আজকে দাঁড়িয়ে আমরা জানিনা কাল আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে! একটা রাতের মধ্যেই বদলে যায় অনেকের গোটা পৃথিবী। কিছুটা এমনই ঘটেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সাথে। কিছুদিন আগে পর্যন্তও যার নাম জানতোনা কেউ তিনিই এখন আলোচিত প্রতিটি বাঙালির বাড়িতে, চায়ের আড্ডায় এমন নানা জায়গায়।
দীর্ঘদিন আগেই অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন তিনি। তবে দর্রশকদের বিশেষ নজর কাড়তে না পেরে বিদায় জানিয়েছিলেন ইন্ডাস্ট্রাকে। সম্প্রতি দুর্নীতি কান্ডে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি। অর্পিতা প্রসঙ্গে এক প্রযোজক জানান যে অভিনয় মোটামুটি ভালো করলেও অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষাই তাকে টেনে নিয়ে গেছে এই অধঃপতনে।
সম্প্রতি একইরকম মন্তব্য করলেন টলিউডের খ্যাতনামা প্রযোজক রানা সরকারের গলায়। এই মুহূর্তে যেখানে সকলেই অর্পিতাকে তীব্র কটাক্ষবানে জর্জরিত করছে সেখানে প্রযোজকের গলায় শোনা গেলো উল্টো সুর। অপির্তার সহমর্মী হয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের সঙ্গে একটা কাজ করেছিল ও, একটি চ্যানেলের জন্য “ব্যোমকেশ বক্সী” সিরিজ বানিয়েছিলাম আমরা ২০১৪ সালে তার ‘কহেন কবি কালিদাস’ গল্পে অভিনয় করেছিল। রীতিমত অডিশন দিয়ে কাস্টিং করা হয়েছিল ওকে’।
এইদিন নিজের পোস্টে রানা জানান যে, অর্পিতা যথেষ্ট পরিশ্রমি এবং ওড়িয়া ছবির প্রতিষ্ঠিত এক অভিনেত্রী। রানার কথায় তিনি নাকি যথেষ্ট পারদর্শী অভিনেত্রীও বটে। হয়তো ভবিষ্যতে তার কাছ থেকে আরো ভালো ভালো কাজ পাওয়া যেত কিন্ত নিয়তির টানে আজ অতলে তলিয়ে গেলো অর্পিতা। শুধু তাই নয় প্রযোজক আরো লিখেছেন যে, ‘এরকম বহু অর্পিতা লুকিয়ে আছে আমাদের মধ্যে, সমাজ এদের আসল প্রতিভা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে, শুধু যে টাকা পয়সার লোভ সেটা না কিন্তু আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা এটার অন্যতম কারণ বলে মনে হয়।’
অর্পিতাকে নিয়ে হওয়া খিল্লি, মিমসের প্রতিবাদ করে রানা লিখেছেন, ‘খিল্লি আপনি করুন , মিম বানান , রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করুন, কিন্তু একজন শিল্পী তাকে বাঁচিয়ে রাখা অথবা বিচার করার দায়ভার ইডি/সিবিআই-এর না, আমাদের সমাজের… ভেবে দেখবেন। জয় জগন্নাথ’। রানার এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাপক ভাইরাল হয়ে যায় জনগণের মধ্যে।
যে কোনো বিতর্কেই দেখা যায় পক্ষে এবং বিপক্ষে দুই ধরনের মন্তব্যই করে থাকে মানুষ। তবে মজার ব্যাপার হলো রানা সরকারের এই পোস্টে তার বক্তব্যের সমর্থনে কেউ মন্তব্য করেছে এমন মানুষ দূরবীন দিয়েও খুঁজলেও বোধহয় পাওয়া যাবেনা। একজন প্রযোজককে তীব্র কটাক্ষ করে লিখেছেন,‘এতো প্রতিভা মেয়েটির যখন জানতেন একটা কাজ দিয়েছিলেন কেন ???? এখন বেশি জ্ঞান দিচ্ছেন’। অপর একজনের তীক্ষ্ণ মন্তব্য, ‘ও জেল থেকে ফিরে এলে ওকে নায়িকা বানিয়ে একটা ছবি করুন। আর সেলফি চাই মহরত এর আগের।’
একজন অর্পিতার প্রতি নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে লিখেছেন, ‘এরকম একটা ঠকবাজ কুরুচিকর মহিলাকে সমর্থন করছেন কেনো? শিল্পের প্রতি নিষ্ঠা একমন্যতা ভালোবাসা শিল্পীসত্বাকে বাঁচিয়ে রাখে সেই জায়গায় যদি লোভ বাসা বাঁধে ক্ষমতার সান্নিধ্যে আসা সেই লোভাতুর মনে কখনোই শিল্প ক্রিয়েটিভিটির বিকাশ ঘটতে পারে না।’ সবে মিলিয়ে অর্পিতাকে সহমর্মিতা জানাতে গিয়ে নিজেই ট্রোলের শিকার হয়ে গেছেন প্রযোজক রানা সরকার।