নিউজশর্ট ডেস্কঃ আর মাত্র কয়েকটি দিন। তারপরেই আসতে চলেছে বছরের শেষ মাস। এই সময় বহু মানুষ ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে থাকেন। ডিসেম্বরে হালকা শীত পড়তে না পড়তেই এদিক-ওদিক ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন বহু মানুষ। আপনারাও কি ডিসেম্বরের একটি দিন ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করছেন? ঐতিহাসিক সৌন্দর্য দেখতে চাইছেন? আজকে আমাদের এই প্রতিবেদনের ডেস্টিনেশন(Destination) আপনার জন্য একদম পারফেক্ট।
কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে ইতিহাসের এই অন্যতম নিদর্শন। এই জায়গাটি হল দাঁতনের মুঘলমারি(Mughalmari) বৌদ্ধবিহার। যারা ভ্রমণের পাশাপাশি ইতিহাসকে ভালোবাসেন তাদের জন্য আজকের এই জায়গা একদমই উপযুক্ত। শীতের আমেজ উপভোগ করতে করতে আপনি দেখতে পারবেন প্রাচীন সময়ের ইতিহাসের নানা নিদর্শন। এই জায়গাটি নিয়ে নানা গবেষকের নানা রকমের মতের পার্থক্য রয়েছে।
বেশ কয়েকজন ইতিহাস গবেষক মনে করেন যে রাজা বিক্রমাদিত্যের কন্যা সখীসেনার অধ্যয়নের জায়গা ছিল এই জায়গাটি। এই জায়গাটিকে অনেকেই একটি পাঠশালা বলে মনে করেন। অন্যদিকে আবার চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং তার গ্রন্থ ‘সি ইউ কি’তে বঙ্গদেশের চার রাজ্যের বিশেষ বর্ণনা করেছিলেন-পূর্ববর্ধন, সমতটি, কর্ণসুবর্ণ এবং তাম্রলিপ্ত। বলা হয় এই তাম্রলিপ্ত রাজ্যের দশটি বৌদ্ধবিহার ও এক হাজার বৌদ্ধ সন্ন্যাসী উপস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: প্রচুর খরচ নয়, লোকাল ট্রেনে চড়ে বেড়িয়ে আসুন কলকাতার কাছের এই অফবিট লোকেশন থেকে
তাম্রলিপ্তর কাছাকাছি সেই সময় কোন বৌদ্ধ বিহার আবিষ্কৃত হয়নি, একমাত্র মোগলমারী আবিষ্কৃত হয়েছিল। ১৯৯৯ সালের সুবর্ণরেখার গতিপথ ধরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতাবিক বিভাগের বিভাগের অধ্যাপক অশোক দত্ত দাঁতনের মোগলমারিতে এসে সখিসেনা ঢিবি নামে একটি ঢিবির সন্ধান দেন। এরপর ২০০৩ থেকে ২০০৪ সাল নাগাদ এই জায়গার খননকার্য শুরু হয়। সেই সময় নকশাযুক্ত ইট, বৌদ্ধ ভিক্ষু বা সন্ন্যাসীদের বাসস্থানের কুঠুরি পাওয়া যায়।
গ্রামের ভেতরে খনন কার্য চালিয়ে বেশ কয়েকটি বৌদ্ধস্তূপ, এক বিশেষ ধরনের মৃত পাত্রসহ নানা রকমের প্রত্ন সামগ্রী পাওয়া গিয়েছিল। এরপর আবার ২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল নাগাদ খন্ড বিখন্ড বুদ্ধের মূর্তিও উদ্ধার হয়। এরপর যতবার খনন করা হয়েছে নানা রকমের ইতিহাসের দলিল বেরিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন: শীতের ছুটিতে পৌঁছে যান এই অজানা পাহাড়ি গ্রামে, সবুজে ঘেরা পরিবেশে মিলবে মনের শান্তি
খড়গপুর(Kharagpur) থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরত্বেই রয়েছে এই ঐতিহাসিক জায়গা। এটি এখন বিখ্যাত হয়ে গিয়েছে। বিশ্ববাসীর কাছে এক পরিচিতি নাম এই মোগলমারী। একদিনে ছুটিতে ঘুরে বেড়াতে চাইলে বেরিয়ে আসতে পারেন মোগলমারী থেকে।