পার্থ সারথি মান্না, কলকাতাঃ এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রা কমবেশি সকলেই করেছেন। এক্ষেত্রে দীর্ঘ পথের মাঝে যদি পাহাড়, সবুজ চাষের খেত আর সুড়ঙ্গ থাকে তাহলে কিছুটা সময় কথা দিয়ে কেটে যায় সেটা বুঝেই ওঠা যায় না। যদিও বেশিরভাগ যাত্রারই ক্ষেত্রেই এর সবটা পাওয়া বেশ মুশকিল। তবে এবার ট্রেন লাভারদের জন্য এক দুর্দান্ত ট্রেন চালু হতে চলেছে যেটা ২৭২ কিমি পথের সিংহভাগটাই অতিক্রম করবে টানেলের মধ্যে দিয়ে। শুধু তাই নয়, টানেল বাদে জানলা দিয়ে দেখা যাবে শ্বেত শুভ্র বরফে ঢাকা প্রকৃতি। কি ভাবলেই রোমাঞ্চ হচ্ছে তো? তাহলে দেরি না করে জেনে নিন কোন রুটে কি চলবে এই ট্রেন।
১১৯ কিমি টানেল দিয়ে ছুটবে ট্রেন
অনেকেই হয়তো ভাবছেন এতটা দীর্ঘ পথ টানেল দিয়ে যাবে ট্রেনে? এমনটা হয় নাকি! তবে কাল্পনিক মনে হলেও এটা বাস্তব করে দেখিয়েছে ভারতীয় রেল। ভারতবর্ষের সবচেয়ে মেমোরেবল ট্রেন যাত্রার মধ্যে অন্যতম এই রুটের মোট দৈর্ঘ্য ২৭২ কিমি। যার মাঝে ১১৯ কিমি চলবে শুধু টানেলের মধ্যে দিয়েই। এছাড়া ছোট-বড় মিলিয়ে ৯২৭টি সেতু পার করবে। পাহাড়ি এলাকার মাঝে দুরন্ত ছুতে চলা এই ট্রেনের যাত্রাপথে সময় লাগবে ৩ ঘন্টা। আগামী ১৯শে এপ্রিল এই রুটের শুভ সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কোন রুটে চলবে এই বিস্ময়কর ট্রেন?
১৯৯৭ সাল থেকে কাজ শুরু হয়েছিল, যা আজ ২৮ বছর পর বাস্তবায়িত হতে চলেছে। এটি হল জম্মু থেকে শ্রীনগর যাওয়ার জন্য উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগ প্রকল্প। প্রতিবছর বৈষ্ণ দেবী দর্শনের জন্য হাজার হাজার মানুষ আসেন। কিন্তু জম্মু থেকেই শ্রীনগর যাওয়ার জন্য কোনো রেলপথ ছিল না। যার ফলে এই পথ সড়কপথে যেতে সময় লাগত ৭ ঘন্টা, আর যদি বরফপাত হয় তাহলে তো আরো বেশি সময় লাগত। তবে এইবার রেলপথ চালু হওয়ায় সেই সমস্যার ইতি ঘটবে।
আরও পড়ুনঃ চৈত্র সংক্রান্তিতেই কালীঘাট স্কাইওয়াক উদ্বোধন করলেন মমতা, কোথায় ডালার দোকান ও প্রবেশের পথ?
উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল সংযোগ প্রকল্পের বিশেষত্ব
ভারতীয় রেলের জন্য এই প্রকল্পটি একটি ঐতিহাসিক সাফল্য। যেমনটা জানা যাচ্ছে সমগ্র যাত্রা পথে মোট ৩৬টি টানেল থাকবে, এছাড়া ছোট বড় মিলিয়ে মোট ৯২৭ টি সেতু থাকবে। এমনকি পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম রেল সেতু যেটা চেনাব নদীর উপর তৈরি হচ্ছে সেটাওপার করবে এই রুটের ট্রেনগুলি। আইফেল টাওয়ারের থেকেও ৩৫ মিটার বেশি এই উঁচু সেতু তৈরিতে ৩০ হাজার টন স্টিল স্টীল ব্যবহার করা হয়েছে। জানলে অবাক হবেন, ৮ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পেও কিছু হবে না এই সেতুর।