পুরো দুটো বছর কেটে গেছে অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত আর নেই আমাদের সঙ্গে। আজও তার ছবি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে ভক্তমহল। তার মৃত্যুর ন্যায়বিচার চেয়ে আজও গলা ফাটায় লাখো অনুরাগী। সদা হাস্য, এনার্জিতে ভরপুর এই অভিনেতা যে সত্যিই আর নেই এই কথাটাই মানতে পারেনা অনেকে। এমতাবস্থায় অনুরাগীদের ভাবাবেগে আঘাত দিয়ে সেই ক্ষতকেই আবার দগদগে করে দিলো ই কমার্স সাইট ফ্লিপকার্ট।
সম্প্রতি ই কমার্স সাইট ফ্লিপকার্ট চলে এসেছে সুশান্ত অনুরাগীদের রোষানলে। যার কারণে সাইটকে বয়কট করার ডাক দিয়েছে ভক্তমহল। কিন্তু কী এমন ঘটেছে যার জন্য দেশের সবচেয়ে বড়ো এবং জনপ্রিয় সাইট কে সম্পূর্ণ বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিলো ভক্তমহল। চলুন জেনে নিই বিস্তারিত।
আসলে সম্প্রতি ফ্লিপকার্টে বিক্রি করা হচ্ছে সুশান্ত সিং রাজপুতের ছবি প্রিন্ট করা টি শার্ট। প্রিয় তারকাদের স্মৃতি জমিয়ে রাখতে তো অনেকেই ভালোবাসেন। তবে এক্ষেত্রে হয়েছে কি, সুশান্তের ছবির সাথে যে লেখাটি ব্যবহার করেছে সংস্থাটি তাতেই চড়েছে ক্রোধের পারা। আর তার জেরেই হ্যাশট্যাগ বয়কট ফ্লিপকার্টের ডাক দিয়েছে অনুরাগীরা।
সংশ্লিষ্ট সংস্থার এই টি শার্টটিতে দেখা যাচ্ছে যে, সাদা টি শার্টের উপর সুশান্তের একটি হাসি মুখের ছবি প্রিন্ট করা। তার নীচে লেখা রয়েছে ‘Depression like drawing’ অর্থাৎ অবসাদে ডুবে যাওয়ার মতো। আর এই লেখা দেখেই মাথা ঘুরেছে অনেকের। প্রয়াত তারকাকে নিয়ে এই ব্যবসা দৃষ্টিকটু ঠেকেছে অনেকের কাছেই।
কেউ কেউ তো লিখেছেন, ‘একজন মৃত মানুষকে নিয়ে ব্যবসা। আর কত নীচে নামবেন আপনারা? ওঁর পরিবার আছে, তাঁদের আবেগের কথা ভাবা উচিত ছিল। পাপ কখনও বাপকে ছাড়ে না’। আবার কেউ সুশান্তের মৃত্যুর জল্পনাকে টেনে এনে বলেছে, ‘সুশান্ত মোটেই আত্মহত্যা করেনি, ওকে খুন করা হয়েছে’। জনৈক কটাক্ষ, ‘আপনাদের লজ্জা লাগা উচিত, এই প্রোডাক্টকে দ্রুত সরিয়ে ফেলুন নয়তো রেডি থাকুন বয়কট হওয়ার জন্য’।
প্রসঙ্গত, সাল ২০২০, ১৪ জুন অভিনেতার বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ। মুম্বইয় পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী এটি একটি আত্মহত্যা। সাথে এও জানান যে, দীর্ঘদিন ধরে নাকি অবসাদে ভূগছিলেন সুশান্ত আর সেখান থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। এরপরই প্রয়াত অভিনেতার তৎকালীন প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করে অভিনেতার পরিবার। সেই মামলার সুনানি এখনও চলছে। এরপরই পরিবারের চাপে সিবিআইয়ের উপর তদন্তের ভার দেয় সুপ্রিম কোর্ট। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনো ঠোস তথ্যপ্রমাণ বের করতে পারেনি সিবিআই। তবে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেও আজও তাঁর ভক্তদের মধ্যে বেঁচে রয়েছেন প্রয়াত অভিনেতা।