সীমা মাঞ্জি,সোনু সুদ,প্রতিবন্ধী,জীবন কাহিনী,Sima Manji,Sonu Sud,Handicapped,Life story

Moumita

শিক্ষিকা হবার লড়াইয়ে একপায়ে লাফিয়েই ৫০০ মিটার পথ পাড়ি, পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস সোনু সুদের

ইচ্ছে শক্তির কাছে হার মেনে যায় সমস্ত বাধা প্রতিকূলতা। এই কথাটিই আবারও একবার প্রমাণ করলো বিহারের সীমা। বছর দশেকের একরত্তি এই মেয়েটি রিতিমত উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের চোখে। দূর্ঘটনায় একটি পা খোয়া গেলেও, নিজেকে শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী হিসেবে দেখতে চায়না সে‌। আর না চায় কারও দয়া, করুনা। তাই জীবনযুদ্ধে মাথা উঁচু করে টিকে থাকতে একটা পা’কেই সম্বল করে রোজ ৫০০ মিটার পথ ভেঙে স্কুলে যায় সে। তার ইচ্ছে পড়াশোনা শেষ করে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার। আজ আমরা বলছি বিহারের সীমার কথা।

   

সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে লড়াকু এই মেয়ের কাহিনী মানুষের কাছে পৌঁছাতে বেশি সময় লাগেনি। নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তার ভিডিও, আর এই ভিডিওটিই নজরে আসে জনপ্রিয় অভিনেতা সোনু সুদের। এর আগেও বহুবার তিনি পরিযায়ী শ্রমিক ও অসহায় মানুষদের কাছে দেবদূত হয়ে পৌঁছে গেছেন। ব্যতিক্রম হলোনা এবারও। ভিডিও দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন তিনি। আর তাই লড়াকু মেয়েটার পাশে দাঁড়িয়ে এক দারুন ঘোষনা করলেন তিনি।

সম্প্রতি সোনু নিজের একটি টুইটে সীমার ভিডিওটি আপ্লোড করেন। খালি পায়ে স্কুলের পোশাকে, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে এক পায়ের উপর ভর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে স্কুলে যাচ্ছে সীমা। এই ভিডিওটির ক্যাপশনে সোনু লিখেছেন, ‘এবার একটা পায়ে না, দু পায়ে লাফিয়ে স্কুলে যাবে। টিকিট পাঠাচ্ছি। চলুন দু পায়ে হাঁটার সময় এসে গিয়েছে।’ সোনুর এই টুইট প্রকাশ্যে আসার সাথে সাথেই ভাইরাল হয়ে যায়।

বিহারের ফতেপুর নামক একটি ছোট্টো গ্রামে থাকে সীমা। বছর দশেকের এই ছোট্টো মেয়েটি একটি দূর্ঘটনায় হারিয়ে ফেলে তার একটি পা। ফতেপুর গ্রামের সরকারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পাঠরত সে। বাবা খিরান মাঞ্জি কর্মসূত্রে বিহারের বাইরে থাকেন। অভাব অনটনের সংসারে সীমাকে নিয়ে ছয় সন্তানের খাবার জোগাড় করতেই কালঘাম ছোটে তার। এমতাবস্থায় কৃত্রিম পা’এর কথা ভাবা একরকম ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার মতো। এই পরিস্থিতিতে সোনু সুদের এই ঘোষনা একপ্রকার দেবতার দান তাদের কাছে।

প্রসঙ্গত, সীমার একটা স্বপ্ন আছে। একরত্তি মেয়েটা বড়ো হয়ে শিক্ষিকা হতে চায়। তার ইচ্ছে গ্রামের মানুষগুলোকে পড়াশোনা শেখাবে সে। বাবা মা লেখাপড়া করেননি, কিন্তু মেয়ে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক এটাই চান তারা। প্রতিবন্ধী হয়েও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর এই মেয়েকে কুর্নিশ না জানিয়ে উপায় নেই।