রচনা ব্যানার্জি,পল্লবী দে,বিদিশা দে মজুমদার,মঞ্জুষা নিয়োগী,টলিউড,বিনোদন,আত্মহত্যা,Rachana Banerjee,Pallavi Dey,Bidisha Dey Majumder,Manjusha Niyogi,Tollywood,Entertainment,Suicide

Moumita

‘হাতে কাঁচা টাকা পেয়েই ফুর্তি শুরু, এদের জন্য কষ্ট হয় না!’ এবার মুখ খুললেন রচনা ব্যানার্জি

টলিপাড়ার মৃত্যু মিছিল যেন থামছেইনা। একের পর এক কলাকুশলীদের আকস্মিক আত্মহত্যার খবরে শোকস্তব্ধ গোটা বিনোদন জগত। পল্লবী-বিদিশা-মঞ্জুষা, গত দু সপ্তাহে এই তিনটি তরতাজা প্রাণ অকালেই ঝরে পড়েছে‌। আশ্চর্যজনকভাবে প্রত্যেকেই বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। কিন্তু কী এমন কারণ ছিল যার জন্য এই তরুণ প্রতিভাধর শিল্পী মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছেন? সবাই যখন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত তখন টলিউডের আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জি করলেন বিষ্ফোরক মন্তব্য।

   

টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় শো ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’এর সঞ্চালিকার বক্তব্য, নতুন প্রজন্ম স্ট্রাগল করতে শেখেনি। সবকিছুই প্লেটে সাজিয়ে তাদের ঔ মুখের কাছে দিতে হবে। কিছুই করব না, অথচ কাজ চাই। আর তা মজুদ না পেলেই হয়ে যাচ্ছে ডিপ্রেশনের শিকার, বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার মতো চরম পথ।

নিজেদের সময়ের কথা তুলে ধরে তিনি জানান যে, তাদের সময়টা ছিলো অন্যরকম। অমানুষিক পরিশ্রম করে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে হতো সেসময়। সবকিছু প্লেটে সাজিয়ে তাদের মুখের সামনে তুলে ধরতোনা কেউই। এই প্রসঙ্গে তার আরও সংযোজন, প্রত্যেকের জীবনে স্ট্রাগলটা খুব জরুরী। আর এই স্ট্রাগল করতে চাইছে না কেউ। বর্তমান প্রজন্মের সবটাই বড্ডো ‘চটজলদি চাই’ মনোভাব। এমনকি স্কুলের গন্ডি পেরোনোর আগেই সিরিয়ালে নাম লেখাচ্ছে মেয়েরা। তারপরই হাতে কাঁচা টাকা পেয়েই ফুর্তি শুরু। আর এটাকেই তারা নিজেদের জীবন ভেবে নিয়েছে। কিন্তু কে বোঝাবে তাদের যে, শুধুমাত্র এটাই জীবন নয়।

অভিনেত্রীর কথায় তিনি তরুণ প্রজন্মের এ হেন সিদ্ধান্তে যতটা না কষ্ট পান তার চেয়েও বেশি কষ্ট পান তাদের বাবা মায়ের কথা ভেবে। এইক্ষেত্রে তিনি পিতা মাতারই পক্ষ নিয়ে বলেছেন, পৃথিবীতে এমন কোনও পিতা-মাতা নেই যারা সন্তানের ভালো চাননা। এই সব ক্ষেত্রে সবাই বাবা-মায়ের দিকে আঙ্গুল তুললেও, আজকাল বাবা-মায়ের কথা শোনে কয়জন? প্রশ্ন তুলেছেন বর্তমান প্রজন্মের কাছে। রচনার স্পষ্ট দাবি, “আমার এই মেয়েগুলোর জন্য বিন্দুমাত্র কষ্ট হয় না। কষ্ট হয় ওদের বাবা মায়ের জন্য। তারা তো কোন দোষ করেননি।”

অন্যের জন্য নিজের জীবনকে শেষ করা সম্পূর্ণ নীতি বিরুদ্ধ কাজ। নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ কখনোই অন‍্যের হাতে তুলে দেওয়া উচিত নয়, মত রচনার। তার ক্ষোভ, এই প্রজন্মের কাছে বন্ধুরাই সব, বাবা মা হল শত্রু। অভিনেত্রীর কথায় সুন্দর জীবনকে উপভোগ করতে হয়, লড়াই করে জীবনে টিকে থাকতে হয়। তার কথায়, “জীবন খুবই সুন্দর। সেটাকে শেষ না করে উপভোগ করা উচিত। তারপর তো জীবনে কী পেলাম আর কী পেলাম না তার তুল্যমূল্য বিচার করব! একটা ছেলের জন্য জীবন দিয়ে দেবো? সে আমার জীবন নিয়ন্ত্রণ করবে কেন? জীবনের এক শতাংশ জায়গা তার। তাকে এতটা গুরুত্ব দেবে কেন?”

কথাপ্রসঙ্গে নিজের ছেলের প্রসঙ্গ তুলে আনেন এই ক্ষেত্রে, “এদের কথা কি বলবো আমার নিজের ছেলেই বেয়াড়া হয়ে গিয়েছে। তাকে যত বোঝাচ্ছি সে মানতে নারাজ। তার দাবি সে ঠিক আমি ভুল।” সমস্ত পরিস্থিতি দেখে রচনা ব্যানার্জীর বারবার এটাই মনে হয়েছে যে এই নতুন প্রজন্ম খুব খারাপ দিকে এগোচ্ছে। তাদের ঠিকমতো কাউন্সিলিং করা দরকার বলে মত প্রকাশ অভিনেত্রীর।