দূরাভাষে ব্যাপক বিপ্লব এনেছিল হোয়াটসঅ্যাপ। লিখিত বার্তাকে মানুষের কাছে আরো সহজ সরল করে দিয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলি। আর এখন তো ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পেশাদার জীবনেও ঢুকে গেছে এই সামাজিক মাধ্যমগুলি। বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতিতে ওয়ার্ক ফ্রম হোমে থাকা কর্মীদের তালমিল রাখার মাধ্যম হয়ে উঠেছে এই সফটওয়্যার গুলি।
এখনও পর্যন্ত এই সমস্ত অ্যাপগুলিতে কল, মেসেজ বা ব্যাক আপ সংরক্ষণ করতে একটা টাকাও লাগেনা। তবে সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে এবার থেকে এখানেও লাগবে টাকা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী খুব শীঘ্রই বড়ো বদল আসতে চলেছে টেলি আইনে। এবার WhatsApp, Facebook, Google Duo এর মত ফ্রি কলিং এবং ম্যাসেজিং অ্যাপকেও টেলিকম আইনের আওতায় আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্র। আর তার জন্যেই নাকি আসতে চলেছে নতুন বিল।
সূত্রের খবর, এই আইনের সাহায্যে এমন কিছু পরিষেবা টেলিকম আইনের আওতায় আসবে যেগুলি এতদিন খুব বেশি রেগুলেটেড ছিলোনা। খবর অনুযায়ী ইতিমধ্যেই খসড়া টেলিকমিউনিকেশন বিল ২০২২-এ এরকম অনেক প্রস্তাব পেশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এই বিল যদি সত্যিই কার্যকর হয় তাহলে তার প্রভাব যে সরাসরি গ্রাহকদের উপরেই পড়বে তা বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, এই বিলে বলা হয়েছে দেশের বিভিন্ন OTT পরিষেবাগুলিকেও এবার থেকে টেলিকম পরিষেবার একটি অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হবে। সূত্রের খবর, এবার থেকে এই সমস্ত কোম্পানিগুলিকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য লাইসেন্স নিতে হবে। আর এই কারণেই সংস্থাগুলিকেও দিতে হবে একটি লাইসেন্স ফি।
এদিকে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কথা থেকে জানা যায় যে, নতুন টেলিকম বিল দেশের শিল্প ব্যাবস্থাকে পুনর্গঠন করার পাশাপাশি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের রোডম্যাপ প্রস্তুত করবে। তবে উল্লেখ্য বিষয় হলো এই যে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনগণের পরামর্শকেও গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। এই বিষয়ে আপনার কোনো মতামত থাকলে তা ২০ অক্টোবর অর্থাৎ আগামীকাল পর্যন্ত জানাতে পারেন।
এই নতুন টেলিকম আইন আনার কারণ কী :
১. ভবিষ্যতে আইনি কাঠামোকে শক্তিশালী করা।
২. টেলিকম এবং ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের উপর জরিমানা ধার্য করার প্রক্রিয়াটিকে আরও যৌক্তিক করা।
৩. স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনার জন্য আইনি কাঠামো শক্তিশালী করা।
৪. সাইবার নিরাপত্তা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং অন্যান্য হুমকি মোকাবিলার প্রস্তুতিগ্রহণ।
৫. নতুন টেলিকম আইন অনুসারে, টেলিকম সেক্টরে ব্যবহৃত নাম এবং তাদের সংজ্ঞাগুলিকে পুনরায় প্রণয়ন করা।
কোন কোন ক্ষেত্রে আসবে এই আইনের আওতায় : নতুন বিল অনুসারে Facebook, WhatsApp, Google Duo, Google Meet, Telegram এবং Zoom-এর মতো পরিষেবাগুলি এর আওতায় আসবে। তাছাড়া বিভিন্ন ব্রডকাস্টিং পরিষেবা, ইমেল, ভয়েস, ভিডিও এবং ডেটা যোগাযোগ পরিষেবা, ভয়েস মেইল, ফিক্সড এবং মোবাইল পরিষেবা, ইন্টারনেট এবং ব্রডব্যান্ড পরিষেবা, অডিওটেক্স পরিষেবা, ভিডিওটেক্স পরিষেবা, স্যাটেলাইট ভিত্তিক যোগাযোগ পরিষেবা, ওয়াকি-টকি, সবই থাকবে এই আইনের আওতায়।
তবে কি এবার আর বিনামুল্যে WhatsApp করা যাবেনা : এইমুহুর্তে ইন্টারনেট ভিত্তিক কোনো কল করার জন্য আমরা শুধুমাত্র ইন্টারনেট রিচার্জ করে থাকি। এর জন্য আলাদা করে কোনো টাকা দেওয়ার প্রয়োজন পড়েনা। তবে এই বিল কার্যকর হলে হোয়াটসঅ্যাপ বা কলিং পরিষেবা সরবরাহকারী অন্য যেকোনও সংস্থা অতিরিক্ত চার্জ নেবে পরিষেবা দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি পেইড মেম্বারশিপও চালু করা হতে পারে বলে খবর।