শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: হাওড়া স্টেশনের (Howrah Station) জন্য বড় পরিকল্পনা করা হয়েছে। আরও ট্রেন, উন্নত সুযোগ-সুবিধা এবং নতুন সেতু নিয়ে কাজ করবে রাজ্য। “প্রাচ্যের প্রবেশদ্বার বা গেটওয়ে অফ ইস্ট” নামে পরিচিত হাওড়া স্টেশন ভারতের ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে একটি। প্রতিদিন প্রায় ১০ লক্ষ যাত্রী এই স্টেশন ব্যবহার করেন এবং মেইল, এক্সপ্রেস এবং লোকাল ট্রেন সহ প্রায় ৬০০ ট্রেন এই স্টেশন দিয়ে চলাচল করে।
তবে, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং ক্রমবর্ধমান যাত্রী সংখ্যার কারণে, স্টেশনে অনেক সমস্যা রয়েছে। প্রধান সমস্যাগুলির মধ্যে একটি হল প্ল্যাটফর্মের অভাব, যার ফলে ট্রেনগুলির পক্ষে সময়মতো আসা এবং ছেড়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে বড় পদক্ষেপ রেলের।
ট্রেন পরিষেবা উন্নত করার জন্য বড় পরিবর্তন
এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য, পূর্ব রেলওয়ে একটি বড় পরিকল্পনা করেছে। লক্ষ্য হল ট্রেন পরিষেবা সময়মতো চালানো এবং যাত্রী সুবিধা উন্নত করা। এটি করার জন্য, স্টেশনের কাছে দু’ টি পুরানো রেল সেতু ভেঙে ফেলা হবে।
এই সেতুগুলি, সালকিয়ার ১২০ বছরের পুরনো বেনারস সেতু এবং হাওড়া ময়দানের কাছে ৯১ বছরের পুরনো চাঁদমারি সেতু। বর্তমানে, বেনারস সেতুতে ট্রেন চলাচলের জন্য মাত্র ৩৬ মিটার জায়গা রয়েছে। এটি ৬৬ মিটারে বাড়ানো হবে। একইভাবে, চাঁদমারি সেতুর নীচের জায়গা ৬০ মিটার থেকে ১৩৪ মিটারে বাড়ানো হবে। এই পরিবর্তনগুলির ফলে আরও ট্রেন মসৃণ এবং দ্রুত চলাচল করতে পারবে।
নতুন ভবন এবং সিগন্যাল সিস্টেম
পুরাতন সেতুগুলি ভেঙে ফেলার পাশাপাশি, পূর্ব রেলওয়ে হাওড়া স্টেশনের পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য বড় পরিকল্পনা করছে। নতুন সিগন্যাল সিস্টেম নিয়ন্ত্রণের জন্য হাওড়া রেল ইয়ার্ডের কাছে একটি চারতলা ভবন তৈরি করা হবে। এটি ট্রেন চলাচল আরও দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে সহায়তা করবে। এছাড়াও, বেনারস এবং চাঁদমারি সেতুর পাশে নতুন প্রশস্ত কেবল সেতু তৈরি করা হবে। এই পরিবর্তনগুলি ট্র্যাকের সংখ্যা বৃদ্ধি করবে, যার ফলে আরও ট্রেন হাওড়া স্টেশনে প্রবেশ এবং বেরিয়ে যেতে পারবে। এটি বিলম্ব কমাতে এবং যাত্রীদের জন্য ট্রেন যাত্রাকে আরও সুবিধাজনক করে তুলবে।
নতুন প্ল্যাটফর্ম এবং যাত্রী সুবিধা
আরও ট্রেন পরিচালনার জন্য, হাওড়া স্টেশনে একাধিক নতুন পূর্ণ-দৈর্ঘ্যের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে। এটি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে যে ট্রেনগুলি প্ল্যাটফর্মগুলিকে আটকে না দেয় এবং বিলম্বের কারণ না হয়। এই পরিবর্তনগুলি যাত্রীদের অসুবিধাও কমাবে, অভিজ্ঞতা আরও আরামদায়ক করে তুলবে।
স্টেশন বিল্ডিংয়ে পরিবর্তন!
যদিও স্টেশনের বাইরের অংশ, যা একটি ঐতিহ্যবাহী ভবন, এটির কোনও পরিবর্তন করা হবে না, তবে যাত্রীদের জন্য সবটা আরও আরামদায়ক করার জন্য ভিতরের অংশে কিছু উন্নতি করা হবে। স্টেশনের পাশে অবস্থিত ডিআরএম (ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার) অফিসটি রেল জাদুঘর এলাকায় স্থানান্তরিত করা হবে, যাতে স্টেশনে আরও ভালো সুযোগ-সুবিধার জন্য জায়গা তৈরি করা যায়। পরিশেষে, হাওড়া স্টেশনে এই বড় পরিবর্তনগুলি ট্রেন পরিষেবা দ্রুততর করবে, যাত্রীদের সমস্যা কমাবে এবং সামগ্রিক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা উন্নত করবে।