প্রেম এক বড়ো অপ্রত্যাশিত অনুভূতি। আপনি কখন কোথায় কার মায়ায় আবদ্ধ হয়ে যাবেন তা কেউ বলতে পারেনা। আর সেটা যদি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কারোর সাথে হয়ে থাকে তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। আর আজকের গল্প ৭০-৮০ দশকের শীর্ষস্থানীয় তারকা শত্রুঘ্ন সিনহাকে নিয়ে। শত্রুঘ্ন সিনহা এবং রীনা রায়ের প্রেম কাহিনি সর্বজনবিদিত। কিন্তু ১৯৮০ সালের ৯ জুলাই সকলকে অবাক করে দিয়ে পুনম সিনহাকে বিয়ে করেন শত্রুঘ্ন সিনহা।
এমনিতে ওয়ান লেডি ম্যান হিসেবে পরিচিত শত্রুঘ্ন সিনহা এবং রীনা রয়ের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিলো বহুল চর্চিত। সিনেপ্রেমীদের বদ্ধমূল ধারণা ছিল যে এই দুই বলি তারকা যে বিয়ে করতে পারেন। কিন্তু তারমধ্যেই অভিনেতা আর পুনমের বিয়ের খবরে হকচকিত হয়ে পড়েছিলো সবাই। এমনকি অবাক হয়েছিলো খোদ রীনাও।
যদিও শত্রুঘ্ন-পুনমের বিয়ে হওয়ার পরেও নিয়মিত চর্চায় থাকতো শত্রুঘ্ন এবং রীনার লাভস্টোরি। কারণ বিয়ের পরেও রীনা এবং শত্রুঘ্ন কোনওদিনই তাদের বন্ধুত্ব ভেঙে দেননি। আর সেই কারণেই শত্রুঘ্নর জীবনের ‘দ্বিতীয় নারী’ বলে আখ্যায়িত করা হতো তাকে। তবে শোনা যায়, এই বিয়ের খবরে রীনার মন এমনভাবে ভেঙে যায় যে, তড়িঘড়ি পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহসিন খানকে বিয়ে করে নেন তিনি।
তবে এই ত্রিকোণ প্রেম কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি। মহাসিনের সঙ্গে বিয়ের পর বিনোদন জগতকে চিরদিনের মতো বিদায় জানান রীনা। কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে একটা মেয়ে জন্নত। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরেই রীনা বুঝতে পারেন, ঝোঁকের বসে বিয়ে করে বড্ডো ভুল করে বসেছেন যে। সঠিক কারণ না জানা গেলেও, এরপরেই নাকি বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন অভিনেত্রী।
মুম্বাইয়ের এক নামি সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় শত্রুঘ্ন সিনহাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বহু বছর আগের স্মৃতিকে পুনরুজ্জীবিত তিনি জানান, “সেই সময়ে আমার সবচেয়ে শক্তিশালী আবেগ ছিল ভয়। আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। আমি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছিলাম যেখানে আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়েছিল। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত, আমি পিছিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। পুনম ভেবেছিলো আমি হয়তো বিয়ে করবোনা। কিন্তু শেষমেশ আমি বিয়েটা করি।”
পুনমের সাথে বিয়ের পরেও কেন রীনার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তিনি? এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিনেতা জানান,” মিস রীনা রায় যদি শুধুমাত্র মিস্টার শত্রুঘ্ন সিনহার জন্য চিন্তা করেন, তাহলে অন্য কারও আপত্তি কেন? তিনি এবং তার পরিবার আমাকে দিকনির্দেশনা, পরামর্শের জন্য খোঁজেন। আমি বিবাহিত বলে কি আমি তাদের উপেক্ষা করে একপাশে ফেলে দেব?”
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু বলিউড ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা যায়, রীনার বিচ্ছেদের পর মেয়ে জন্নতের কাস্টাডি পায় তার বাবা মহসিন। তবে পাক ক্রিকেটার দ্বিতীয়বার বিয়ে করার পর সন্তানের দায়ভার পান রীনা। এর জন্য নাকি অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় তাঁকে। এক্ষেত্রে পুরনো বন্ধুকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন শত্রুঘ্ন সিনহা। রীনার কোলে তার মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন তিনি