শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দেশজুড়ে ক্ষোভের ঢেউ উঠেছে। এই হামলার পর থেকে, ভারতের কাছ থেকে একটি শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় বিশ্ব (India-Pakistan Conflict)। ভারতও প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বিহারে এক অনুষ্ঠানে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে এই হামলার পিছনে থাকা সন্ত্রাসবাদী এবং ষড়যন্ত্রকারীদের এমন শাস্তি দেওয়া হবে যা তারা কল্পনাও করতে পারেনি। সেই থেকেই বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। এদিকে, সংবাদ সংস্থাগুলি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যকে ৭ মে নাগরিক প্রতিরক্ষা মহড়া আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে। বাজানো হবে সাইরেন।
গত সপ্তাহে নৌসেনা এবং বায়ুসেনা প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন সরকারি সূত্রে দাবি, জঙ্গিদমনে প্রত্যাঘাতের প্রস্তুতি নিতেই এই প্রতিরক্ষা বৈঠক। আর তারপরেই কয়েকটি রাজ্যকে মহড়ার নির্দেশ দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সরকারি সূত্রের দাবি, রাজস্থান, গুজরাত, পঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরের সিমান্ত এলাকায় সম্ভবত এই মহড়া চালানো হবে। সব মিলিয়ে দেশের ২৪৪টি জেলায় এই মহড়া চলবে। ছাড় যাবে না গ্রামীণ এলাকাও।
যুদ্ধ হলে কী করবেন সাধারণ মানুষ (India-Pakistan Conflict)?
যুদ্ধ বাঁধলে সাধারণ মানুষের করণীয় কী হবে, তাই শেখানো হবে মহড়ায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাই নিম্নলিখিত বিষয়ে মহড়া দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
- বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন ব্যবস্থাকে সক্রিয় করতে হবে।
- নাগরিকদের সুরক্ষার স্বার্থে সাধারণ মানুষ থেকে পড়ুয়াদের ভূমিকা শেখানো হবে।
- হঠাৎ ব্ল্যাকআউট হলে কী করতে হবে।
- জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে দ্রুত উদ্ধার করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে এই মহড়ায় অংশ নেবেন জেলাশাসক-সহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, নাগরির সুরক্ষা কর্মীরা, হোমগার্ডেরাও। তাঁদের পাশাপাশি এনসিসি ক্যাডেট, নেহরু যুব কেন্দ্র সংগঠনের সদস্য এবং স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও মহড়ায় অংশ নিতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, যুদ্ধ আবহে ব্ল্যাকআউট ড্রিল জরুরি। যেমন রবিবার রাত ৯টা নাগাদ পাঞ্জাবের ফিরোজ়পুর ক্যান্টনমেন্টে সব আলো নিবিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট ড্রিল’ করেছে সেনা। স্থানীয় বাসিন্দারা যেন আলোকিত বা দূর থেকে চোখে পড়ে এমন কোনও বস্তু বা আলো ব্যবহার না করেন এই বিষয়ে সতর্ক করা হয় ওই সময়টুকুর জন্য। সাধারণত যুদ্ধের সময় বিপক্ষের নজর এড়াতে, বিপক্ষের বায়ুসেনাকে বিভ্রান্ত করতে এই প্রক্রিয়া করা হয় বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে।
আরও পড়ুন: শুধুই নয় ভারত, পাক-আকাশসীমা এড়াচ্ছে একাধিক বিমান সংস্থা, বাড়ছে যাত্রার সময় ও খরচ
সাইরেন কেন বাজানো হবে?
সূত্রের খবর, মক ড্রিলের অংশ হিসেবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। সম্ভাব্য বিমান হামলার ক্ষেত্রে এই সাইরেনগুলি বাজানো হবে, যার ফলে লোকজনকে কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে উৎসাহিত করা হবে। সাধারণত যুদ্ধের মতো জরুরি পরিস্থিতিতে এই ধরনের সাইরেন ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত তিন বছর ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। নাগরিকদের সতর্ক করার জন্য সেখানে একটি বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করা হয়। এই অ্যাপটি সম্ভাব্য বিমান হামলা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে নাগরিকদের সময়মতো সতর্ক করে। এই কৌশলের মাধ্যমে ইউক্রেন তার জনগণকে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে সতর্ক করে। এই একই পদ্ধতি নিচ্ছে ভারতও!