়া যাক এর পেছনের মজার কারণ।

কেন কালী মাকে নুডুলস দেওয়া হয়?

কালী মায়ের এই মন্দিরে, ভোগ হিসাবে শুধুমাত্র চাইনিজ খাবারই দেওয়া হয়, যার মধ্যে নুডলস এর প্রচলন সবচেয়ে বেশি। এখানে শুধু চাইনিজ খাবারই দেওয়া হয় না, এখানে ব্যবহৃত ধূপকাঠিও চীন থেকে এনেই জ্বালানো হয়। প্রসাদ ছাড়াও এখানকার সুগন্ধও বাকি মন্দিরের থেকে আলাদা। অবশ্য মন্দিরের পূজা একজন বাঙালি পুরোহিত দ্বারাই সম্পন্ন হয়, যিনি বিশেষ অনুষ্ঠানে অশুভ আত্মাদের তাড়ানোর জন্য হাতে তৈরি কাগজ পোড়ান। এই মন্দিরের পূজা করার পদ্ধতিগুলিও খুব আলাদা।

জানা যায় মা কালীর এই মন্দিরে চীনা প্রসাদ নিবেদনের পিছনে রয়েছে একটি আকর্ষণীয় এবং অলৌকিক কারন। পূর্ববর্তী বিশ্বাস অনুসারে প্রায় ২০ বছর আগে এই মন্দিরটি চীনা ও বাঙালি উভয় মিলে তৈরি করে। তবে এই স্থানে, গত ৬০ বছর ধরে একটি গাছের নীচে দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে এবং ভক্তরা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে সেই ডেবিউ মূর্তিকে পূজা করে।

স্থানীয়দের মতে, বেশ কয়েক বছর আগে একটি চীনা ছেলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার চিকিৎসার জন্য কোনো কিছুই কাজ করেনি। একদিন ওই শিশুটির বাবা-মা তাকে সেখানে নিয়ে গিয়ে একটি গাছের নিচে শুইয়ে দেন। এরপর তিনি মাতৃদেবীর কাছে প্রার্থনা করার পরই অলৌকিকভাবে সেই শিশুটি উঠে দাঁড়ায়।

তখনই এই মন্দিরটি নির্মিত হয় এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি চীনা সম্প্রদায়ের লোকজনও এখানে বেড়াতে আসেন। সেই থেকে এই মন্দিরটি হয়ে উঠেছে বিশ্বাসের প্রতীক। এরপর যখন চীনের লোকেরা এখানে বেশি আসতে শুরু করে, তখন এই মন্দিরে প্রসাদ হিসেবে চাউমিন নিবেদন করা হয়।