শ্রী ভট্টাচার্য, কলকাতা: জুন, জুলাই, আগস্ট এই তিন মাসের রেশন মে মাসের মধ্যে তুলে নিতে হবে। আবার নভেম্বর পর্যন্ত রেশন জুন মাসের মধ্যে তুলে নিতে হবে। এটা কি চাট্টিখানি ব্যাপার নাকি! যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির আশঙ্কায় সাধারণ মানুষের জন্য ভাবতে গিয়ে আরও এক বিপদ চলে এল রাজ্যের ঘাড়ে। জানা গিয়েছে যে এ রাজ্যের জন্য ৩ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টনের হিসাবে প্রথম তিন মাসের জন্য প্রায় ৯ লক্ষ ৯২ হাজার মেট্রিক টনের কিছু বেশি রেশন বা খাদ্যশস্য কেন্দ্রের ভাঁড়ার থেকে তুলে নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু এত জায়গা কোথায়, তা নিয়েই উদ্বিগ্ন ডিলাররা (Ration Crisis)।
এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য অবশেষে কোনও উপায় না দেখে কেন্দ্রের দরজায় কড়া নাড়লেন ডিলাররা। তিন মাসের খাদ্যশস্য একসঙ্গে রাখার মতো ভাণ্ডার নেই বলে জানিয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীকে চিঠি লিখলেন রেশন ডিলাররা। এখানেই থিম থাকেননি। দরকারে ভাড়া বাড়ি জোগাড় করে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছেও আর্জি জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে, রেশন ডিলারদের সংগঠন ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানান, আসন্ন ছ’মাসের রেশন মজুত রাখার মতো ভান্ডার নেই। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সাহায্য লাগবে। কেন্দ্রকেও এই বিষয়ে খবর দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৩ মাসের জন্য কড়াকড়ি রেশন নিয়মে, জেলায় জেলায় খাদ্যশস্য মজুত রাখার নির্দেশ নবান্নের
সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর স্পষ্ট কথা, ‘৩ মাস বা ৬ মাসের জন্য কোনও গুদাম বা ঘর ভাড়া মেলে না। ন্যূনতম ১১ মাসের জন্য ভাড়া নিতে হয়। সেই টাকা তো ডিলারদের নেই। সেক্ষেত্রে রাজ্য এবার তাদের গুদামে এই বিপুল রেশন মজুত করার ব্যবস্থা করে দিক।” এখানেই রয়েছে আরও বড় এক টেনশনের ব্যাপার। আর তা হল, শুধু রেশন মজুত তো নয়, বর্ষা ঢুকলে মজুত রেশন নষ্ট হয়ে যেতেও পারে। এই পরিস্থিতিতে ছয় মাসের রেশন আগাম তুলে রেখে তা সুষ্ঠুভাবে সরবরাহ করা কঠিন। এমন সময়ে রাজ্য সরকারের ‘লজিস্টিক সাপোর্ট’ ছাড়া কিছুই সম্ভব হবে না বলেই দাবি করছে রেশন ডিলাররা।
আসলে, সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার আবহাওয়া পরিস্থিতি কথা ভেবে আগাম ছ’মাসের রেশন মজুত রাখার নির্দেশ দিইয়েছে রেশন ডিলারদের। আবার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উদ্ভুত সামরিক পরিস্থিতির কথা ভেবে রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর জন্য অন্তত তিন মাসের রেশন মজুত রাখতে বলেছে বাংলার সরকারও। এমনকি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কোথায় কোন গুদামে কত রেশন মজুত রাখা যায়, রেশন ডিলারদের কাছে তার জন্য পর্যাপ্ত তথ্যও চাওয়া হয়েছে।