পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ মহাদেব ভক্ত হোক বা সাধারণ মানুষ একবার কেদারনাথ ধাম যাওয়ার ইচ্ছা কম বেশি সকলেরই থাকে। কিন্তু চাইলেও সবাই সেখানে যেতে পারে না। কারণ একদিকে যেমন এই মন্দির সারাবছর খোলা থাকে না তেমনি, কেন্দ্ৰনাথ যাওয়ার যাত্রাপথও খুব একটা সহজ নয়। খাড়াই পাহাড়ে ৮-৯ ঘন্টা ট্রেকিং করে তবে দর্শন পাওয়া যেত। তবে এবার লম্বা এই যাত্রা মাত্র ৩৬ মিনিটেই সম্পন্ন হবে, এমনটাই ঘোষণা করল মোদী সরকার।
মাত্র ৩৬ মিনিটে পৌঁছানো যাবে কেদারনাথ!
কেদারনাথ যাওয়ার জন্য গৌরীকুন্ড থেকে প্রায় ১৬ কিমি রাস্তা ট্রেক করতে হয়। এই ট্রেকিংয়ের জন্য ৮-৯ ঘন্টা বা তারও বেশি সময় লেগে যায়। শুধু তাই নয়, একটানা এতটা রাস্তা চড়াই করার মত শারীরিক ক্ষমতাও থাকতে হবে। কিন্তু এবার সেসব অতীত হতে চলেছে কারণ আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন দুটি রোপওয়ে প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে।
৬৮১১ কোটি টাকা খরচে তৈরি হবে দুটি রোপওয়ে
এদিন বৈঠকের শেষে অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ ও গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুন্ড সাহিব পর্যন্ত দুটি রোপওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথের রোপওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১২.৯ কিমি ও গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুন্ড পর্যন্ত রোপওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১২.৪ কিমি। এই দুই প্রকল্পের জন্য আনুমানিক ৬৮১১ কোটি টাকা খরচ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে ২০৩১ সালের মধ্যেই সমস্ত কাজ শেষ হয়ে পর্যটক ও সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে রোপওয়েগুলি।
কেদারনাথ রোপওয়ে প্রকল্পের বিশেষত্ব
- উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১১,৯৬৮ উচ্চতায় রয়েছে কেদারনাথ মন্দির। মন্দিরে পৌঁছাতে হলে সোনপ্রয়াগ থেকে ২১ কিমি পথ হেঁটে কেদারনাথ পৌঁছাতে হয়। যার মধ্যে গৌরীকুন্ড পর্যন্ত ৫ কিমি যাওয়ার রাস্তা আছে, বাকি ১৬ কিমি ট্রেক করতে হয়। তবে এই গোটা রাস্তাটাই রোপওয়ে করে দেওয়া হবে।
- ন্যাশনাল হাইওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আন্ডারে থাকা ন্যাশনাল হাইওয়েজ লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড রোপওয়ে নির্মাণের কাজ করবে।
- তৈরি হয়ে যাওয়ার পর সোনপ্রয়াগ, গৌরীকুন্ড ও কেদারনাথ তিন জায়গায় দাঁড়াবে। প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১৮০০ মানুষ যাতায়াত করতে পারবে এই রোপওয়ের মাধ্যমে।
- বর্তমানে বছরে দুবার কেদারনাথ যাওয়া যায়, তবে সরকরের মতে, রোপওয়ে চালু হলে ছয়মাস কেদারনাথ যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুনঃ ১৫ বছরের অপেক্ষার অবসান, বাংলার হারিয়ে যাওয়া রেলপথে এ মাসেই চলবে ট্রেন
হেমকুন্ড সাহিব রোপওয়ে প্রকল্পের বিশেষত্ব
- গোবিন্দঘাট থেকে একটি রাস্তা বদ্রীনাথের আরেকটি রাস্তা হেমকুন্ড সাহিবের দিকে যায়। রোপ ওয়ে চালু হলে গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুঅবধি ২১ কিমি রাস্তা ৪২ মিনিটে অতিক্রম করা যাবে।
- মোট দুটি সেকশন থাকবে এই রুটে। একটি গোবিন্দঘাট থেকে গাঙঘাড়িয়া পর্যন্ত ১০.৫৫ কিমি আরেকটি গাঙঘাড়িয়া থেকে হেমকুন্ড সাহিব পর্যন্ত ১.৮৫ কিমি।