‘কে এই কে কে’, এই একটা মন্তব্য যে জীবনে সুনামি নিয়ে আসবে তা কে জানতো? প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ প্রসঙ্গে তার এই বক্তব্য যেন জীবনের ঐতিহাসিক ভুল। শিল্পী হয়ে আর একজন শিল্পীকে ‘অসম্মান’ করার অভিযোগে একপ্রকার গৃহবন্দি হয়েই থাকতে হয়েছিলো রূপঙ্করকে। পেয়েছেন খুনের হুমকি, বাদ পড়েছেন মিও আমোরের জিঙ্গেল থেকেও। সোশ্যাল মিডিয়া খুললে এখনও ইতিউতি সেই রেশ দেখতে পাওয়া যায়।
কার্যত এইসব কারণেই নিজেকে খানিকটা ঘরবন্দি করে রেখেছিলেন তিনি। তবে সামনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। ইতিমধ্যেই বেজে গিয়েছে পুজোর ডঙ্কা। এখনও কি নিজেকে ঘরবন্দি করেই রাখবেন? সম্প্রতি এই নিয়ে বাংলার এক জনপ্রিয় মিডিয়া হাউসের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসলেন রূপঙ্কর।
জানা গেলো তার ছোটোবেলার পুজোর কথা। ছোটবেলা কেটেছে শ্যামবাজারে। প্রথম ঠাকুর দেখা বাগবাজার সর্বজনীনে। এইদিন গায়কের মুখেই শোনা গেলো যে, পুজোর সময় কীভাবে বাগবাজার, হেদুয়া ,কলেজ স্কোয়্যার আর লেডিস পার্ক চষে বেড়াতেন তিনি। রূপঙ্করের কথায়, “আমার প্রথম রোল খাওয়াও পুজোতেই তার আগে রোল বলে কোনও বস্তু আছে বলেই আমার জানা ছিল না!”
পাশাপাশি এইদিন একটা মজার গল্পও শোনালেন রূপঙ্কর। ছোটোবেলার পুজোর মানেই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি একটু আধটু চোখের চাহুনি, ক্রাশ খাওয়া, ঠোঁটের কোনে হাসি। কমবেশি আমাদের সবারই এসবের অভিজ্ঞতা আছে। ব্যতিক্রম ছিলেননা রূপঙ্করও। এই প্রসঙ্গে গায়ক জানান, “আমার বন্ধুরা প্রায় সবাই একই মেয়ের প্রেমে পড়েছিল। পাড়ার সব ছেলেকেই সে প্রায় নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাত! পুজোর সময়ে ওই মেয়েটি বেরোলে তার পিছনে পাড়ার ছেলেরাও বেরিয়ে পড়ত। আমিও বেরোতাম ওদের সঙ্গে।”
যদিও পাড়ার এক দাদার ভয়ে সেই মেয়ের দিকে তাকানোর কোনো সুযোগ নাকি তিনি পাননি। এইদিন অতীত থেকে এমনই সব মজার মজার কথা তুলে আনছিলেন তিনি। তবে এতো হইহইয়ের মাঝেও কোথাও যেন একটা আফশোষের সুর শোনা গেলো রূপঙ্করের গলায়। আসলে কাজের চাপে পুজোর সময় কোনো বছরই নাকি তার বাড়িতে থাকা হয়না।
পাশাপাশি টলিপাড়া থেকে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে, রূপঙ্কর বিগ বসে যাওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়েছেন পুজোয় পরিবারের পাশে থাকার জন্য। যদিও এই খবরের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি আমাদের পক্ষ থেকে। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে এমনটাই খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া রূপঙ্করের কথায়, “কলকাতার থিম পুজো আমার ভাল লাগে না। আমার কাছে আটপৌরে পুজোর আনন্দ অনেক বেশি। আগে যেমন হত। ওই পুজোয় হয়তো গ্ল্যামার ছিল না, কিন্তু একটা প্রাণ, আন্তরিকতা ছিল। এটা খুব মিস করি।” তাই সবে মিলিয়ে তিনি ঠিক করেছেন যে এই বছরের পুজোটা তিনি বাড়িতেই কাটাবেন।