একথা সবাই নিশ্চয়ই জানেন যে বড় যানবাহন যেমন বাস, ট্রাক, ক্রেন ইত্যাদিতে ডিজেল ব্যবহার করা হয় যেখানে ছোট যান যেমন বাইক, স্কুটার, ইত্যাদিতে পেট্রোল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু জানেন কি বড় গাড়িতে পেট্রোল এবং ছোট গাড়িতে ডিজেল ব্যবহার করা হয় না কেন? হ্যাঁ, এর পেছনেও রয়েছে একটা বিশেষ কারণ।
ডিজেল এবং পেট্রোল উভয়ই অপরিশোধিত তেল থেকে পাওয়া যায়। এ ছাড়া এই অপরিশোধিত তেল বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। জানিয়ে রাখি অপরিশোধিত তেল হালকা এবং ভারী উপাদানে বিভক্ত। এখন এর হালকা বা হালকা অংশ থেকে পেট্রোল তৈরি কর হয় এবং ভারী অংশ ডিজেল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
ছোট গাড়িতে পেট্রোল আর বড় গাড়িতে ডিজেল ব্যবহার করা হয় তার কারণ : পেট্রোল ইঞ্জিন এ স্পার্ক প্লাগ ব্যবহার করে ফলে দহন ও কম্প্রেস রেশিও ডিজেলের মত হয় না , ফলে শব্দ কম এবং ভাইব্রেশন কম হয়। অন্যদিকে ডিজেল ইঞ্জিনে নজেল থেকে সরাসরি ইন্টারনাল ভাবে দহন করতে হয় এবং এতে বিস্ফোরণ ঘটে ইঞ্জিনে ফলে কমপ্রেশন রেশিও বেশি (পেট্রোল ইঞ্জিনের চেয়ে 5-10 গুণ বেশি)।
সোজা কথায় বললে ডিজেল ইঞ্জিনের ক্ষমতা ও কার্য দক্ষতা বেশি। এখন এই উচ্চ সংকোচন পরিচালনা করা বা সহ্য করার জন্য ইঞ্জিনটিকেও যথেষ্ট বড়ো এবং ভারি ধাতু দিয়ে তৈরি করা হয়। এই কারণেই ডিজেল ইঞ্জিনগুলি পেট্রোল ইঞ্জিনের চেয়ে ভারী হয়।
যেহেতু ডিজেলের ক্ষমতা বেশি তাই স্কুটার, মোটরসাইকেলের মতো ছোট যানবাহনের জন্য এটি উপযুক্ত নয় এবং এই কারণেই ছোট ইঞ্জিনের যানবাহনে পেট্রোল এবং বড় ইঞ্জিনের যানবাহনে ডিজেল ব্যবহার করা হয়।
এখন যদি কখনও ভুল বশত পেট্রোল গাড়িতে ডিজেল ঢেলে ফেলেন তাহলে অবিলম্বে ইঞ্জিন বন্ধ করে দিন। এরপর মেকানিক এর সাহায্যে ফুয়েল ট্যাংক, ফুয়েল লাইন ও পাম্প পরিষ্কার করিয়ে, সঠিক তেল ভরে তবেই গাড়ি চালান। কারণ ডিজেল, ইঞ্জিনের ইন্ধন এর কাজ ছাড়াও ফুয়েল পাম্প ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ কে লুব্রিকেট করে। পেট্রোল করে ঠিক তার উল্টো। কাজেই এই দুটি জ্বালানি তে গন্ডোগোল হলে ইঞ্জিন ও ফ্যুয়েল সিস্টেম এর বড়ো ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
