‘উত্তম কুমার’ (Uttam Kumar), এই নামটাতেই রয়েছে এক বিশেষ আভিজাত্য। আজকের দিনে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির (Bangla Industry) গৌরব খানিকটা কমে এলেও একটা সময় ছিল যখন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির গৌরব ছিল বিশ্বজুড়ে। আর সেই সময়কার একজন অন্যতম কারিগর ছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। ইন্ডাস্ট্রির পেছনে তার অবদান ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা।
এহেন তারকার স্টারডম অনায়াসে পেছনে ফেলে দেবে আজকের তারকাদেরও। আজও মানুষ মহানায়কের ব্যক্তিগত জীবনের রহস্য জানার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন। জানেন কি আপনাদের প্রিয় তারকার গাড়ির ভিষণ শখ ছিল। মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি তার প্রথম গাড়িটি কিনেছিলেন ১৯৫৪ সালে। গাড়িটি ছিল অস্টিন অফ ইংল্যান্ড, টু ডোর, রং কালো। এরপর নামডাক বাড়তেই তিনি কেনেন ডজ কিংসওয়ে।
জানা যায় মহানায়কের এই গাড়ির উপরদিকটা ছিল ক্রিম রঙের আর নিচের দিকটা ছিল গোলাপি রঙের। পাশাপাশি এটাও শোনা যায় যে, এই গাড়িটি নাকি বিশেষ পছন্দ করতেন উত্তম কুমার। স্ত্রী পুত্র থেকে শুরু করে বন্ধু বান্ধব সকলকেই চাপিয়েছেন এই গাড়িতে। ছুটিছাটা পেলেই বেরিয়ে পড়তেন লং ড্রাইভে। এরপর উত্তম কুমারের কালেকশনে আসে তখনকার দিনের বিশ্ববিখ্যাত র্যাম্বলার গাড়ি।
ষাটের দশকে খুব কম লোকের কাছেই এই কালেকশন ছিল। তখন এয়ারকন্ডিশনড গাড়ি কেনার কথাও ভাবতে পারতেননা অনেকে। জানা যায় উত্তম কুমারের এই গাড়িটির রঙ ছিল সবুজ। ডিকির কাছে যেখানে র্যাম্বলার কথাটা লেখা ছিল সেখানটা ছিল ক্রিম কালারের। এর কিছুদিন পর মহানায়ক কেনেন তখনকার দিনের বিখ্যাত ইমপালা। কিছুদিন পরেই উত্তমের গ্যারাজে আসে আইভরি ব্ল্যাক কালারের আমেরিকান ওল্ডস মোবাইল।
এখানেও থেমে থাকেননি তিনি। এরপর মহানায়ক কিনেছিলেন কালো রঙের মরিস অক্সফোর্ড গাড়ি। গাড়ির টেইল লাইনের রঙ ছিল রূপোলি। এতেও শখ মেটেনি তার। কিছুদিন চালানোর পর তিনি কিনে ফেলেন তখনকার দিনের বিখ্যাত অ্যাম্বাসেডর। একটা দুটো নয়, সাদা অ্যাম্বাসেডরের কালেকশন তার কাছে অনেক ছিল। তবে জেনে অবাক হবেন যে, এত গাড়ির মালিক হয়েও উত্তম নিজে খুব ভালো ড্রাইভার ছিলেননা কিন্তু ।
শোনা যায় উত্তম পুত্র গৌতম নাকি একবার বলেছিলেন, ‘উনি খুব রাফ গাড়ি চালাতেন। বাবি যদি কোনো হৃদরোগীকে সাথে নিয়ে গাড়ি চালাতেন, তবে তারা মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে ভয়ে নেমে পড়তেন।’ জানা যায় উত্তম কুমার নাকি গাড়ি চালানোর সময় ক্লাচ আর অ্যাকসিলেটর কিছুতেই সিনক্রোনাইজ করতে পারতেন না। আর তাতেই গাড়ির স্পিড কন্ট্রোলে থাকতোনা। মাঝে মাঝে গোত্তা খেয়ে ঝাঁকুনি দিত।