শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: মাত্র ৩২ বছর বয়সেই সাফল্যের চূড়ায় শান্তনু নাইডু (Shantanu Naidu)। টাটা মোটরসের জেনারেল ম্যানেজার এবং স্ট্র্যাটেজিক ইনিশিয়েটিভস প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে রতন টাটার এই ‘তরুণ’ বন্ধুকে। উইলেও ছিল বন্ধুর নাম। ৫৪ বছরের বয়সের ব্যবধান সত্ত্বেও, শান্তনু এবং প্রয়াত রতন টাটার মধ্যে গভীর সংযোগ তাঁর এই সাফল্যকে আরও বিশেষ করে তুলেছে। জানা যায়, তাঁদের বন্ধুত্ব শুরু হয়েছিল একটি সরল, কিন্তু গভীরভাবে – প্রাণীদের, বিশেষ করে কুকুরের প্রতি তাদের পারস্পরিক ভালোবাসার মাধ্যমে।
কীভাবে এই বন্ধুত্ব শুরু হয় তাঁদের?
পশুপ্রেমী রতন টাটা এবং শান্তনুর বন্ধুত্বের সূত্র ছিল অবলা প্রাণী, বিশেষ করে কুকুর। রাতের অন্ধকারেও যাতে দেখতে পাওয়া যায়, কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে পথকুকুরদের আলো জ্বলা কলার পরানোর কথা ভেবেছিলেন শান্তনু। আর এক দিন শান্তনুর এই উদ্যোগের কথা জানতে পারেন রতন। নিজেই যোগাযোগ করে শান্তনুর সঙ্গে দেখা করেন, অর্থ সাহায্য করেন, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খাত থেকে। শান্তনুর প্রতি টাটার ভালোবাসা, স্নেহ এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে তিনি পরে বিদেশে পড়াশোনার জন্য যে শান্তনুকে লোন দিয়েছিলেন। এমনকি মিটিয়েও দেন নিজেই।
বলা বাহুল্য, তাঁদের সম্পর্ক ছিল পেশাদারিত্বের চেয়েও বেশি। তাই রতন টাটার চলে যাওয়ায় মন থেকে ভেঙে পড়েন শান্তনু। গভীর শোক প্রকাশ করেন। রতন টাটাকে তাঁর গুরু বলে অভিহিত করেন। জানা গিয়েছে, শান্তনু টাটার অফিসের কাজে নিয়মিত সাহায্য করতেন। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের হ্যাশট্যাগ, ইমোজির পাঠ দেন তিনিই। ৮০ বছর পেড়িয়ে যাওয়া শিল্পপতির সঙ্গে এ ভাবেই বন্ধুত্ব হয় পুণের ৩২ বছরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের। যদিও এক সময় টাটা এলেক্সিতে কাজও করতেন শান্তনু।
প্রসঙ্গত, শান্তনুর নিয়োগ কেবল তার কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার প্রতিফলনই নয় বরং রতন টাটার স্থায়ী উত্তরাধিকারের প্রমাণ হিসেবেও কাজ করে। হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে শেষকৃত্য পর্যন্ত শান্তনুকে প্রায়শই রতনের পাশে দেখা যেত, যা তাঁদের বন্ধুত্বের গভীরতা তুলে ধরে।