একেই বলে প্রকৃত বন্ধু! মাত্র ১০ পয়সার মাছ কিনে শুরু করেন ব্যবসা, এখন কোটিপতি এই কৃষক

নিউজশর্ট ডেস্কঃ কথায় বলে মাছে-ভাতে বাঙালি অর্থাৎ বাঙালির প্রিয় খাদ্য মাছ-ভাত। শুধু বাঙালি বললে ভুল হবে সারা ভারত তথা এশিয়ার মানুষদের অন্যতম প্রিয় খাদ্য মাছ। পুকুর সমুদ্রের নানান মাছ প্রিয় এই সকল মানুষের।  একাধারে যেমন এই মাছ সস্তা এবং পুষ্টিকর তেমনই অন্যদিকে সুস্বাদুও। আর সেই কারণেই সকলেই পছন্দ করেন মাছ খেতে। তাই আমাদের দেশে মৎস্য চাষেরও রমরমা বাজার। এর অন্যতম কারণ অনুকূল আবহাওয়া ও মাছের বিপুল চাহিদা। আজকের প্রতিবেদনে আপনাদের এমন এক মানুষের গল্প(Success Story) বলবো। মাত্র দশ পয়সার মাছ কিনে আজ দাঁড় করিয়েছেন কোটি টাকার ব্যবসা।

এই গল্প ৫৬ বছর বয়সী নিহাল সিংয়ের। রাজস্থানের(Rajasthan) ভরতপুরের কামান তহসিলের তরগোত্রা উধন গ্রামের বাসিন্দা এই ব্যাক্তি সত্যি এক উদাহরণ। গত ৩৫ বছর ধরে তিনি যুক্ত এই ব্যবসার সাথে। দীর্ঘ কুড়ি বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি বিপুল লাভ করছেন এই ব্যবসায়। আজ তার ব্যবসার পরিসর ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেশের নানা অংশে। তবে মাত্র ১০ পয়সা বিনিয়োগ করে কোটি টাকার ব্যাবসা তৈরি, কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। সব পরিবারের সন্তান নেহালকে করতে হয়েছিল নানান কষ্ট। যেতে হয়েছিল নানান প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে, তবে সবকিছুকে পেরিয়েই সে পায় সফলতা। এই প্রসঙ্গে নিহাল জানিয়েছেন, “আমাদের ভাইয়েরা আলাদা হয়ে যাওয়ার পর ৫ বিঘা জমি আমার ভাগে আসে। এদিকে, আমাদের বড় পরিবার হওয়ায় আর্থিক অনটন ছিল। কৃষিকাজ থেকে তেমন আয় হত না। ফলে সংসার ভালোভাবে চালাতে সমস্যা হত”।

ভীষণ সমস্যায় জর্জরিত অবস্থায় যখন নিহাল ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ঠিক সেই সময় তখন তার পাশে দাঁড়ায় তার বন্ধুরা জানতে চায় তার বিপদ। সব কথা খুলে বললে তার বন্ধুরাই তাকে পরামর্শ দেয় মাছ চাষ করার। প্রথম প্রথম নিজের জমিতে মৎস্য চাষ শুরু করে নিহাল। মাত্র ১০ পয়সার ছোট মাছ কিনে সে শুরু করে এই ব্যাবসা। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে লাভের মুখ দেখলে চুক্তি ভিত্তিক ভাড়া নেয় কিছু পুকুর। জানা যায়, একবার প্রথম ৬ লাখ টাকা উপার্জন করেন নিহাল। ব্যাস এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সততা ও নিষ্ঠার ফলে দ্রুত বৃদ্ধি পায় তার ব্যবসা।

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মাছ চাষ করে কোটি টাকা আয় করছেন নিহাল সিং। এই চাষের ওপর ভর করেই তিনি তাঁর তিন মেয়ের বিয়ে দেন। এছাড়া আরও সাত বিঘা জমি কিনে ফেলেছেন তিনি। আপাতত, তাঁর মোট ১২ বিঘা জমি রয়েছে। যেগুলির মূল্য ১ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়াও, তাঁর বড় ছেলে ফরিদাবাদে চাকরি করেন এবং ছোটো ছেলে এখনও পড়াশোনা করছেন বলেও জানা গিয়েছে।

তার মাছ সরবরাহ হয় দিল্লি এবং ফরিদাবাদের মাছের বাজারে। এদিকে, মাছ চাষের ক্ষেত্রে তাঁর এলাকায় পর্যাপ্ত জল না থাকায় পুকুরে জল ভরানোর জন্যে তিনি বোরিং-ও করেছেন। পাশাপাশি, মাছ চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সেগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দু’জন কর্মীও নিয়োগ করেছেন নিহাল। তার গল্প সত্যি অনুপ্রেরণামূলক।

Avatar

Papiya Paul

X