পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্তদের জন্য বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প চালু করা হলেও খাদ্যতালিকায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সবজি হল পেঁয়াজ। পেঁয়াজের দাম হুট করে বেড়ে গেলেই একপ্রকার চিন্তায় পরে যেতে হয় আমজনতাকে। এমনিতে পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য শস্যের অভাব না থাকলেও পেঁয়াজের জন্য পাঞ্জাবই ভরসা। তাই দাম ঠিক রাখতে ও বাজারে যাতে অভাব না হয় তার জন্য পেঁয়াজ চাষের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। এবার জানা যাচ্ছে, কম দামে পেঁয়াজ দিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।
পেঁয়াজের দাম কমাতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার
সরকারি হিসেবে মত, এবছর গতবারের তুলনায় ফলন বেশি হয়েছে। মোট প্রায় ৭ লক্ষ টন পেঁয়াজ উঠবে। ইতিমধ্যেই ম্যাথ থেকে পেঁয়াজ উঠতেও শুরু করেছে। কিন্তু ফলন বেশি হলেও দাম বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যায় কারণ রাজ্যের কাছে সরকারি উদ্যোগে পেঁয়াজ সংরক্ষণের তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এই সুযোগে ব্যবসীরা পেঁয়াজ স্টক করে বেশি দামে বিক্রি করত, আর মধ্যবিত্বের হাতে ছেঁকা লাগত।
তৈরি হবে পেঁয়াজের সংরক্ষণাগার
মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে ৫ জেলায় মোট ৮ টি বড়সড় পেঁয়াজের সংরক্ষণাগার তৈরির উদ্যোগ নীল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কোথায় কোথায়? উত্তর হল, হুগলির বলাগড় ও আদি সপ্তগ্রাম, পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থল ও কালনা, মুর্শিদাবাদের নওয়াদা ও সাগরদিঘি, নদিয়ার হাঁসখালি আর মালদহে গাজোলে তৈরী করা হচ্ছে সংরক্ষণাগার। ইতিমধ্যেই কাজ প্রায় শেষ, আগামী ১৫ইমার্চ থেকেই চালু করা হবে সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলি। জানা যাচ্ছে একটি জায়গাতেই ৪০ টন পেঁয়াজ মজুত রাখা সম্ভব হবে।
অবশ্য এখানেই শেষ নয়, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, নদীয়া, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলাতেও মোট ৯১৭টি ছোট পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার তৈরি করার কাজ চলছে। এর প্রত্যেকটিতে ৯ টন করে পেঁয়াজ মজুত রাখা যাবে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুনঃ বদলে গেল নিয়ম, এই ডকুমেন্ট না থাকলে হবে না পাসপোর্ট!
উপকৃত হবেন রাজ্যের চাষিরা
এক নবান্ন আধিকারিকের মতে, সরকারি তরফ থেকেই পেঁয়াজের সংরক্ষণের জন্য কোনো আলাদা ব্যবস্থা না থাকার কারণে চাষিদের সমস্যায় পড়তে হত। এমনকি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে অন্য রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হত পেঁয়াজ। তবে এবার সংরক্ষণাগার তৈরি হওয়ার ফলে গোটা বছরই বাংলার মানুষের পেঁয়াজের চাহিদা মেটানো যাবে, আর দামও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।