শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: দিঘা (Digha), পুরী এবং দার্জিলিং বাঙালিদের প্রিয় ভ্রমণ স্থান, এবং এদের মধ্যে দিঘা আবার বিশেষভাবে জনপ্রিয়। অনেক বাঙালি দিঘা ভ্রমণ করেন, সুন্দর সমুদ্র সৈকত এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশের জন্য। আপনিও যদি কখনও পুরাতন দিঘা সমুদ্র সৈকতে গিয়ে থাকেন, তাহলে হয়তো এমন একটি আকর্ষণীয় পরিকাঠামো দেখেছেন যা ভাটার সময় জল থেকে উঠে আসে এবং জোয়ারের সময় ডুবে যায়। কিন্তু এই রহস্যময় পরিকাঠামো আসলে কী?
এই রহস্যময় পরিকাঠামোর সত্যতা
প্রথম নজরে, কাঠামোটি জলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পুরানো বাড়ির মতো মনে হতে পারে। তবে, এটি মোটেও কোনও বাড়ি নয়! বস্তুটি আসলে কেবল ধ্বংসস্তূপের স্তূপ। জোয়ারের সময়, জল এটিকে ঢেকে দেয় এবং ভাটার সময়, এটি আবার দেখা যায়, যা দেখে মনে হয় সমুদ্র থেকে কিছু একটা উঠছে। দিঘায় আসা অনেকেই এটি দেখতে পারেন, তবে খুব কম মানুষই এর ইতিহাস এবং কেন এটি সেখানে রয়েছে তা জানেন।
এর পিছনের ইতিহাস
ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির মতো দেখতে এই কাঠামোটি আসলে পুরানো ওয়াচ টাওয়ার। অনেক আগে ভারতের ব্রিটিশ ভাইসরয় ওয়ারেন হেস্টিংসের সময়ে নির্মিত হয়েছিল। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ এবং অন্যান্য কাজে এই টাওয়ার ব্যবহার করা হত। সময়ের সাথে সাথে, এটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে গিয়েছে, কিন্তু এটি এখনও পুরনো দিঘা সমুদ্র সৈকতে অতীতের স্মৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
ওয়ারেন হেস্টিংসের সাথে এই টাওয়ারের একটি আকর্ষণীয় সংযোগ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ওয়ারেন হেস্টিংসের একটি চিঠিতে এটিকে একসময় “প্রাচ্যের উজ্জ্বল” হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। ১৯২৩ সালে, জন ফ্রাঙ্ক স্মিথ নামে একজন ব্রিটিশ ভ্রমণকারী দিঘা ভ্রমণ করেছিলেন এবং এর সৌন্দর্যে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তিনি সেখানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই এলাকা সম্পর্কে তাঁর লেখাগুলি দিঘার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে এবং মানুষ আরও বেশি করে এই জায়গাটি পরিদর্শন করতে শুরু করেন।
আজ কী আশা করা যায়?
আজ, এই প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ সমুদ্র সৈকতে ইতিহাসের একটি অংশ হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। কাঠামোটি সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয় যখন এটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ এবং এলাকায় ব্রিটিশ প্রভাব পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হত। আর আপনি আজ যখন পুরনো দিঘা সমুদ্র সৈকতে যান, তখন এই অনন্য কাঠামোটি অবশ্যই লক্ষ্য করেন। যদিও এটি এখন আর কার্যকরী টাওয়ার নয়, তবুও এটি কৌতূহলী দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে যারা এর অতীত সম্পর্কে আরও জানতে চান।