পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ কাজের ব্যস্ততার মাঝে একদিনের ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হলে কোথায় যাবেন এটা ভাবতেই সময় কেটে যায়। তবে চিন্তা নেই, এবার হাওড়াতেই তৈরি হচ্ছে নতুন আকর্ষণ নজর মিনার। কোথায় হচ্ছে এটি? কি কি থাকবে দেখবার মত? সমস্ত তথ্য রইল আজকের প্রতিবেদনেই। তাই একেবারে শেষ অবধি পড়ুন।
হাওড়ায় নয়া আকর্ষণ ‘নজর মিনার’
যেমনটা জানা যাচ্ছে হাওড়া বেলিলিয়াস পার্কের কাছেই তৈরি করা হবে এই নজর মিনার বা পঞ্চদ্বীপ মিনার। ডুমুরজলা ও কোন এক্সপ্রেসওয়ে আর হাওড়া ময়দানকে কানেক্ট করা বাইপাসের কাছেই একটি জায়গায় এই মিনার তৈরি হবে। যেটা উচ্চতায় প্রায় ১২০ মিটার হবে। শুধু তাই নয়, কুতুব মিনারের থেকে এই মিনার ৩৮ মিটার চওড়া ও নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা গেটের তুলনায় লম্বায় দ্বিগুণ হবে এই টাওয়ার। এমনকি লম্বায় শহীদ মিনারকেও টেক্কা দেবে।
কি কি থাকবে পঞ্চদ্বীপ মিনারে?
নতুন স্থাপত্য তৈরির ঘোষণা হতেই মানুষের মনে হাজারো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কি কি দেখার মত থাকবে? উঠতে পারা যাবে কি না এমন অজস্র প্রশ্ন রয়েছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মিনারের ১১২ উচ্চতায় একটি পর্যবেক্ষণ মঞ্চ থাকবে। যেখানে ২০০০ বর্গফুটের একটি জায়গা থাকবে। সেখানেই প্রায় ২০০ জন মত দাঁড়াতে পারবেন। এই পর্যবেক্ষণ মঞ্চে মোট ৪টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপ রাখা থাকবে।
টেলিস্কোপগুলির মাধ্যমে ২০ অবধি দূরত্বের জিনিস দেখতে পাওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ চাইলে গোটা কলকাতার উপরেই একবার নজর রাখতে পারবেন এই টেলিস্কোপ দিয়ে। যেমন কলকাতা বিমান বন্দর, সল্টলেক, নিউটাউন তো বটেই হুগলি ও হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় দেখতে পাওয়া যাবে। এছাড়া পর্যবেক্ষণ মঞ্চের নিচেই একটি রেস্তোরা ও দুটি বাঙ্কোয়েট হল বানানো হবে। মাটি থেকে ১০৪ মিটার উচ্চতায় এই রেস্তোরাতে খাওয়া করতে পারবেন যেমনটা বিশ্ব বাংলা গেটে করা যায়।
কিভাবে হবে টাওয়ারে ওঠা নামা?
পর্যবেক্ষণ মঞ্চ থেকে রেস্তোরা সবই হল কিন্তু তার আগে প্রশ্ন হল সেখানে পৌঁছাবেন কিভাবে। স্বাভাবিকভাবেই উত্তর আসবে লিফটের মাধ্যমে। তবে টাওয়ারের ডিজাইন অনুযায়ী লিফের ধরণ বদলায়, এক্ষেত্রেও সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হবে না। জানা যাচ্ছে এই টাওয়ারে ওঠা-নামা করার জন্য দুটি হাইস্পীড লিফ্ট থাকবে। দুটি লিফ্টই সেকেন্ডে ৩ মিটার করে উপরে উঠতে পারবে। আর একবারে ১৫ জন প্রবেশ করতে পারবে লিফ্টের মাধ্যমে।
আরও পড়ুনঃ প্রতিমাসে মোবাইলে মিলবে হিসেব, ১.৭৬ কোটি উপভোক্তার জন্য বড় ঘোষণা সরকারের
নির্মাণের দায়িত্বে থাকবে কারা?
নতুন এই টাওয়ার নির্মাণের দায়িত্ব দুটি ভাগে বিভক্ত হচ্ছে। ডিজাইন তৈরি করবে IIEST শিবপুর। আর নির্মাণের দায়িত্বে থাকবে একটি বেসরকারি সংস্থা। তবে গোটা বিষয়টার দেখাশোনার দায়িত্ব থাকবে হাওড়া পুরনিগমের উপরে। মাটির ৩৫ মিটার নিচে বা প্রায় ১০ তলা বাড়ির সমান উচ্চতা অবধি ১৬৯টি পাইলিং করা হয়েছে। যার ফলে ভূমিকম্প হলেও নজর মিনারের কোনো ক্ষতি হবে না। এটি নির্মাণের জন্য প্রায় ১৪০০ টন স্টিল ব্যবহার হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই মিনার তৈরির কাজ শেষ হবে। তারপর সমস্ত নিরাপত্তা চেকিং সম্পন্ন হলেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে নজর মিনার।