শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: আপনি হয়তো প্রায়ই ইট, পাথর, সিমেন্ট ইত্যাদি দিয়ে রাস্তা তৈরি হতে দেখেছেন, কিন্তু আমরা যে রাস্তার কথা বলছি, সেই রাস্তা তৈরিতে এই জিনিসগুলি ছাড়াও মানুষের হাড়ও ব্যবহার করা হয়েছে (Road Of Bones)। এটা অদ্ভুত শোনাতে পারে, কিন্তু ডাহা সত্য এ ঘটনা। এই কারণে, এই রাস্তাটি হাড়ের রাস্তা নামে পরিচিত।
পৃথিবীর কোন রাস্তা ‘হাড়ের রাস্তা’ নামে পরিচিত?
আসলে, আমরা যে রাস্তাটির কথা বলছি তা একটি হাইওয়ে, যা রাশিয়ার সুদূর পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত। যদিও এই মহাসড়কের নাম কোলিমা হাইওয়ে, এটি হাড়ের রাস্তা নামেও পরিচিত। এই হাইওয়ে বা মহাসড়কটি ২,০২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এই মহাসড়কে প্রায়ই মানুষের হাড় এবং কঙ্কাল দেখা যায়, যা কোনও স্বাভাবিক বিষয় নয়। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন এলাকায় এই হাড়গুলি বহুবার পাওয়া গিয়েছে।
বলা হয়েছে, শীতকালে এই এলাকায় প্রবল তুষারপাত হয়, যার কারণে পুরো এলাকা তুষারে ঢাকা থাকে। বলা হয় যে রাস্তা তৈরিতে মানুষের হাড়ও ব্যবহার করা হয়েছিল, যাতে গাড়ি এবং অন্যান্য যানবাহন রাস্তায় পিছলে না পড়ে। কিন্তু সেই হাড় এল কোথা থেকে?
আরও পড়ুন: সাহারা নয়, বিশ্বের বৃহত্তম মরুভূমি এটিই! বালি নেই, ছড়িয়ে আছে এই মারাত্মক জিনিসটি
এই হাইওয়ে কে তৈরি করেছে?
এই হাইওয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের একনায়ক জোসেফ স্ট্যালিনের সময়ে নির্মিত হয়েছিল। সূত্রের খবর, এই হাইওয়ের নির্মাণ কাজ ১৯৩০-এর দশকে শুরু হয় এবং এটি নির্মাণের জন্য বন্ডেড শ্রমিক এবং বন্দীদের নিযুক্ত করা হয়েছিল। এই শ্রমিকদের কোলিমা ক্যাম্পে বন্দী হিসেবে রাখা হয়েছিল। সেই সময়কালে, রাস্তা নির্মাণে প্রায় আড়াই লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিল, যাদের এই রাস্তায় চাপা দেওয়া হয়েছিল।
আসলে, রাস্তা নির্মাণের কাজ করা এই বন্দীরা সেখান থেকে পালাতে পারেনি, যদি কেউ পালানোর চেষ্টা করত, তাহলে হয় সে ঠান্ডা অথবা ক্ষুধায় মারা যেত, নয়তো ভালুকের শিকার হত। আর মারা যাওয়া ওই বন্দীদের এই হাইওয়ের নিচে চাপা দেওয়া হত। কি, জেনে কেঁপে উঠল তো মন!