নিউজশর্ট ডেস্কঃ রোজগারের তাগিদে মানুষকে কত কিছুই না করতে হয়। পরিবারের মুখে দু বেলা অন্য তুলে দিতে অনেকেই চাকরির আশায় পাড়ি দেন ভিনরাজ্যে। তো অনেকেই আবার ছুটে যান ভিন দেশে। তেমনই একজন কৃষ্ণা যাদব(Krishna Yadav)। পরিবারে ছিল চরম দারিদ্রতা। সেই দারিদ্রতা কাটাতেই তিনি ছুটে এসেছিলেন দিল্লি। বান্ধবীর কাছে ধার নিয়েছিলেন মাত্র ৫০০ টাকা। আজ তিনিই গড়েছেন কোটি টাকার সাম্রাজ্য। আজ এই প্রতিবেদনে আপনাদের জানাবো তাঁর জীবনের কঠিন লড়াইয়ের গল্প।
উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের বাসিন্দা কৃষ্ণা যাদব। মধ্যবিত্ত পরিবারে হয়েছিল বিয়ে। ১৯৯৫ সাল নাগাদ পরিবারে নেমে আসে আরও দারিদ্র। সে সময় ভিন রাজ্যে গিয়ে চাকরি করার সিদ্ধান্ত দেন তিনি। কিন্তু হাতে তাঁর ছিল না একটাও টাকা। বাধ্য হয়ে ধার নিয়েছিলেন এক বান্ধবীর কাছে। সেই টাকা নিয়েই শুরু করেছিলেন আগামী জীবনের লড়াই।
মাত্র ৫০০ টাকা নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর থেকে তিনি পাড়ি দেন দিল্লি। যদিও এত বড় শহরে কোথায় চাকরি পাবেন কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি। এমন পরিস্থিতিতে তিনি খানপুরের রেভলালা গ্রামে কমান্ডেড বিএস ত্যাগীর খামার বাড়িতে শুরু করেন কাজ। আর সেখানেই ছিল বরই ও গুজবেরির বাগান। সে সময় বাজারে চড়া দামে বিক্রি হত এই দুই ফল। এই সময় তিনি সিদ্ধান্ত নেন আচার ব্যবসা করবেন তিনি।
২০০১ সালে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। ৩০০০ টাকা খরচ করে প্রায় ৫ কেজি লংকার আচার বানিয়ে ফেলেন তিনি। সেই আচার বিক্রি করে ২,২৫০ টাকা লাভও হয় তাঁর। এরপর এই ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। স্বামী-স্ত্রী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুরু করেন এই ব্যবসা।
মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই জমে ওঠে ব্যবসা। ‘শ্রী কৃষ্ণা পিকলস ব্র্যান্ডের’ নামে রমরমিয়ে চলতে থাকে ব্যবসা। তবে কেবলমাত্র আচার নয়। পরবর্তীতে মোরব্বা ও চাটনির ব্যবসাও শুরু করেন তিনি। বর্তমানে বেড়েই চলেছে এই ব্র্যান্ডের বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা। বর্তমানে প্রায় কোটি টাকার সাম্রাজ্য তৈরী করে ফেলেছেন কৃষ্ণা যাদব। ২০১৬ সালে তিনি জিতে নেন মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক কর্তৃক নারী শক্তি পুরস্কার। আজ তাঁর জীবনকাহিনী অনুপ্ররণা যোগাচ্ছে শত শত নারীকে।