Arijit

সেওয়াগের টেস্ট কেরিয়ার ফিরিয়ে দেন অনিল কুম্বলে, নিজেই জানালেন সেকথা

আচমকা টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার পুরনো ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন বীরেন্দ্র সহবাগ। এত দিন পরে তিনি জানালেন, খুব অবাকই হয়েছিলেন বাদ পড়ে। হয়তো টেস্টে দশ হাজার রান করে ফেলা কোনও সমস্যা হত না, যদি না মাঝের পর্বে তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হত। ১০৪টি টেস্ট খেলে সহবাগের সংগ্রহ ৮৫৮৬ রান।

   

‘স্পোর্টস ১৮’-এর এক অনুষ্ঠানে সহবাগ বলেছেন, ‘‘আচমকাই আবিষ্কার করলাম, আমি আর টেস্ট দলের অংশ নই। আমাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। হয়তো দশ হাজারের উপর রান নিয়েই টেস্ট কেরিয়ার শেষ করতে পারতাম, যদি না সেই পর্বটায় আমাকে বাদ দেওয়া হত।’’ ক্রিকেট জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এক প্রাক্তন অধিনায়কের কাছে কৃতজ্ঞ সহবাগ। তাঁর নাম? অনিল কুম্বলে। অস্ট্রেলিয়া সফরে নির্বাচকদের সঙ্গে অনেক লড়াই করে সহবাগকে দলের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন অধিনায়ক কুম্বলে। তাঁর জোরাজুরিতেই নির্বাচকেরা অতিরিক্ত সদস্য হিসেবে তাঁকে রাখতে রাজি হন। সহবাগ তাঁর অধিনায়ককে নিরাশ করেননি।

সেই সফর সম্পর্কে অজানা কাহিনি শুনিয়েছেন সহবাগ। ফাঁস করেছেন, পার্‌থ টেস্টের আগে কুম্বলে এসে তাঁকে বলেন, প্রস্তুতি ম্যাচে একটা অর্ধশতারন করো শুধু। তা হলেই তোমাকে পার্‌থ টেস্টে খেলানো হবে। পার্‌থে সেই টেস্টে সহবাগ খেলেন এবং ভারতও জেতে। কিন্তু সহবাগ তাঁর পুরনো মেজাজে ফেরেন অ্যাডিলেডে। প্রথম ইনিংসে ৬৩ করার পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫১ করে ম্যাচ বাঁচান তিনি। ‘‘ওই ৬০ রান আমার জীবনের কঠিনতম। আমি ব্যাট করছিলাম অনিল ভাইয়ের দেখানো আস্থার মর্যাদা রক্ষা করতে। চাইনি আমাকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে আসার জন্য অনিল ভাইকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হোক,’’ বলেছেন সহবাগ।

প্রথম ইনিংসে লড়াই করে রান করার পরে দ্বিতীয় ইনিংসে স্বমেজাজে ফেরেন নজ়ফগড়ের নবাব। নিজের পছন্দের গান গাইতে থাকেন, আম্পায়ারের সঙ্গে গল্প শুরু করে দেন। ফল? ১৫১ রানের সহবাগোচিত ইনিংস। সফর শেষে কী বলেছিলেন কুম্বলে? সহবাগ ফাঁস করছেন, ‘‘অনিল ভাই বলে, যত দিন ক্যাপ্টেন থাকবে আমাকে কখনও বাদ পড়তে হবে না।’’ এ রকম প্রতিশ্রুতি তিনি জীবনের শুরুতে অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকেও পেয়েছিলেন বলে জানান সহবাগ। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন খেলোয়াড় এই বিশ্বাসটাই পেতে চায় তার অধিনায়কের থেকে। যেটা আমি শুরুর দিকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে পেয়েছি আর পরের দিকে কুম্বলের কাছ থেকে।’’

ওই সফরেই ঘটেছিল ‘মাঙ্কিগেট’ বিতর্ক। সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের সম্প্রতি মৃত্যু ঘটেছে দুর্ঘটনায়। সহবাগ বলেছেন, ‘‘অনিল কুম্বলে যদি অধিনায়ক না থাকত, ঘটনা আরও বাড়তে পারত। সফর বাতিল হয়ে যেতে পারত। হরভজন সিংহের ক্রিকেট কেরিয়ারও শেষ হয়ে যেতে পারত।’’