৩৫ টাকার জন্য রেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সুজিত স্বামী। রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা সুজিত টানা পাঁচ বছর আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে ফিরে পেলেন নিজের টাকা। উল্লেখ যোগ্য বিষয় হলো তার এই জয় শুধু তার টাকাই নয়, ফিরিয়ে দিলো আরো তিন লক্ষ মানুষের টাকা যারা একই রকমভাবে টাকা খুইয়েছিলেন। রেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী সেই তিন লক্ষ মানুষকেই তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
সুজিত রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা, পেশায় তিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার। এই গল্পের শুরু ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে। ২০১৭ সালে কোটা রেল স্টেশন থেকে ৭৬৫ টাকা দিয়ে দিল্লিগামী ট্রেন গোল্ডেন মেলের টিকিট কেটেছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে তার আগের দিনই চালু হয় জিএসটি। এরপর ব্যক্তিগত কারণে টিকেটটি ক্যান্সেল করেন সুজিত। কিন্তু ঘটনাক্রমে তার পুরো টাকা ফেরত পাননি তিনি। ক্যান্সেলেশন চার্জ বাদ দিয়েও অতিরিক্ত ৩৫ টাকা কেটে তাকে ফেরত দেওয়া হয় ৬৬৫ টাকা।
এই ঘটনার পরই তিনি রেল কর্তৃপক্ষের কাছে কৈফিয়ত চান যে কেন জিএসটি চালু হওয়ার পরেও কেন ৩৫ টাকা অতিরিক্ত কাটা হয়েছে? সঠিক জবাব না পেয়ে তৎক্ষণাৎ আইনি পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। তথ্য সহ সমস্ত বিবরণ তুলে ধরেন আরটিআই’এর নিকট।
আরটিআই রেলের নিকট এর জবাবদিহি চাইলে রেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় যে, রেল মন্ত্রকের ৪৩ নম্বর কমার্শিয়াল সার্কুলার অনুযায়ী জিএসটি লাগু হওয়ার আগেই টিকিট কেটেছিলেন সুজিত। কিন্তু ঘটনাক্রমে তিনি টিকিট ক্যান্সেল করেন জিএসটি চালু হওয়ার পর। জিএসটি লাগু হওয়ার আগেই টিকিট কেটেছিলেন তিনি তাই তাতে যে পরিষেবা কর যুক্ত হয়েছে তার আর ফেরত দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই।
এই প্রসঙ্গে সুজিত জানায়, “টাকা ফেরতের জন্য প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, জিএসটি কাউন্সিল এবং অর্থমন্ত্রীকে লাগাতার টুইট করে গিয়েছি। আর টাকা ফেরতের জন্য এই টুইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ১ মে রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ৩৫ থেকে দু টাকা কেটে নিয়ে ৩৩ টাকা ফেরত দেওয়া হয় সুজিতকে। কিন্তু নিজের ন্যায্য পাওনা পেতে স্বামীও পিছপা হননি। দু টাকা ফেরত নেওয়ার জন্যই তিনি আবার লড়াই শুরু করে দেন। এরপর গত শুক্রবার স্বামী তার যুদ্ধে জয়ী হন এবং তার পাওনা দু টাকাও ফেরত পেয়েছেন।
এই গোটা ঘটনায় উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো সুজিতের এই পাঁচ বছরের দীর্ঘ লড়াইয়ে লাভবান হলেন আরও ২ কোটি ৪৩ লক্ষ মানুষ। আইআরসিটিসি-র এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই সমস্ত মানুষকে তাদের ন্যায্য পাওনা ফিরিয়ে দেওয়া হবে রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। তার জন্য মোট খরচ হবে প্রায় ২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা।