Papiya Paul

কোনো স্বজনপোষণ নয়, যোগ্যতা না থাকলে কোয়েলকে সিনেমা থেকে বাদ দিতেন রঞ্জিত মল্লিক

একসময়ে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। তার সেই সুদর্শন চেহারা, মুখের মধ্যে এক অন্যরকমের সৌন্দর্য সবকিছুই খুব পছন্দ করতেন দর্শকেরা। তার পোশাক-আশাক, চেহারা সমস্ত কিছুর মধ্যেই ছিল বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। এমনকি তার ডায়লগগুলো এখনো বাঙালি দর্শকদের মনে রয়ে গিয়েছে। প্রায় পাঁচ দশক ধরে তিনি টলিউডের অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। কিন্তু তার চলন কথাবার্তা কোন কিছুতেই অহংকার এখনো প্রবেশ করতে পারেনি।

   

সেই উত্তম কুমারের সময় থেকে বর্তমান যুগের কমার্শিয়াল সিনেমা সমস্ত কিছুই দেখেছেন তিনি। পরিচয় হয়েছে একের পর এক প্রজন্মের তারকাদের সঙ্গে। কিন্তু তিনি একজন এত বড় মাপের অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত বিতর্ক তাকে ছুঁয়েও দেখতে পারেনি। টলিউড হোক কিংবা বলিউড নেপোটিজম বা স্বজন পোষণ কথাটি বারবার শোনা যায়। কিন্তু রঞ্জিত মল্লিকের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণের শব্দটি কোন ভাবেই প্রযোজ্য নয়।

তিনি বরাবরই ভেবে এসেছেন ইন্ডাস্ট্রির কোন কাজে ভালো হবে। এমনকি নিজের মেয়ে কোয়েলের জন্য আলাদাভাবে কিছুই করেননি তিনি। বাবার নাম ভাঙ্গিয়ে কোয়েল কোন কাজ পাননি। এক সাক্ষাৎকারে রঞ্জিত মল্লিক বলেছিলেন, ‘কোয়েলের ছবি করা নিয়ে আমার কখনো কোনো আপত্তি ছিল না। কেবল একটাই ভয় ছিল। মনে হয়েছিল ছবির সাফল্য না পেলে ওর মনের উপর চাপ পড়বে। এর পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের টাকার ক্ষতি হবে প্রযোজকেরও। এই ভয়ে হরনাথ চক্রবর্তীকে বললাম, ‘হর.. দু-একদিন শ্যুটিং দেখবি। তারপর বাদ দিয়ে নতুন নায়িকা নিয়ে নিবি।’

এই কথা জানতে পেরে কোয়েল আবার বলেছিলেন, ‘বাবা! সবাই সবার ছেলে মেয়েকে সাহায্য করে আর তুমি আমায় ছবিতে নিতে বারণ করছো!’ এরপরে কোয়েলকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছিলেন যে কোয়েল, রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে বলে দর্শক প্রথম ছবিটা দেখতে যাবেন। বড় জোর দ্বিতীয় ছবিটা দেখতে যাবেন। তারপর আর তুমি রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে নও। তোমাকে প্রমাণ করতে হবে তুমি, তুমিই। কোনও বাবা মা তাঁর ছেলে মেয়েকে সবটা হাতে ধরে করিয়ে দিতে পারে না। শেখাতে পারে বড় জোর।’ আর এরপরে কোয়েলের সফলতার কথা তো সকলেই জানেন।